Lifestyle news - যক্ষ্মা এখনো মহামারি

যক্ষ্মা এখনো বিশ্বের অন্যতম বড় জনস্বাস্থ্য সমস্যা। বিশ্বে প্রতিবছর ৯০ লাখ মানুষ নতুন করে যক্ষ্মায় আক্রান্ত হচ্ছে। মারা যাচ্ছে ১৫ লাখ। প্রতি সেকেন্ডে প্রাণ হারাচ্ছে একজনেরও বেশি। এই চিত্র বলে দেয় যক্ষ্মায় প্রাণহানি ঘটেই চলেছে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে রোগটির ব্যাপারে সচেতনতার বিষয়টি এখনো অবহেলিত।

আজ মঙ্গলবার বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস। দিবসটি উপলক্ষে এই রোগ নির্মূলে রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গীকার গতিশীল করতে সব দেশের সরকার ও স্বাস্থ্য সংগঠনগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও স্টপ টিবি পার্টনারশিপ।

যক্ষ্মা যে জনস্বাস্থ্যের জন্য এখনো একটা গুরুতর সমস্যা, তা-ও স্বীকার করেছে এই তিন সংস্থা। সমস্যাটি থেকে বাংলাদেশও মুক্ত নয়। জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির তথ্যমতে, দেশে প্রতি লাখ মানুষের মধ্যে ৪০২ জন যক্ষ্মায় আক্রান্ত। আর যক্ষ্মার কারণে মৃত্যু হচ্ছে প্রতি লাখে ৫১ জনের।

ব্র্যাকের যক্ষ্মা কর্মসূচির তথ্য বলছে, ২০১৪ সালে দেশে এক লাখ ৯১ হাজার ১৫৫ জন যক্ষ্মার নতুন রোগী শনাক্ত করা হয়। এদের মধ্যে শিশু ছিল ছয় হাজার ৩১৮ জন।

চলতি বছর বিশ্ব যক্ষ্মা দিবসের প্রতিপাদ্য ‘যক্ষ্মা খুঁজব ঘরে ঘরে, সুস্থ করব চিকিৎসা করে।’ এই প্রতিপাদ্যের লক্ষ্য চিকিৎসাসেবাবঞ্চিত বিশ্বের ৩০ লাখ যক্ষ্মা রোগীর সেবা নিশ্চিত করা।

ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস টাইমস পত্রিকায় আজ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে যক্ষ্মাকে আধুনিক সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে বলা হয়েছে, এক শতকের বেশি সময় পার হওয়ার পরও রোগটি বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্যের জন্য একটা সমস্যা হিসেবেই রয়ে গেছে। নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে যক্ষ্মায় ৯৫ শতাংশেরও বেশি প্রাণহানি ঘটে। যক্ষ্মার সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। ১৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সী নারীদের মৃত্যুর শীর্ষস্থানীয় তিনটি কারণের মধ্যে যক্ষ্মা রয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, শিশুবান্ধব চিকিৎসাসেবার অভাবে যক্ষ্মায় আক্রান্ত শিশুদের মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ছে। প্রাপ্তবয়স্কদের চেয়ে শিশুদের ক্ষেত্রে যক্ষ্মা নির্ণয় বেশ কঠিন কাজ। কারণ তারা সব সময় যক্ষ্মার সাধারণ লক্ষণগুলো প্রকাশ করে না।

রোগটির বিস্তাররোধ ও তা নির্মূলে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা বাড়ানো এবং চিকিৎসাসেবার উন্নতির ব্যাপারে গুরুত্ব দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে চিকিৎসা-গবেষণা ও প্রচার গোষ্ঠীগুলো।

দুই ঘণ্টায় যক্ষ্মা শনাক্ত: বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশে কিছুদিন আগেও ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মার (এমডিআর-টিবি) সন্দেহভাজন রোগীর কফ পরীক্ষার জন্য ইউরোপে পাঠানো হতো। পরীক্ষা শেষে ফল হাতে নিয়ে রোগীর চিকিৎসা শুরু করতে চার মাস লাগত। এখন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরীক্ষার মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে সব ধরনের যক্ষ্মা শনাক্ত করা যাচ্ছে। বর্তমানে ৩৯টি সরকারি হাসপাতালে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।
-

Latest

Popular Posts

Popular Posts

Popular Posts