Media news - মেয়র পদে লড়বেন কবরী

কবরী
চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনি জয় করে নিয়েছেন অগণিত মানুষের হৃদয়। পেয়েছেন ‘মিষ্টি মেয়ে’ খেতাব। রাজনীতির মাঠেও সফল বিচরণ তাঁর। দায়িত্ব পালন করেছেন সাংসদ হিসেবেও। তিনি বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের প্রখ্যাত অভিনেত্রী কবরী। কোনো দলের হয়ে নয়, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়বেন তিনি।

মেয়র পদে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রসঙ্গে কবরী বলেন, ‘আমার প্রত্যাশা, অনেক বেশি মানুষের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে একটা অর্থবহ নির্বাচন হবে। বিগত সময়ে আমার নির্বাচনী অভিজ্ঞতা মেয়র নির্বাচনের ক্ষেত্রে কাজে দেবে। আমি মনে করি, দায়িত্বশীল মানুষেরা দায়িত্ব নিয়ে রাজনীতি না করলে ভবিষ্যতে ভালো মানুষেরা রাজনীতিতে আসার উৎসাহ পাবেন না। আমি সব সময় মানুষের কল্যাণে কাজ করার চেষ্টা করি। নারায়ণগঞ্জে নির্বাচন করার পর আমি মানুষের কল্যাণে অনেক কাজ করেছিও।’


নারায়ণগঞ্জ থেকে নির্বাচন করতে গিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে কাজ শুরু করেন কবরী। সেই অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে আমার কোনো অসুবিধা হয়নি। আমি পুরো ব্যাপারটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম এবং জনগণের সমর্থনও পেয়েছিলাম। যারা মারামারির রাজনীতি করে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে চায় জনগণ তাঁদের চায় না। এলাকার মানুষেরা ইতিবাচক লোককেই জনপ্রতিনিধি হিসেবে দেখতে চান। জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সব সময় একাত্ম থাকতে চায় জনগণ। নিজেদের মনের কথা, এলাকার সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা-সবকিছু নির্ভয়ে এবং প্রাণখুলে বলতে চায় জনপ্রতিনিধির কাছে।’


কবরী বলেন, ‘আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় মনে হয়েছে, আমাদের রাজনীতির জায়গাটা একেবারেই স্বচ্ছ না। চারিদিকে তাকালে দেখা যায়, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা নিজেদের সুবিধা এবং দলের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিতেই ব্যস্ত থাকেন। সাধারণ জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলেও নির্বাচনের পর তাঁরা আর জনগণের কথা ভাবতে চান না।’


ঢাকা উত্তর থেকে মেয়র পদে লড়ছেন ব্যবসায়ী আনিসুল হক। তাঁর প্রসঙ্গ টেনে কবরী বললেন, ‘তাঁর বিরুদ্ধে আমার কোনো নালিশ নেই। সাধারণত দেখা যায়, যেসব ব্যবসায়ী রাজনীতিতে যুক্ত হন তাঁরা রাজনীতির মাঠ উর্বর করার চেয়ে রাজনীতির ছত্র ছায়ায় থেকে নিজস্ব ফায়দা লোটার চেষ্টা করেন। জনগণের সেবার দিকে খুব বেশি মনোযোগী হন না তাঁরা। কিন্তু ব্যবসায়ীরা যদি দেশের জন্য কাজ করতেই চান তাহলে তাঁদের রাজনীতিতে আসার খুব বেশি প্রয়োজনীয়তা আছে বলে আমি মনে করি না। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক খাতে সহযোগিতার মাধ্যমে দেশের মানুষের উপকারে আসার সুযোগ রয়েছে তাঁদের।’

চলচ্চিত্র থেকে একটা সময় সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে আসেন কবরী। সেই প্রসঙ্গ টেনে বললেন, ‘আমি একটা পেশার সঙ্গে যুক্ত থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন পেশাজীবীদের সঙ্গে কাজ করেছি। সাধারণ মানুষের অসুবিধাগুলো অনেক সময় রাজনৈতিক দলও বুঝতে পারে না। এসব নিজ উদ্যোগে সমাধান করতে হয়। আমি রাজনীতিতে আসার পর যখন দলের মনোনয়ন পেলাম, তখন সেই সব বিষয় মাথায় রেখে কাজ করেছি। কিন্তু যাঁরা ব্যবসা থেকে এসেছেন তাঁদের একটা আচরণটা এমনটা দেখি যে, তাঁরা জনগণের প্রতি খুব বেশি একটা দায়বদ্ধ নন।’


একজন মেয়র প্রার্থী হিসেবে বর্তমানে ঢাকা শহরের নাগরিকেরা কী কী সুবিধা পাচ্ছে না বলে মনে করেন জানতে চাইলে কবরী বলেন, ‘ঢাকার সিটির জনগণ পর্যাপ্ত সুপেয় পানি পাচ্ছে না। ঢাকার রাস্তাঘাটের অবস্থা খুব খারাপ। সামান্য বৃষ্টিতে ঢাকা শহর তলিয়ে যায়। পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থাও খুব খারাপ। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি রয়েছে। বাচ্চাদের খেলার মাঠের খুব অভাব। পরিবহন সমস্যাও প্রকট। সড়কবাতির সমস্যাও আছে, প্রায় সময় সেগুলো বন্ধ থাকে।’


মেয়র নির্বাচিত হলে কোন সমস্যাগুলো আগে সমাধান করবেন জানতে চাইলে কবরী বললেন, ‘ঢাকা শহরে বসবাস করা মানুষগুলো কিন্তু কর পরিশোধ করছে। সেই তুলনায় নাগরিক সুবিধার ছিটেফোঁটাও তাঁরা পাচ্ছে না। ঢাকার ভেতর ও আশপাশে দখল হয়ে যাওয়া যেসব নদী-জলাশয় ও খাল আছে সেগুলো পুনরুদ্ধার করব। সবার আগে পরিবহন সমস্যা সমাধানে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেব। ফুটপাতের সমস্যাটাও অনেক প্রকট। এগুলোকে দখলমুক্ত করে পথচারী পারাপারের উপযোগী করব।’


নতুন কী সুবিধা যোগ করবেন জানতে চাইলে কবরী বলেন, ‘পুরোনো সমস্যা এত বেশি যে সেসব সমাধানের মধ্য দিয়ে পরিকল্পিত একটি ঢাকা শহর গড়ে তোলা সম্ভব। তাই আগেভাগে পুরোনো সব সমস্যা সমাধানে বেশি মনোযোগী হব।’

-

Latest

Popular Posts

Popular Posts

Popular Posts