গ্রিক
পুরাণের ইকো আর নার্সিসাসের গল্প আমাদের অনেকেরই জানা। গল্পের নায়ক
নার্সিসাস নায়িকা ইকোর ভালোবাসায় টলেননি বলে দেবতার অভিশাপে নিজের
প্রতিচ্ছবিকে ভালোবেসে ফেলেন। দিনের পর দিন নিজের প্রতিচ্ছবির দিকে তাকিয়ে
থেকে থেকে একসময় তাঁর মৃত্যু হয়। নার্সিসাসের যেখানে মৃত্যু ঘটে, ঠিক
সেখানে খুব সুন্দর একটি ফুল জন্ম নেয় আর ওই ফুল পরিচিত হয় তাঁর নামেই।
ফুলের নাম নার্সিসাস।
যুগ যুগ ধরে মানুষ নিজের প্রতিবিম্ব দেখে বিস্ময় অনুভব করেছে। আজও মানুষ নিজেকে দেখতেই সবচেয়ে ভালোবাসে। নিজের প্রতি জ্ঞাত কিংবা অজ্ঞাত এ আকর্ষণকে মনোবিজ্ঞানীরা বলেন ‘নার্সিসিজম’। তাই তো নিজের চেহারার খুঁটিনাটি জানা সত্ত্বেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষ আয়নায় নিজের প্রতিবিম্ব দেখে কাটিয়ে দিতে পারে। অনেকে মনে করেন, আয়নায় শুধু নারীই বুঝি নিজেকে দেখেন, কিন্তু আসলে নারী, পুরুষ-নির্বিশেষে সবাইই আয়নায় নিজেকে দেখতে ভালোবাসেন। এই তো গেল নিজের মুখশ্রী আয়নায় দেখার কথা। আয়না এখন আর শুধু নিজেকে দেখার কাজেই ব্যবহার হয় না, ঘর সাজাতেও ব্যবহার হয়।
ঘর সাজাতে আয়না
একটি সাধারণ আয়না যথাযথভাবে সাজাতে পারলে পুরো ঘরের চেহারাই অসাধারণ হয়ে যেতে পারে। তবে এ কাজ কিন্তু এত সহজ নয়। যেনতেনভাবে সাজালে অত্যন্ত সুন্দর আয়নাও ঘরের পরিবেশকে অসুন্দর করে ফেলতে পারে। তাই খেয়াল রাখা দরকার কীভাবে আয়না দিয়ে ঘর সাজাবেন।
যেনতেনভাবে যেখানে সেখানে আয়না রাখা ঠিকও নয়। আস্থা ইন্টেরিয়রের প্রধান উম্মে কুলসুম কাকলী জানাচ্ছেন কোথায় কোথায় আয়না সাজালে আপনার ঘর নান্দনিক হয়ে উঠবে—
ড্রয়িংরুমের পরিসর বড় দেখাতে আয়না
কাকলী মনে করেন ছোট বসার ঘরের পরিসর বড় দেখানোর জন্য দেয়ালে একটি আয়নাই যথেষ্ট। এমনিতেই ঢাকা শহরে বাসাগুলো ছোট ছোট। তার ওপর নানা ফার্নিচারে আরও ছোট মনে হয় কক্ষগুলো। তাই ড্রয়িংরুমের দেয়ালে আয়না সাজিয়ে রাখতে পারেন অনায়াসেই। এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করুন লম্বা, গোলাকার কিংবা চার-কোণ আকৃতির আয়না। তবে যে ধরনের আয়নাই ব্যবহার করুন না কেন, তা কারুকার্যময় হওয়া চাই। এতে আপনার ঘরের চেহারায় যেমন আভিজাত্য আসবে, তেমনি অতিথিরাও আপনার রুচির পরিচয় পাবেন। কাজ শেষে ঘরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে আপনার ক্লান্ত মুখখানা নিজের অজান্তেই ড্রয়িংরুমে সাজানো আয়নায় দেখে ফেললেন, একটু হলেও ক্লান্তি কমে যাবে।
দেয়ালজুড়ে আয়না
সাদামাটা দেয়ালে একটি জমকালো ডিজাইনের আয়না সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিতে পারে অনেকখানি। তবে এ ক্ষেত্রে দেয়ালের রং গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে। কাকলীর মতে, আয়নার ফ্রেমের রং দেয়ালের রঙের বিপরীত হওয়া উচিত। যেমন দেয়ালের রং সাদা বা চাপা সাদা হলে আয়নার ফ্রেম কালচে ধরনের হতে পারে।
সিলিংয়ে আয়নার ব্যবহার
কাকলী বলেন, ‘এখন অনেকেই সিলিংয়ে আয়না ব্যবহার করছেন। এ ক্ষেত্রে আপনি চাইলে সামান্য রং করেও নিতে পারেন।’ সিলিংয়ে অ্যান্টিকের নকশা করা আয়নাও ভালো লাগবে দেখতে।
স্নানঘরে বড় আয়না
স্নানঘরটি বেশ ছোট বলে হয়তো অনেকেই মন খারাপ করেন। এ ক্ষেত্রে একটা দেয়ালজোড়া আয়না বসিয়ে দিন। স্নানঘরের পরিসর বড় দেখাবে ।
শোবার ঘরে, প্যাসেজে
অনেকেই শোবার ঘরে ড্রেসিং টেবিল রাখেন। আপনি চাইলে একটু ভিন্নতা আনতে পারেন বড় ফ্রেমে আয়না বানিয়ে দেয়ালে সাঁটিয়ে দিয়ে। খাটের সঙ্গেও অনেকে আয়না সাজাতে পছন্দ করেন। জানালার বিপরীতে আয়না সাজিয়ে রাখলে ঘর অনেকটা উজ্জ্বল দেখাবে। এ ছাড়া ঘরের প্যাসেজে বা পিলারের দুই পাশে সাজিয়ে রাখতে পারেন ছোট ছোট আয়না, অনেকটা ছবির ফ্রেমের মতো। আয়না দিয়ে ঘরের দরজাটিকেও সাজাতে পারেন অনায়াসে। মোট কথা, ছিমছাম বসার ঘর থেকে শুরু করে ছোট স্নানঘর, সবকিছুর সজ্জায়ই এখন আয়নার ব্যবহার চলছে।
যেভাবে যত্ন নেবেন
সব সৌন্দর্যই ফিকে হয়ে যেতে পারে যত্নের অভাবে। সুন্দর কারুকাজ করা আয়নার ফ্রেমে ধুলো জমে যেতে পারে খুব সহজে, তাই নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন। এ ছাড়া আয়নায়ও ধুলা জমে অস্পষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই পরিষ্কার করুন নিয়মিত। খুব সহজে আয়না পরিষ্কার করার উপায় বাতলে দিয়েছেন ইন্টেরিয়র ডিজাইনার উম্মে কুলসুম কাকলী। তিনি বলেন, ‘নরম কাগজ কুঁচকে বলের মত বানিয়ে তা পানিতে সামান্য ভিজিয়ে আয়নাটা মুছুন। তারপর আর একটি শুকনা কাগজ একই ভাবে কুঁচকে বলের মতো করে সঙ্গে সঙ্গে ভেজা আয়না মুছে ফেলুন। মনে রাখবেন, কাগজ ভাঁজ করবেন না। কেবল কুঁচকে বলের মতো বানাবেন।’
কেনাকাটা
একসময় আয়না বলতে কাঠের বা প্লাস্টিকের চারকোণ ফ্রেমের ভেতরের কাচের আয়নাই ছিল সবচেয়ে পরিচিত। এখন সেদিন পাল্টেছে। মানুষের চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়ে নিত্যনতুন নকশার আয়না তৈরি হচ্ছে ইদানীং। হ্যান্ড পেইন্ট, টেরাকোটা দরজা, মাটির টেরাকোটা, পশুপাখির আকৃতিসহ বিভিন্ন নকশার আয়না পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। আয়নার চাহিদার কথা বিবেচনা করেই ফ্যাশন হাউসগুলোতে নানা ধরনের নকশা করা আয়না পাওয়া যাচ্ছে।
ফ্যাশন হাউস আড়ংয়ে কাঠের তৈরি নানা ধরনের নকশা করা, নানা আকৃতির ও রঙের আয়না পাওয়া যাবে। দাম নির্ভর করবে আকৃতি ও নকশার ওপর। তবে শুরু ৫০০ টাকা থেকে।
এ ছাড়া গাউসিয়া, নিউমার্কেট, দোয়েল চত্বর, শাহবাগের আজিজ মার্কেটসহ বিভিন্ন বড় বিপণি ঘুরলেও মিলবে পছন্দসই আয়না। সব ক্ষেত্রেই দাম নির্ভর করবে আকার এবং আয়নায় করা কাজের ওপর ভিত্তি করে।
যুগ যুগ ধরে মানুষ নিজের প্রতিবিম্ব দেখে বিস্ময় অনুভব করেছে। আজও মানুষ নিজেকে দেখতেই সবচেয়ে ভালোবাসে। নিজের প্রতি জ্ঞাত কিংবা অজ্ঞাত এ আকর্ষণকে মনোবিজ্ঞানীরা বলেন ‘নার্সিসিজম’। তাই তো নিজের চেহারার খুঁটিনাটি জানা সত্ত্বেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষ আয়নায় নিজের প্রতিবিম্ব দেখে কাটিয়ে দিতে পারে। অনেকে মনে করেন, আয়নায় শুধু নারীই বুঝি নিজেকে দেখেন, কিন্তু আসলে নারী, পুরুষ-নির্বিশেষে সবাইই আয়নায় নিজেকে দেখতে ভালোবাসেন। এই তো গেল নিজের মুখশ্রী আয়নায় দেখার কথা। আয়না এখন আর শুধু নিজেকে দেখার কাজেই ব্যবহার হয় না, ঘর সাজাতেও ব্যবহার হয়।
ঘর সাজাতে আয়না
একটি সাধারণ আয়না যথাযথভাবে সাজাতে পারলে পুরো ঘরের চেহারাই অসাধারণ হয়ে যেতে পারে। তবে এ কাজ কিন্তু এত সহজ নয়। যেনতেনভাবে সাজালে অত্যন্ত সুন্দর আয়নাও ঘরের পরিবেশকে অসুন্দর করে ফেলতে পারে। তাই খেয়াল রাখা দরকার কীভাবে আয়না দিয়ে ঘর সাজাবেন।
যেনতেনভাবে যেখানে সেখানে আয়না রাখা ঠিকও নয়। আস্থা ইন্টেরিয়রের প্রধান উম্মে কুলসুম কাকলী জানাচ্ছেন কোথায় কোথায় আয়না সাজালে আপনার ঘর নান্দনিক হয়ে উঠবে—
ড্রয়িংরুমের পরিসর বড় দেখাতে আয়না
কাকলী মনে করেন ছোট বসার ঘরের পরিসর বড় দেখানোর জন্য দেয়ালে একটি আয়নাই যথেষ্ট। এমনিতেই ঢাকা শহরে বাসাগুলো ছোট ছোট। তার ওপর নানা ফার্নিচারে আরও ছোট মনে হয় কক্ষগুলো। তাই ড্রয়িংরুমের দেয়ালে আয়না সাজিয়ে রাখতে পারেন অনায়াসেই। এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করুন লম্বা, গোলাকার কিংবা চার-কোণ আকৃতির আয়না। তবে যে ধরনের আয়নাই ব্যবহার করুন না কেন, তা কারুকার্যময় হওয়া চাই। এতে আপনার ঘরের চেহারায় যেমন আভিজাত্য আসবে, তেমনি অতিথিরাও আপনার রুচির পরিচয় পাবেন। কাজ শেষে ঘরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে আপনার ক্লান্ত মুখখানা নিজের অজান্তেই ড্রয়িংরুমে সাজানো আয়নায় দেখে ফেললেন, একটু হলেও ক্লান্তি কমে যাবে।
দেয়ালজুড়ে আয়না
সাদামাটা দেয়ালে একটি জমকালো ডিজাইনের আয়না সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিতে পারে অনেকখানি। তবে এ ক্ষেত্রে দেয়ালের রং গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে। কাকলীর মতে, আয়নার ফ্রেমের রং দেয়ালের রঙের বিপরীত হওয়া উচিত। যেমন দেয়ালের রং সাদা বা চাপা সাদা হলে আয়নার ফ্রেম কালচে ধরনের হতে পারে।
সিলিংয়ে আয়নার ব্যবহার
কাকলী বলেন, ‘এখন অনেকেই সিলিংয়ে আয়না ব্যবহার করছেন। এ ক্ষেত্রে আপনি চাইলে সামান্য রং করেও নিতে পারেন।’ সিলিংয়ে অ্যান্টিকের নকশা করা আয়নাও ভালো লাগবে দেখতে।
স্নানঘরে বড় আয়না
স্নানঘরটি বেশ ছোট বলে হয়তো অনেকেই মন খারাপ করেন। এ ক্ষেত্রে একটা দেয়ালজোড়া আয়না বসিয়ে দিন। স্নানঘরের পরিসর বড় দেখাবে ।
শোবার ঘরে, প্যাসেজে
অনেকেই শোবার ঘরে ড্রেসিং টেবিল রাখেন। আপনি চাইলে একটু ভিন্নতা আনতে পারেন বড় ফ্রেমে আয়না বানিয়ে দেয়ালে সাঁটিয়ে দিয়ে। খাটের সঙ্গেও অনেকে আয়না সাজাতে পছন্দ করেন। জানালার বিপরীতে আয়না সাজিয়ে রাখলে ঘর অনেকটা উজ্জ্বল দেখাবে। এ ছাড়া ঘরের প্যাসেজে বা পিলারের দুই পাশে সাজিয়ে রাখতে পারেন ছোট ছোট আয়না, অনেকটা ছবির ফ্রেমের মতো। আয়না দিয়ে ঘরের দরজাটিকেও সাজাতে পারেন অনায়াসে। মোট কথা, ছিমছাম বসার ঘর থেকে শুরু করে ছোট স্নানঘর, সবকিছুর সজ্জায়ই এখন আয়নার ব্যবহার চলছে।
যেভাবে যত্ন নেবেন
সব সৌন্দর্যই ফিকে হয়ে যেতে পারে যত্নের অভাবে। সুন্দর কারুকাজ করা আয়নার ফ্রেমে ধুলো জমে যেতে পারে খুব সহজে, তাই নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন। এ ছাড়া আয়নায়ও ধুলা জমে অস্পষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই পরিষ্কার করুন নিয়মিত। খুব সহজে আয়না পরিষ্কার করার উপায় বাতলে দিয়েছেন ইন্টেরিয়র ডিজাইনার উম্মে কুলসুম কাকলী। তিনি বলেন, ‘নরম কাগজ কুঁচকে বলের মত বানিয়ে তা পানিতে সামান্য ভিজিয়ে আয়নাটা মুছুন। তারপর আর একটি শুকনা কাগজ একই ভাবে কুঁচকে বলের মতো করে সঙ্গে সঙ্গে ভেজা আয়না মুছে ফেলুন। মনে রাখবেন, কাগজ ভাঁজ করবেন না। কেবল কুঁচকে বলের মতো বানাবেন।’
কেনাকাটা
একসময় আয়না বলতে কাঠের বা প্লাস্টিকের চারকোণ ফ্রেমের ভেতরের কাচের আয়নাই ছিল সবচেয়ে পরিচিত। এখন সেদিন পাল্টেছে। মানুষের চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়ে নিত্যনতুন নকশার আয়না তৈরি হচ্ছে ইদানীং। হ্যান্ড পেইন্ট, টেরাকোটা দরজা, মাটির টেরাকোটা, পশুপাখির আকৃতিসহ বিভিন্ন নকশার আয়না পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। আয়নার চাহিদার কথা বিবেচনা করেই ফ্যাশন হাউসগুলোতে নানা ধরনের নকশা করা আয়না পাওয়া যাচ্ছে।
ফ্যাশন হাউস আড়ংয়ে কাঠের তৈরি নানা ধরনের নকশা করা, নানা আকৃতির ও রঙের আয়না পাওয়া যাবে। দাম নির্ভর করবে আকৃতি ও নকশার ওপর। তবে শুরু ৫০০ টাকা থেকে।
এ ছাড়া গাউসিয়া, নিউমার্কেট, দোয়েল চত্বর, শাহবাগের আজিজ মার্কেটসহ বিভিন্ন বড় বিপণি ঘুরলেও মিলবে পছন্দসই আয়না। সব ক্ষেত্রেই দাম নির্ভর করবে আকার এবং আয়নায় করা কাজের ওপর ভিত্তি করে।