জীবনের মধুর সময়গুলো ধরা থাকে ছবিতে। যদি এই ছবিগুলো সুন্দর ফ্রেমে বন্দী করে রাখা যায়, তাহলে স্মৃতিটাও যেমন তরতাজা থাকবে, তেমন ঘরেও আসবে সৌন্দর্যের পরশ। কোন ঘরে কী ধরনের ফ্রেমে বন্দী করতে পারেন আপনার মধুময় স্মৃতি; সেই প্রশ্নের খুঁটিনাটি সমাধান জানিয়েছেন ফারজানা’স ব্লিসের ইন্টেরিয়র ডিজাইনার ফারজানা গাজী।
বাঁধাই করা ছবিটি কোন ঘরে রাখবেন, সেটা মাথায় রেখে তবে ফ্রেম বাছাই করতে হবে। কেননা ছবি যেমন আকর্ষণীয় হতে হবে, তেমন ছবির ফ্রেমটা সুন্দর হলেও ঘরের সৌন্দর্য বেড়ে যাবে বহুগুণ। ছবির ফ্রেম নির্বাচনের ক্ষেত্রে ঘরের দিকে একবার নজর দিতে হবে আপনাকে। ঐতিহ্যবাহী আদলের একটি ঘরে পশ্চিমা ধাঁচের ছবির ফ্রেম মানায় না মোটেও।
বাড়িতে ঢোকার সময় প্রথমেই যে জায়গাটাতে চোখ পড়ে, সেটা হলো সিঁড়ি। সিঁড়ির পাশের দেয়ালে ছবির ব্যবহারে আপনি আপনার রুচির পরিচয় দিতে পারেন। এখানে সাধারণ ফ্রেমেই বন্দী করতে পারেন পরিবারের কিছু মুহূর্ত বা প্রাকৃতিক দৃশ্য। ফ্রেমটা গাঢ় রঙের হলেই ভালো। হতে পারে সেটা কালো বা কফি রঙের। বড় একটি বাঁধানো ছবিও রাখতে পারেন আবার কয়েকটি ছোট ছোট ছবি বাঁধিয়ে রাখতে পারেন। বাড়ির ছোট্ট বারান্দাতেও আপনি এভাবে কয়েকটি ছবির মিশ্রণ রাখতে পারেন।
বসার ঘরে রাখার জন্য চিত্রকর্মই ভালো। এসব আঁকা ছবি আপনি বাঁধিয়ে নিতে পারেন মনমতো ফ্রেম দিয়ে। হতে পারে সেটা সোনালি বা কপার রঙের। তবে অবশ্যই মাথায় রাখবেন ঘরের আসবাবের কথা। ঘরে যদি অ্যান্টিক ধাঁচের আসবাব হয়, তাহলে ফ্রেমটাও অ্যান্টিকই নিন। আসবাব ভারী হলে ভারী ফ্রেমেই রাখুন ছবি। আবার ঘরে যদি দেশি আসবাব হয়, তাহলে হাতে তৈরি ফ্রেম বেছে নিন। ঘরের লাইট বা স্পট লাইটের নিচে ছবি রাখতে পারেন। বসার ঘরের শেলফ, শোকেসে বা ছোট টেবিলে ছোট ফ্রেমে রাখতে পারেন কিছু ছবি।
খাবার ঘরে ছবির ফ্রেম নির্বাচনের সময় মাথায় রাখবেন চেয়ার-টেবিল, কেবিনেট বা দেয়ালের রং কেমন। এখানে কিছু আঁকা ছবি আবার সুন্দর ক্যালেন্ডার বাঁধিয়ে রাখতে পারেন।
শোবার ঘর হোক স্মৃতিময়। মাথার কাছে অনেকগুলো ছবি বাঁধিয়ে রাখতে পারেন। আবার হাতে তৈরি ফ্রেমে ছবি রাখতে পারেন টেবিলে। বিভিন্ন আকারের বা ডিজিটাল ফটোফ্রেমের ছবিও সৌন্দর্য বাড়াতে পারে শোবার ঘরের।
বাচ্চার ঘরে তার কোনো মজার মুহূর্ত কার্টুন আকৃতির ফ্রেমে বন্দী করে রাখতে পারেন খেলনা রাখার কর্নারে বা দেয়ালে। তবে অতিথিদের ঘরে পরিবারের ছবি না দেওয়াই ভালো। সেখানে ড্রেসিং টেবিলে একটি বা দুটি ছবি রাখা যায় এমন ফ্রেমে ছবি রেখে দিতে পারেন।
বাজারে নানা ধরনের ছবির ফ্রেম পাওয়া যায়। কেবল পছন্দমতো কিনে নিলেই হলো। কাঠের ফ্রেম, হার্ডবোর্ডের ফ্রেম, সিরামিকসের ফ্রেম, কাচের ফ্রেম পাওয়া যায় বাজারে। এসবের দাম পড়বে ১০০ থেকে ৩৫০ টাকার মতো। আড়ং থেকে জানা গেল কারচুপি, ব্রোকেড কাপড়, নকশিকাঁথা, জামদানি ইত্যাদি বাহারি ফটোফ্রেম ছাড়া স্ট্যান্ড ফটোফ্রেমও পাওয়া যায় আড়ংয়ে। এ রকম ফ্রেমে আপনি সারি সারি করে সাজানো ১৫-২০টি ছবি ঘরের একদিকে রেখে দিতে পারবেন। কাঠের ছোট স্ট্যান্ড ও দেয়ালে লাগানোর মতো ফটোফ্রেমও পাবেন এখানে। সব ধরনের ফটোফ্রেমের দাম পড়বে ৬০ থেকে ছয় হাজার টাকা পর্যন্ত। আর্চিসে কিছু স্টিলের এবং পাথরের কাজ করা ফটোফ্রেম পাওয়া যায়। দাম ৫০০ থেকে দুই হাজার টাকার মতো। এ ছাড়া নিজের মতো করে ছবি বাঁধাই করে নিতে চাইলে যেতে পারেন এলিফ্যান্ট রোডের ‘ছবিঘরে’। এখানকার বিক্রয়কর্মী আকাশচন্দ্র ঘোষ জানান, এখানে আপনি পলিস্টোন, রাউন্ড ফ্রেম, উল্টা চোরি, সোজা চোরি, প্রজাপতি ফ্রেম, জিলাপির প্যাঁচ ফ্রেম ইত্যাদি নানা ধরনের ফ্রেম পাবেন। পছন্দমতো আকারে বাঁধিয়ে নিতে পারবেন ছবি। এসব ফ্রেমের জন্য আপনাকে রানিং ফিট অর্থাত্ ১২ ইঞ্চিতে দিতে হবে ১৫০ টাকা থেকে ৬৫০ টাকার মতো।