Lifestyle news - আকাশে দিয়েছি টিপ

কাজ আর টিভি দেখা চলে একসঙ্গে
চিরকুট ব্যান্ডের সুমি। নিজে গান করেন, আবার গান লেখেনও। পছন্দ আরামদায়ক পোশাক আর টিভি দেখতে দেখতে কাজ করা। মুখে সব সময় লেগে থাকে মিষ্টি হাসি। আজ থাকছে সুমির স্টাইল
কী আশ্চর্য! সেই বড় গোল টিপটা কোথায়? ‘টিপ আকাশে দিয়ে দিয়েছি’—মুখ টিপে একটু হেসে বললেন চিরকুট ব্যান্ডের সুমি। যাঁর পোশাকি নাম শারমিন সুলতানা। টিপ-বৃত্তান্ত বললেন, ‘প্রায় এগারো-বারো বছর আগে থেকে আমি টিপ পরি। তখন সবে খুলনা থেকে ঢাকা এসেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে। কেমন যেন একা একা লাগত। বড় গোল টিপ পরলে মনে হতো, আমার সঙ্গে কেউ আছে। আসলে এটা আমার সাজার অংশ ছিল না, এটা আমার সঙ্গী ছিল। আর এখন তো গানই আমার সবচেয়ে বড় সঙ্গী। টিপের ক্ষেত্রে কালো টিপই বেশি পছন্দ।’ তবে ইদানীং টিপ পরছেন না সুমি। ‘মনে হলো, অনেক দিন তো পরলাম, এখন কিছু সময় বাদ থাকুক।’ ঢাকার মগবাজারে সুমির বাসা আর স্টুডিওতে এভাবেই কথা এগোতে থাকল।
শাড়িতে চিরকুট ব্যান্ডের সুমি। ছবি: সুমন ইউসুফফ্যাশন নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামান না তিনি। কাজে ডুবে থাকতেই পছন্দ করেন। তবে যতটা সম্ভব গুছিয়ে চলেন। সাধারণত পাঞ্জাবি, জিনস, ধুতি, সালোয়ার-কামিজ বেশি পরা হয়। তাঁর পছন্দ সাদাসিধে আরামদায়ক পোশাক। শাড়ি যদিও তাঁর খুব পছন্দের, ইদানীং অতটা পরা হচ্ছে না। কেনাকাটা করেন আড়ং, বেইলি রোড, গাউসিয়া, হকার্স মার্কেট থেকে। খুব হালকা করে সাজেন। মেকআপের ক্ষেত্রে ম্যাক ব্র্যান্ড তাঁর পছন্দ। কোনো বিয়ের অনুষ্ঠান, কনসার্ট বা পার্টি হোক—সব ক্ষেত্রেই তার সাজগোজের ধরন একই। বড়জোর কখনো কখনো কানে দুল পরা হয়। তবে সুমির পায়ে হাই হিল—একেবারেই না।
‘আমি কিন্তু ঘুমাতে যাই ভোরে। কারণ, রাতের সময়টা নিরিবিলি থাকে, কাজ-কর্ম ভালো করা যায়।’ টেলিভিশনের চ্যানেল ঘোরাতে ঘোরাতে বললেন তিনি। ‘কয়েক ঘণ্টা ঘুমিয়েই দশটা-এগারোটার দিকে উঠে যাই। আর তারপরই বসি টেলিভিশন সেটের সামনে। প্রথমে সব চ্যানেল একবার করে দেখা চাই, শেষে গানবাংলা চ্যানেলে চলে গান শোনা।’ সারাক্ষণই টিভি চলে, পাশাপাশি তাঁর কাজও চলতে থাকে। এর মধ্যেই তিনি গান লেখেন, গান করেন, সুর করেন। হেসে বললেন, ‘টিভি চললে মনে হয় অনেক মানুষ বাসায় আসছে।’
ঘরের দেয়ালে স্বজনদের ছবিসারা দিনের সবচেয়ে বেশি খাওয়াদাওয়া হয় দুপুরে। বেগুন ভাজি খুব প্রিয় সুমির। পেঁয়াজ, সরিষার তেল দিয়ে মরিচভর্তাও দারুণ লাগে। নিজেই বলেন, ‘ভাত ছাড়া কিছু পোষায় না। তাই দেশের বাইরে গেলে ঝামেলায় পড়তে হয়।’ নিজে খাওয়ার চেয়ে মানুষকে খাওয়াতে তিনি বেশি পছন্দ করেন। কঠিন কঠিন রান্না নিয়ে মাঝে মাঝেই সুমি চালান পরীক্ষা-নিরীক্ষা।
দুপুরে খাওয়াদাওয়ার পরে সুমি স্টুডিওতে যান, রাতে বাসায় ফিরেই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আড্ডা চলে। তাঁর প্রিয় ব্যক্তিত্ব তাঁর বাবা। কিন্তু বাবা বেঁচে নেই; বাবাকে খুব মনে পড়ে। ঘুরে বেড়ানোর শখটা প্রবল তাঁর। শ্রীমঙ্গল আর কক্সবাজার প্রিয় জায়গা। ব্যান্ডের কাজে দেশের বাইরে গেলে সব সময় চেষ্টা করেন কিছু দিন বেশি থেকে ঘুরে বেড়াতে।
সব ধরনের গানের প্রতি তাঁর আগ্রহ আছে। তবে সুমনের গান বেশি ভালো লাগে। ইদানীং খুব বেশি সিনেমা দেখা হয়ে ওঠে না। তবে তাঁর পছন্দের তালিকার আছে টেলিভিশন, চোরাবালি, আলোর মিছিল, হীরক রাজার দেশে, মহানগর ও ফরাসি চলচ্চিত্র এমিলি।
আইফোনের ব্যবহারটা ভালোই করেন সুমি। লিরিক লেখা, বারবার টিউন করে রেকর্ড করা, এসব টুকটাক গানের কাজগুলো আইফোনেই সারেন তিনি।
তাঁর সুন্দর পরিপাটি ঘরের দেয়ালজুড়ে ছবি। ‘আমার তো দুটি পরিবার। একটা মা-ভাইবোনদের নিয়ে, আরেকটা ইমন, পাভেল, পিন্টু, দিদার অর্থাৎ আমাদের চিরকুট ব্যান্ডের সদস্যদের নিয়ে। আমি আমার কাছের মানুষগুলোর ছবি বাঁধাই করে ঘরে রাখি—মনে হয় সবাই আমার সঙ্গে আছে।’
আর আমরা বাইরে থেকে দেখি তাঁর আরেক সঙ্গী—একচিলতে হাসি।
-

Latest

Popular Posts

Popular Posts

Popular Posts