স্ট্রিটওয়্যার
নিমন্ত্রণপত্রে লেখা আছে ‘ড্রেস কোড: সেমি ফরমাল’ আবার আরেকটি অনুষ্ঠানে বলা হয়েছে ‘ফরমাল’। সেমি ফরমাল কী আর ফরমালই বা কী—বুঝতেই সময় চলে গেল।
এসব হচ্ছে নির্ধারিত পোশাকের ধরন বা ড্রেস কোড। আবার ঘোরাফেরার জন্যও আছে পোশাকের আদবকেতা। কোথায় কখন কোন পরিবেশে কী পোশাক পরতে হয় তা বোঝার জন্য ড্রেস কোড জানা ভােলা।
ছেলেদের ফ্যাশনবিষয়ক ব্লগ কিং অব ঢাকার লেখক শাহজামান মজুমদার মনে করেন, ড্রেস কোড মেনেই সবার পোশাক পরা উচিত। তাহলেই পোশাকের পরিপাটি দিকটা সহজে নজর কাড়বে। দেশ ভেদে ড্রেস কোড নানা রকম হয়ে থাকে। তবে আমাদের দেশের চলটা আবার পশ্চিমা ঘরানার। তাই এখানে পশ্চিমা রীতি ধরেই ছেলেদের পোশাকে মোট ছয় ধরনের চল দেখা যায়।
ছেলেদের কয়েকটি ড্রেস কোডের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন শাহজামান মজুমদার
স্ট্রিটওয়্যারকে ঘরোয়া পোশাকও বলা যায়। সাধারণত খাটো প্যান্টের ওপর হাফ হাতার টি-শার্ট দিয়েই চলে এ পর্বটা। পায়ে লোফার বা স্যান্ডেল থাকতে পারে। শীতের সময়ে আবার অনেকে ঢোলা ট্রাউজার আর টি-শার্ট ঘরে পরে থাকে। সেটিও স্ট্রিটওয়্যার।
ক্যাজুয়াল
ক্যাজুয়াল পোশাকের নানা ধরন আছে। শার্ট বা টি-শার্ট—দুই ধরনের পোশাকই ক্যাজুয়াল হেত পারে। এখানে হাফ বা ফুল হাতা—দুই ধরনই চলবে। ক্যাজুয়ালে নানা রকম রং ও ডিজাইনের পোশাক পরা যায়। নিচের অংশে জিনস, গ্যাভার্ডিন বা উলের প্যান্টও পরা যায়। প্যান্টের নকশাও হতে পারে বিভিন্ন। ইচ্ছেমতো মোটা ও বড় ডায়ালের ঘড়ি পরা যেতে পারে। পায়ে চলবে কেডস বা লোফার।
বিজনেস ক্যাজুয়াল
শার্ট বা টি-শার্ট যেটাই হোক, সেটায় কলার থাকতে হবে। অনেকে বিজনেস ক্যাজুয়াল পোশাকে অফিস করে থাকেন। তবে সব অফিস আবার বিজনেস ক্যাজুয়াল পোশাকের অনুমতি দেয় না। তবে অফিসের কাজে বাইরে গেলে বিজনেস ক্যাজুয়াল চলতে পারে। বিজনেস ক্যাজুয়াল পোশাকে জুতাটা পুরো ফরমাল না পরে ফরমালের মধ্যেই একটু ক্যাজুয়াল হলে ভালো দেখাবে। সঙ্গে ফরমাল প্যান্ট পরতে হবে এমন বাধ্যবাধকতা নেই।
স্মার্ট ক্যাজুয়াল
স্মার্ট ক্যাজুয়ালে শার্ট-প্যান্টের সঙ্গে একটা স্টাইলিশ টাই হলে ভালো দেখাবে। তবে সেটা বাধ্যতামূলক নয়। শার্টের ওপরে ঠিক ব্লেজার নয়, তার চেয়ে জ্যাকেট স্টাইলের কোটই মানাবে। থাকতে পারে ওয়েস্ট কোট। স্মার্ট ক্যাজুয়ালে ফিতা দেওয়া জুতা পরা উচিত। আবার ফুল হাতা শার্ট–প্যান্ট স্মার্ট ক্যাজুয়াল ঘরানার। শার্ট প্যান্টে গোঁজা বা ইন করতে হবে।
বিজনেস বা ফরমাল
এটা সম্পূর্ণ অফিসের পোশাক। আসল বিষয়টা হলো সম্পূর্ণ ব্লেজার সেট থাকতে হবে। যেখানে শার্টে বেশি চড়া রং না পরে নরম কেনো রং বেছে নেওয়া উচিত। সাদা, হালকা নীল, ক্রিম রঙা ইত্যাদি রং থাকতে পারে শার্টে। ফুল হাতা শার্টের ওপরে টাই পরতে হবে। অক্সফোর্ড জুতা এই পোশাকের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। ঘড়ি পরলে সেটা চেইন বা বেল্ট—যে কোনোটাই হতে পারে। তবে ডায়ালটা হতে হবে ছিমছাম। কোমরের বেল্টটাও হবে ফরমাল।
সেমি ফরমাল বা ব্ল্যাক টাই
এটা সাধারণত সন্ধ্যা বা রাতের পোশাক। আমেরিকানরা যেমন টাক্সিডো বেশি পরেন, তেমনি ব্রিটিশরা পরেন ইনার জ্যাকেট। এখানে কোট যেটা শার্টের ওপর পরা হয়, তার সামনের অংশের ল্যাপেলে কিছুটা সিল্কের মতো কাপড় ব্যবহার করা হয়। প্যান্টেও দুই পাশে একই রঙের স্ট্রাইপ থাকতে পারে। কোমরে কোমরবন্ধ পরা হয় ব্ল্যাক টাই বা সেমি ফরমাল পোশাকে। পায়ে পেটেন্ট লেদারের অক্সফাম, অপেরা পাম্প শু—যাই পরা হোক না কেন, সেটা হবে চকচকে।