National news - জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

চলচ্চিত্র যেন পরিবারের সবাই মিলে দেখতে পারে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলচ্চিত্রকে সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার উল্লেখ করে সুস্থ ও সৃজনশীল ধারার চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য দেশের চলচ্চিত্র নির্মাতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও সামাজিক সমস্যাগুলো তুলে ধরে নির্মিত চলচ্চিত্রকে অবশ্যই সৃজনশীল ও শোভন হতে হবে।
গতকাল শনিবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৩ প্রদান উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনু-ষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
 
শেখ হাসিনা বলেন, চলচ্চিত্র একটি সৃজনশীল ও শক্তিশালী গণমাধ্যম। জনসাধারণের ওপর এর ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। শিক্ষার প্রসার, মেধার চর্চা, সামাজিক কুসংস্কার দূর করা, জাতি গঠন এবং প্রগতিশীল সমাজ বিনির্মাণেও চলচ্চিত্র একটি গুরুত্বপূর্ণ ও শক্তিশালী হাতিয়ার। চলচ্চিত্র নির্মাতাদের সৃজনশীল ও জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ আপনাদের অনুসরণ করে। সুতরাং সমাজের অন্য মানুষের চেয়ে আপনাদের দায়বদ্ধতা অনেক বেশি। একটি চলচ্চিত্রের দৃশ্য, সংলাপ, গল্প এবং নির্মাণ কৌশল এমন হতে হবে যে, তা যেন পরিবারের সকলে একসঙ্গে বসে দেখতে পারে।
 
সম্প্রতি বেশ কিছু চলচ্চিত্র দেশে ও বিদেশে সাফল্য অর্জন করায় প্রধানমন্ত্রী এর প্রশংসা করে বলেন, আমাদের অভিনেতা-অভিনেত্রী ও কলাকুশলীদের কর্মদক্ষতা ও পেশাদারিত্ব ধীরে ধীরে উন্নত হচ্ছে। সার্বিকভাবে এটা বলা যায় যে, আমাদের চলচ্চিত্র সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
 
অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু সভাপতিত্ব করেন এবং তথ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ কে এম রহমতউল্লাহ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তথ্যসচিব মর্তুজা আহমেদ অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন।
 
অনুষ্ঠানে ২৫টি বিভাগে মোট ২৮ জন অভিনেতা, অভি-নেত্রী, শিল্পী, প্রযোজক, পরি-চালক ও কলাকুশলীকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৩ প্রদান করা হয়। পুরস্কারপ্রাপ্তদের পক্ষে সারাহ বেগম কবরী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
 
শেখ হাসিনা আরো বলেন, চলচ্চিত্রপ্রেমী ও দর্শকদের হলমুখী করার জন্য সিনেমা হলগুলোকে ডিজিটালাইজড করা ও সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ১শ’টি সিনেমা হল এবং পর্যায়ক্রমে ৩শ’টি হলকে ডিজিটাল করার বিষয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। নতুন সিনেপ্লেক্স নির্মাণের জন্য কর অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। চলচ্চিত্র প্রদর্শনের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ৩৫ শতাংশ সম্পূরক কর প্রত্যাহার করা হয়েছে। সিনেমা হলে ভ্যাট ব্যতীত এখন আর কোন কর প্রদান করতে হয় না।
 
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়। কাজী রাকায়েত ও ফরিদুর রেজা সাগর প্রযোজিত ‘মৃত্তিকা মায়া’ শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পুরস্কার লাভ করে।
 
ডকুমেন্টারি চলচ্চিত্রের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার লাভ করে সারাহ আফরিনের ‘শুনতে কি পাও’, মৃত্তিকা মায়া চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার লাভ করেন তিতাস জিয়া। শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার পান যৌথভাবে দু’জন: ‘মৃত্তিকা মায়া’য় অভিনয়ের জন্য মৌসুমী এবং ‘দেবদাস’-এ অভিনয়ের জন্য শরমি মালা।
অন্য পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন পরিচালক কাজী রাকায়েত, পার্শ্বঅভিনেতা রাইসুল ইসলাম আসাদ, পার্শ্বঅভিনেত্রী অপর্ণা, খলনায়ক মামুনুর রশীদ, শিশু অভিনেতা স্বচ্ছ, শিশু অভিনেত্রী সৈয়দা অহিদা সাবরিনা, সঙ্গীত পরিচালক এ কে আজাদ, সঙ্গীত শিল্পী (পুরুষ) চন্দন সিনহা, সঙ্গীত শিল্পী (মহিলা) রুনা লায়লা ও সাবিনা ইয়াসমিন, গীতিকার কবির বকুল, সুরকার কৌশিক হোসেন তাপস, সংলাপ, শ্রেষ্ঠ নাট্য রচনা কাজী রাকায়েত, সম্পাদনা শরীফুল ইসলাম রাসেল, শিল্প নির্দেশক উত্তম গুহ, ফটোগ্রাফার সাইফুল ইসলাম বাদল, শব্দ প্রকৌশলী কাজী সেলিম, কস্টিউম এন্ড ডেকোরেশন ডিজাইনার ওয়াহিদা মল্লিক এবং মেকাপ ম্যান আলী বাদল। এরা নিজ নিজ ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার লাভ করেন।
-

Latest

Popular Posts

Popular Posts

Popular Posts