চলচ্চিত্রের
গুণী অভিনেত্রী ডলি জহুর। বড়পর্দার সৌজন্যে কাছের মানুষ হিসেবেই দর্শকের
হূদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রের এই মানুষটি গত তিন বছর
ধরে নেই তার ভুবনে। বর্তমানে ছোটপর্দাতেই ব্যস্ত আছেন তিনি। সম্প্রতি নিজের
কাজ এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে কথা বললেন বিনোদন প্রতিদিনের সাথে।
সাক্ষাত্কার নিয়েছেন দিব্যজ্যোতি দত্ত
এখনকার কাজ সম্পর্কে জানতে চাই।
এখন তো সিরিয়ালের কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছি। বেশ কয়েকটি সিরিয়ালে অভিনয় করছি। এছাড়া আর কোনো কাজ করছি না।
চলচ্চিত্রে আপনাকে আবার কবে দেখা যাবে?
চলচ্চিত্রে
আমাকে আর দেখা যাবে না। কয়েক বছর আগে শেষবারের মতো চলচ্চিত্রে অভিনয়
করেছিলাম। ২০১২ সালের পর তো একরকম ঘোষণা দিয়েই জানিয়ে দিয়েছি যে আর
চলচ্চিত্রে কাজ করবো না। আসলে চলচ্চিত্রে কাজের ক্ষুধাটা আর নেই। আর এখন যে
ধরনের ছবি হচ্ছে তাতে কাজের আগ্রহ পাই না। চলচ্চিত্রে অভিনয়ের তৃষ্ণা এখন
মরে গেছে। তাছাড়া আমি হজ্জ্ব করে এসেছি। আগে যা একটু কাজ করতাম কিন্তু
হজ্জ্ব থেকে ফেরার পর আর কোনো কাজই করিনি।
টিভি নাটকে কাজ করছেন। কিন্তু টিভি নাটকও তো জনপ্রিয়তা হারিয়েছে।
আমি
বলছি না যে টিভি নাটকের অবস্থা খুব ভালো বা আমি কোনো সাধারণ গল্পের কাজ
করি না। টিভি নাটকে কাজ করছি কারণ সময়টা এখানে অনেক কম দিতে হয়। হ্যাঁ,
আমার নাটকগুলোর মধ্যে অনেকগুলো খুব সাধারণ মানের ছিল। কিন্তু অনেক ভালো
কাজও করেছি। আর টিভি নাটকের জনপ্রিয়তা হারানোর পেছনে অনেকগুলো কারণ আছে।
এখন প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। আমাদের দেশিয় চ্যানেলগুলোর সাথে তো বটেই এমন কি
পার্শ্ববর্তী দেশের সিরিয়ালের সাথেও আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে হচ্ছে।
আর বাজেট, গ্ল্যামার, গল্পে আমরা বেশ পিছিয়ে আছি। দর্শক গ্ল্যামার দেখতে
চায়। তাছাড়া বিজ্ঞাপনের যন্ত্রণা তো রয়েছেই। অতিরিক্ত বিজ্ঞাপনের কারণে
দর্শক নাটক দেখার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।
সিনিয়রদের কেন্দ্র করে আমাদের নির্মাতারা চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন না কেন?
শুধু
চাইলেই তো হয় না, যোগ্যতাও থাকতে হয়। ভারতে যেমন সিনিয়র শিল্পীদের কেন্দ্র
করে আলাদা গল্প তৈরি হয়। সে সব ছবি ব্যবসা সফলও হয়। কিন্তু আমাদের এখানে
এমন চর্চা নেই। এটা খুবই দুঃখজনক যে আমাদের দেশে সিনিয়রদের জন্য গল্প হচ্ছে
না। আমি আশা করবো, আমাদের দেশেও নির্মাতারা সিনিয়র শিল্পীদের জন্য
চলচ্চিত্র নির্মাণে আগ্রহী হবেন।
চলচ্চিত্র বিষয়ক কোনো চুক্তির ক্ষেত্রে সিনিয়র শিল্পীদের অভিমত কতটা গুরুত্ব দেয়া হয়?
সিনিয়র
শিল্পীদের অভিমত জানতে চাওয়া হয় কি-না জানা নেই আমার। অবশ্য এর জন্য আমি
কাউকেই দোষ দিতে চাই না। চলচ্চিত্র বিষয়ে আমি কারো সাথেই কোনো কথা বলতে চাই
না। এখনও দেখা যায় অনেক ছবিতে কাজের জন্য আমাকে প্রস্তাব দেয়া হয়। আমি যে
ধরনের চরিত্রে কাজ করতাম সে ধরনের চরিত্রে কাজের জন্য অনুরোধ করা হয়।
কিন্তু আমি যেহেতু চলচ্চিত্রে আর কাজ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাই তাদের
ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হই। আমি নিজে যেহেতু চলচ্চিত্র নিয়ে কথা বলি না তাই আমার
জানা নেই যে চলচ্চিত্র বিষয়ক কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সিনিয়র
শিল্পীদের অভিমত নেয়া হয় কি-না বা নেয়া হলে কতটা গুরুত্ব দেয়া হয়।
অভিযোগ আছে চলচ্চিত্রের দুঃসময়ে সিনিয়র শিল্পীদের ডাকলে সারা পাওয়া যায় না।
যেহেতু
আমি এখন আর চলচ্চিত্রের সাথে নেই তাই এখন আর চলচ্চিত্রের কোনোকিছুতেই
আমাকে পাওয়া যায় না। কিন্তু সিনিয়র শিল্পীদের ডাকলে সারা পাওয়া যায় না এমন
কিছু সম্পর্কে এখনও আমি জানি না। তাই এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।