বাংলাদেশে এখনো পর্যন্ত অনলাইন বা অফলাইনে মতপ্রকাশের নিরাপত্তা নিশ্চিত
হয়নি। ব্লগাররা প্রতিনিয়ত হয়রানি ও হুমকির শিকার হচ্ছেন। রাষ্ট্রীয়,
সামাজিক এবং অনলাইনে মতামত প্রকাশ করার নিরাপত্তা পাচ্ছেন না ব্লগাররা।
মতপ্রকাশে ব্লগারদের অধিকার সুরক্ষিত হোক।
গতকাল রবিবার
রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিক কর্মশালায় বক্তারা একথা বলেন। মানবাধিকার
সংগঠন ‘আর্টিকেল ১৯’ কর্মশালার আয়োজক। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার
উদ্যোগে ‘ব্লগারদের অধিকার’ শীর্ষক প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন এবং ‘স্পন্দমান
ও শঙ্কামুক্ত অনলাইন ক্ষেত্র চাই’ বিষয়ক ওরিয়েনটেশন কর্মসূচি হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সম্প্রচার আইনবিষয়ক জাতীয় কমিটির চেয়ারপাসন ড:
গোলাম রহমান, লক্ষ্মণ দত্ত পান্ট, ব্যারিস্টার জ্যোতিময় বড়ুয়া, ড: শহীদুল
আলম, নিশাত জাহান রানা, তৌফিক ইমরোজ খালিদী প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন
‘আর্টিকেল ১৯’ বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক তাহমিনা রহমান।
তাহমিনা বলেন, বাংলাদেশের ব্লগার ও অনলাইন এক্টিভিস্টদের স্বাধীনভাবে
মতপ্রকাশ ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত বিষয়ে কাজ করছে ‘আর্টিকেল ১৯’, বাংলাদেশ ও
দক্ষিণ এশিয়া। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও এখন আর্টিকেল ১৯
ব্লগার ও অনলাইন এক্টিভিস্ট এবং গণমাধ্যমকর্মীদের অধিকার নিয়ে কার্যক্রম
শুরু করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় টি সার্কেল ব্লগার ও অনলাইন এক্টিভিস্টের
অংশগ্রহণে এই কর্মশালা।
ড: গোলাম রহমান বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন
দেশের মতো বাংলাদেশেও সংবাদ মাধ্যমের বিভিন্ন সোর্স তৈরি হয়েছে। সংবাদ এখন
শুধু আর পত্র-পত্রিকা বা টেলিভিশন ও রেডিও’র মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। ব্লগারস,
অনলাইন এক্টিভিজম এখন একটি বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনলাইন, অফলাইন,
স্যাটেলাইট সব মিলিয়ে এখন একটি সমন্বিত পদ্ধতিতে পরিচালিত হওয়া দরকার।
অনলাইন এক্টিভিস্ট ও ব্লগাররা বলেন, বাংলাদেশে এখনো পর্যন্ত অনলাইন বা
অফলাইনে মতপ্রকাশের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়নি এবং তারা প্রতিনিয়ত হয়রানি ও
হুমকির শিকার। তারা অনলাইনে তাদের মতামত প্রকাশ করার নিরাপত্তা পাচ্ছেন না।
তারা যখন তাদের মতামত নিজেদের ব্লগ, ফেসবুক ও অন্যান্য অনলাইনে প্রকাশ
করেন তখন তাদের মতামত না নিয়েই বাংলাদেশে প্রকাশিত পত্র-পত্রিকা ও
স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল এমনকি অনলাইন পত্রিকাতেও সেগুলো সরাসরি তারা
প্রকাশ করছে, যা নীতি বিরুদ্ধ বলে তারা মনে করেন। এর ফলে একদিকে যেমন তাদের
নিরাপত্তা লঙ্ঘিত হচ্ছে, অন্যদিকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন
বিভাগের শিক্ষক ড. মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার জাকির খান, ব্যারিস্টার
তারিকুল কবির তানজির, এডভোকেট নাহিদ সুলতানা, অনলাইন এক্টিভিস্ট ও ব্লগার
ক্যামেলিয়া কামাল, সাদরিল শাহজাহান, আরিফ নুর, মির্জা মোহম্মাদ ইলিয়াস ওরফে
ছোটো মির্জা।
কর্মশালায় আলোচকরা অনলাইন এক্টিভিস্ট ও ব্লগার
এবং অফলাইনেও যারা মতামত প্রকাশ করেন তাদের অধিকার রক্ষায় কর্তৃপক্ষকে
দ্রুত বিষয়টি বিবেচনা করার অনুরোধ করেন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার
আহবান জানান।