জনপ্রিয় উপস্থাপক শারমিন লাকি। শুধু উপস্থাপনাই নয়, নিজেও ভালো রান্না করেন। ঘিয়ে ভাজা পরোটা আর ঘন দুধের চা তাঁর পছন্দের খাবার। ভালোবাসেন দেশি শাড়ি পরতে। ব্যাডমিন্টন খেলেন নিয়মিত। আজকের অধুনায় থাকছে এই তারকার স্টাইল
দরজা খোলাই ছিল। বসার ঘরে ঢুকতেই লম্বা স্কার্ট আর ফতুয়া পরা একটি মেয়ে এসে সামনে দাঁড়াল। প্রথমবার তাকিয়ে চেনা গেল না বলেই আরেকবার দৃষ্টি দিলাম। আরে, এ তো শারমিন লাকি! হেসে বললেন, ‘এই মজাটা নেওয়ার জন্যই চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলাম। আমাকে কিন্তু এই পোশাকে তেমন কেউ দেখেনি। দেশের বাইরে গেলে এমন পোশাক পরি। আর মাঝেমধ্যে অবসরে বাসায় পরা হয়েছে, তা-ও দু-একবার।’ ১৮ অক্টোবর গিয়েছিলাম শারমিন লাকির ঢাকার গুলশানের বাসায়।যেদিন শুটিং থাকে বাসা থেকেই তৈরি হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। সে ক্ষেত্রে অনুষ্ঠানের ধরন বুঝেই নিজের সাজসজ্জা করেন। তাঁর মতে, ‘রান্না অনুষ্ঠানে তো টায়রা-টিকলি পরলে চলবে না!’
সাধারণত দেশি ফ্যাশন হাউসগুলোর পোশাকই বেশি পরেন শারমিন লাকি।
শাড়ি পরতেই বেশি ভালোবাসেন। নিত্যনতুন শাড়ির চেয়ে ব্লাউজের সংগ্রহ আরও বেশি। তাঁর ব্লাউজের কাটে-ছাঁটে থাকে বিশেষত্ব। শারমিন লাকি বলেন, ‘আমি আজ যে পোশাকগুলো পরলাম, এর প্রতিটাই আমার বিশেষ পছন্দের। ফ্যাশন ডিজাইনার বিবি রাসেল, মাহিন খান, চন্দ্র শেখর সাহা, গৌতম সাহা, এমদাদ হক, শাহরুখ আমিন, বিপ্লব সাহা, লিপি খন্দকারের নকশা করা পোশাক পরতে ভালো লাগে। আড়ং, অরণ্য, যাত্রা, দেশাল ও আনোখির পোশাকও পরি নিয়মিত।’
একই সঙ্গে হাতে, কানে ও গলায় গয়না সাধারণত পরেন না। যতটুকুই পরেন তা পোশাকের সঙ্গে মানানসই হওয়া চাই। দিনের বেলায় কোনো দাওয়াতে গেলে হালকা মেকআপের সঙ্গে পরেন কোমল কোনো রঙের সুতি শাড়ি বা কামিজ। দাওয়াতটা রাতের হলে সেখানে মসলিন, সিল্ক বা জামদানির সঙ্গে জমকালো সাজেই দেখা যায় এই তারকাকে। চুলটা খোঁপা করে ফুল দিয়ে সাজাতে ভালোবাসেন। সোনার চেয়ে রুপা, তামা, পিতল, পুঁতি, সুতা ইত্যাদির গয়নাই বেশি পরেন। বিদেশে গেলে গয়না ও স্কার্ফ কেনেন বেছে বেছে।
গরমের দিনে বাইরে গেলে চুলটা বাঁধলেও শীতে স্পাইরাল ও কোঁকড়া করে চুলটা খোলা রাখেন। পোশাকের সঙ্গে মানানসই বটুয়া বা ক্লাচ ব্যাগ ব্যবহার করেন।
ব্যাডমিন্টন খেলতে ভালোবাসেন শারমিন লাকি। শীতের সময় রাতে তিন-চার ঘণ্টা ব্যাডমিন্টন খেলেন গুলশান ক্লাবে। খেলার সময় ট্রাউজার আর টি-শার্ট পরেন। যেকোনো উপলক্ষ পেলেই বাসায় বন্ধুদের নিমন্ত্রণ করেন। নিজের হাতে খাবার তৈরি করেন। বাসায় নিয়মিত মিষ্টান্ন বানান। ছেলে দেশের বাইরে পড়াশোনা করছে বলেই ফেসবুকের পাশপাশি স্কাইপ, ভাইবারে নিয়মিত হয়েছেন। আমরা যাওয়ার তিন দিন আগেই শারমিন লাকির ফেসবুক পেজ ভেরিফায়েড হয়েছে বলে জানালেন। এই পেজের মাধ্যমে নিয়মিত ভক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন তিনি।
খাবারের প্রতি ভালোবাসা থাকলেও সুস্থ থাকতে খাবার গ্রহণ করেন বেছে বেছে। দিনে একবার শুধু দুপুরে ভাত খান, রাতে রুটি, নুডলস ও ফলমূল। কোনো ধরনের মাংসই খান না প্রায় ২০ বছর ধরে। তবে ঘিয়ে ভাজা পরোটা আর ঘন চা ছাড়তে পারেননি। মাছ খেতে ভালোবাসেন। ইলিশ পেলে তো আর কিচ্ছু লাগে না। শরীর ভালো রাখতে আরও একটি বিষয় শারমিন লাকি মেনে চলেন। তা হলো সব সময় হাসিখুশি থাকা আর সম্ভব হলে খেলাধুলা করা। অবসরে বই পড়া, গান শোনা, চলচ্চিত্র দেখা, ম্যাগাজিনে চোখ বুলিয়েই সময় কাটে।