Lifestyle news - হবু মায়ের রূপরুটিন

প্রসাধনী ব্যবহারে সচেতন থাকা চাই। মডেল: তাশরিবা, পোশাক ও স্থান: স্বপ্ন, ছবি: নকশাহবু মায়ের দিনমান চিন্তা অনাগত সন্তানকে নিয়ে। সেই সঙ্গে আছে নানা শারীরিক সমস্যা। কিছু কিছু মানসিক যাতনাও। এত কিছুর মধ্যে আবার আলাদা করে রূপচর্চা? অনেকে ভাবতেই পারেন না। কিন্তু এ সময়েই যত্নের প্রয়োজন বেশি। নিজেকে পরিচ্ছন্ন রাখতে, মনকে প্রফুল্ল রাখতে সৌন্দর্যচর্চার প্রয়োজন। হবু মায়ের রূপচর্চা নিয়ে কথা হয় রূপবিশেষজ্ঞ গীতি বিল্লাহর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সন্তান আগমনের প্রতীক্ষায় থাকার এ সময়টায় হবু মায়েরা নিজের প্রতি যত্নের ক্ষেত্রে একটু কম মনোযোগী। কিন্তু সন্তানের সুস্থতার জন্য এ সময়ে উৎফুল্ল থাকা চাই। তাই চেষ্টা করতে হবে সব সময় সুন্দর চিন্তা করার। সুস্থ-সুন্দর পরিবেশে থাকার। ঢিলেঢালা হালকা রঙের সুতির পোশাক পরতে হবে। কর্মজীবী নারীরা এ সময়টায় নিজেদের জন্য আলাদা বিশ্রামের সময় বের করে নেবেন। আর বাজারে কেনা প্রসাধনীর চেয়ে ঘরোয়া উপায়ে রূপচর্চায় প্রাধান্য দিতে হবে।’
ত্বকের যত্নে গীতি বিল্লাহ পরামর্শ দিলেন নিয়ম করে শসার রস মুখে লাগানোর। গাজর-টমেটো ব্লেন্ড করে তাতে মধু মিশিয়ে মুখে লাগাতে পারেন। নিয়মিত ডাবের পানি দিয়ে মুখ ধুতে পারেন। লেবুর রস ও বেবি অয়েলের সঙ্গে ত্বকের সঙ্গে মানানসই যেকোনো উপটান মুখে লাগিয়ে নিতে পারেন। ২০ মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফেলবেন। এ সময়ে হরমোনজনিত পরিবর্তন আসে, তাই অনেকের মুখে ব্রন ওঠে। ব্রনের ওপর নিমপাতা, হলুদবাটা দেওয়া যেতে পারে। অনেক হবু মা অ্যান্টিরিঙ্কল ক্রিম দিয়ে পেট মালিশ করেন, সেটা না করাই ভালো। এ ক্ষেত্রে অলিভ অয়েল মালিশ অনেক বেশি কাজে দেয়। সন্তানসম্ভবা নারীর ঘাড় কালো হয়ে যেতে পারে। ১ চামচ উপটান, ১ চামচ হলুদবাটা, ১টি এলাচির গুঁড়া, ১ চামচ ঘি মিশিয়ে ঘাড়ে লাগালে উপকার পাবেন। ভিটামিন বি কমপ্লেক্স খেলেও এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
হবু মায়েরা ফেসিয়ালের জন্য মাসে অন্তত একবার পারলারে যেতে পারেন। তবে ভাপ না নেওয়াই ভালো। ক্লান্তি দূর করার জন্য
হাত-পা ম্যাসাজ করাতে পারেন। কোনো সেবা নেওয়ার আগে পারলারের কর্মীদের জানিয়ে দিন যে আপনি সন্তানসম্ভবা। সে ক্ষেত্রে তাঁরাও সতর্ক থাকবেন।
শরীর ও ত্বকে আর্দ্রতার ঘাটতির হলে গোসলের পর ও রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মুখে, হাতে, পায়ে ও পেটে ভালো করে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। শুরু থেকে এটি করলে ত্বকের কালচে ভাব হয় না।
এ সময়ে চুলের বৃদ্ধি অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেশি হয়। তাই দুই মাস অন্তর চুল ছেঁটে নিতে পারেন। একদিন পর পর চুল শ্যাম্পু দিয়ে ধুতে হবে। সপ্তাহে অন্তত এক দিন কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। গোসলের পর বাতাসে চুল শুকিয়ে নিতে হবে। খুব প্রয়োজন না হলে চুলে রং, রোলার, আয়রন ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। আর মেহেদি-টকদই—যা-ই ব্যবহার করুন, সেটা যেন খুব ঠান্ডা না হয়। একটু গরম করে মাথায় লাগিয়ে ১ ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে ধুয়ে ফেলতে হবে। না হলে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে।
কর্মজীবী হবু মায়েরা বাসা থেকে বের হওয়ার আগে অবশ্যই সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করবেন। এ সময় চড়া মেকআপ এড়িয়ে চলাই ভালো।
সন্তানসম্ভবা হওয়ার প্রথম দিক থেকেই চিকিৎসকেরা কিছু খাবারে নিষেধাজ্ঞা দেন। তার মধ্যে আছে দু-এক রকমের ফল। সেই ফলে কি রূপচর্চা করা যায়? জানতে চেয়েছিলাম ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিভাগের অধ্যাপক ফারহাত হোসেনের কাছে। তিনি বললেন, ‘হবু মায়ের সঠিক পরিচর্যার জন্য আমরা ফলমূলের প্রতি বিশেষ নজর দিই। কিন্তু এ অবস্থায় আমরা নিষেধাজ্ঞা দিই আনারসে। কারণ, আনারসে ব্রোমেলিয়ান নামক একধরনের উপাদান থাকে, যা ডায়রিয়ার কারণ হিসেবে চিহ্নিত। গর্ভাবস্থার প্রাথমিক পর্যায়ে আনারস খেলে গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ে। একই রকমভাবে আছে কাঁচা পেপে। এতে বিভিন্ন রকমের এনজাইম থাকে, যা গর্ভপাতের সহায়ক হতে পারে। এ জন্য এই দুটি ফল এ সময়ে না খাওয়াই ভালো। তবে এ ফলগুলো রূপচর্চার জন্য বাহ্যিক ব্যবহার করাতে কোনো সমস্যা নেই।’
এ ছাড়া কোনো প্রসাধনী ব্যবহারে অ্যালার্জি বা র্যা শ দেখা দিতে পারে। সেগুলো এড়িয়ে চলুন। প্রসাধনীর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ত্বকের যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সে জন্য উন্নত মানের প্রসাধনী ব্যবহার করুন। মেয়াদোত্তীর্ণ প্রসাধনী ব্যবহার করবেন না। পণ্যের লেবেল ভালোমতো পড়ে নিন ব্যবহারের আগে।
-

Latest

Popular Posts

Popular Posts

Popular Posts