১৯ শতকের ফরাসি চিকিৎসাবিজ্ঞানী পিয়েরে পল ব্রোকা মস্তিষ্কের ওই অংশটিকে কথা বলার জন্য মানুষের ‘কমান্ড সেন্টার’ হিসেবে চিহ্নিত করেন। তাঁর নামেই ‘ব্রোকা এরিয়া’ হিসেবে এই অংশটিকে এতদিন ধরে মানুষের বাচনিক এবং স্বরযন্ত্রের ক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত বলে স্বীকৃতি দিয়ে আসছেন দুনিয়াজোড়া বিজ্ঞানীরা। কিন্তু নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে ভিন্ন তথ্য।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া বেকারলি ও মেরিল্যান্ডের জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিনের এই ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছেন। যৌথ গবেষণা প্রতিবেদনটির প্রধান রচয়িতা আডিন ফ্লিঙ্কার বলেছেন, ‘আক্ষরিক অর্থেই কথাটা বলার সময় ব্রোকা এরিয়া কোনো কাজ করে না। কিন্তু একটা আলাপ চলাকালে এটা হয়তো পরবর্তী শব্দ বা বাক্য সাজানোর কাজ করতে পারে।’
স্নায়ুবিজ্ঞানীরা ঐতিহ্যগতভাবে মস্তিষ্কের ভাষাকেন্দ্রটিকে দুই ভাগে ভাগ করে আলোচনা করেন—একটা কথার অর্থ বোঝার জন্য, অন্যটা কথাটা উৎপাদনের জন্য। ফ্লিঙ্কার বলেন, ‘এই আবিষ্কারের ফলে আমরা জানতে পারলাম যে ব্রোকা এরিয়া আসলে কথা উৎপাদনের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় বরং এটা মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের মধ্যে তথ্য সন্নিবেশ ও সমন্বয়ের এক জটিল জায়গা।’
এই আবিষ্কার স্ট্রোক, মৃগীরোগ এবং মস্তিষ্কের আঘাতজনিত কারণে বাকশক্তি হারানো মানুষের রোগনির্ণয় ও চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ফ্লিঙ্কার বলেন, এই গবেষণার ফল আমাদের মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের সময় ভাষাগত প্রতিবন্ধিতার সমস্যা নির্ণয়ে সহায়তা করতে পারে। গবেষণা প্রতিবেদনটি যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস-এ প্রকাশিত হয়েছে।