ইউটিআই বা মূত্রনালীর সংক্রমণ প্রত্যেক দেশেই কমবেশি সব বয়সের নারীদের
একটি সাধারণ সমস্যা। সারা জীবনে একবারও এ সমস্যায় ভোগেননি এমন নারী পাওয়া
খুব কঠিন। এসব নিয়ে জানাচ্ছেন ন্যাশনাল ইনিস্টিটিউট অফ কেনসার রিসার্স এন্ড
হসপিটালের গাইনী এনকোলজির সহযোগী অধ্যাপক
ডা. শাহানা পারভিন
g ইউটিআই এবং কারা আক্রান্ত হচ্ছে?
মূত্রনালীর সংক্রমণ হলেও এর ব্যাপ্তি শুধু মূত্রনালীতেই সীমাবদ্ধ
থাকে না। কিডনি থেকে শুরু করে ইউরেথ্রা (যে পথে মূত্র শরীর থেকে বের হয়)
পর্যন্ত যেকোনো অঙ্গের সংক্রমণকেই সমষ্টিগতভাবে ইউটিআই বলা হয়। যদিও কিছু
কিছু যৌনরোগ ইউটিআইএর মতন ব্যবহার করে, সত্যিকারে ইউটিআই সম্পূর্ণই ভিন্ন
একটা রোগ যা কিনা পেটের ভেতর বসবাসকারী আপাত নির্দোষ ব্যাক্টেরিয়া (যেমন ই.
কোলাই) দিয়েও হতে পারে।
g কিভাবে বুঝবেন আপনি আক্রান্ত?
প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া করা।,বার বার প্রস্রাবের বেগ হওয়া।
প্রস্রাবের বেগ ধরে রাখতে না পারা। কারও কারও প্রস্রাবের সঙ্গে হাল্কা রক্ত
যাওয়া, জ্বর জ্বর ভাব। দুপাশের কোমরে ব্যথা।
g ডাক্তারের কাছে কেন যাবেন?
ইউটিআই এমনিতেই অস্বস্তিকর আর কষ্টদায়ক সমস্যা, তা ছাড়াও এধরনের
অসুখে সংক্রমণ উপরে কিডনির দিকে উঠে যায়। এতে কিডনি আর মূত্রথলীর পাথর
হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। গর্ভাবস্থায় এটি জরায়ু বা এ্যামনিওটিক স্যাক
(শিশুকে জলীয় আবরনে জড়িয়ে রাখা থলে) এ গিয়ে মারাত্মক সমস্যা করতে পারে।
g কারা বেশি আক্রান্ত?
গর্ভবতী মা। প্রজননক্ষম তরুণী (সদ্য বিবাহিত স্ত্রী)। ক্যাথেটার করা
বা যোনিদেশে সদ্য অপারেশন হয়েছে এমন। মূত্রনালীতে কোন প্রতিবন্ধকতা
(শুধুমাত্র একজন ডাক্তারের পক্ষেই বোঝা সম্ভব)।
g আক্রান্ত হলে কি করবেন?
লক্ষণগুলির একটিও দেখা দিলে দেরি না করে চিকিত্সকের শরণাপন্ন হোন।
এছাড়া কিছু অভ্যাস পরিবর্তন করুন। প্রতিদিন অন্তত ৮ গ্লাস পানি খান।নিয়মিত
প্রস্রাব করুন, দিনে অন্তত ৩ বার। রাতে শোবার আগে অবশ্যই প্রস্রাব করে শুতে
যাবেন। প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া থেকে উপশম পেতে পানির সঙ্গে খাবার
সোডা মিশিয়ে খেতে পারেন। দ্রুত আরোগ্য লাভের জন্যে বেশি করে ভিটামিন সি এবং
ভিটামিন এ খান। চা, কফি এবং এ্যালকোহল পরিহার করে চলুন। প্রস্রাবের পর
ধুয়ে মোছার সময় লক্ষ্য করে সামনে থেকে পেছনে মুছবেন। সুতি কাপড় পরুন।
আঁঁটসাঁট কাপর পরবেন না। আক্রান্ত অবস্থায় সহবাস থেকে বিরত থাকুন। তবে
কনডম ব্যবহার করলে ইনফেকশন ছড়ানোর আশঙ্কা কমে যায়। ব্যথা কমাতে
প্যারাসিটামল বা অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধ খেতে পারেন।