Business and Commerce news - অবরোধের ক্ষতি পোষাতে একগুচ্ছ দাবি রপ্তানিকারকদের ইউরোপে রপ্তানিতে প্রণোদনা ও মহাসড়কে পণ্যের ক্ষতিপূরণ বীমা স্কীম চালুর দাবি

গত প্রায় দেড় মাসের অবরোধে আর্থিক ক্ষতির হিসাব  করেছেন রপ্তানিকারকরা। পোশাক রপ্তানিকারকদের নেতৃত্বে গঠিত একটি কমিটি ব্যাংক ঋণসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে সরকারের কাছে সহায়তা চাইতে দাবির তালিকা তৈরি করেছে। এছাড়া ইউরোপের মুদ্রা ‘ইউরো’র বিনিময় হার কমায় সেখানে রপ্তানিকারকদের জন্যও ৩ শতাংশ হারে নগদ সহায়তার দাবি রয়েছে। এসব ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) আজ সোমবার নাগাদ দাবি সম্বলিত চিঠি পাঠানো হবে। বিজিএমইএ’র সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, অবরোধের কারণে ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের উদ্যোক্তাদের বিশেষ সুবিধা দেয়ার দাবি করা হবে। মেয়াদী ঋণের ক্ষেত্রে শ্রেণি বিন্যাসিত না করে পুনঃতফসিলের সুযোগ দেয়া, বড় ঋণ গ্রহীতাদের ন্যায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্যও ঋণ পুনঃতফসিলের সুযোগ দেয়ার দাবি রয়েছে। নতুন বাজারে রপ্তানির ক্ষেত্রে বর্তমানে নগদ সহায়তা দেয়া হয়। এ প্রণোদনার অর্থ দ্রুত ছাড় করারও দাবি উদ্যোক্তাদের। অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে, হরতাল-অবরোধের কারণে বন্দরে  পণ্য আটকে থাকায় এর চার্জ আমদানি-রপ্তানিকারকদের উপর আরোপ না করা, বীমা প্রিমিয়ামের চার্জ কমিয়ে তা পরিশোধের পদ্ধতিকে নমনীয় করা।
এছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রামসহ আমদানি-রপ্তানি কাজে ব্যবহূত মহাসড়কে পরিবহনের পাশাপাশি পণ্যের ক্ষতিপূরণে নামমাত্র প্রিমিয়ামে বীমা ব্যবস্থা প্রচলনের দাবিও রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে এসব মহাসড়কে পণ্য পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় উদ্যোক্তাদের ক্ষতির  হাত থেকে রক্ষা করতে এ দাবি যুক্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে রপ্তানি পণ্যের উেস করকে চূড়ান্ত করদায় হিসেবে বিবেচনার দাবি জানানো হবে।
সম্প্রতি পোশাক খাত সংশ্লিষ্ট রপ্তানিকারকরা এসব দাবি-দাওয়ার ফর্দ তৈরি করতে বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করেছে। ওই কমিটি এসব দাবির তালিকা তৈরি করেছে। আব্দুস সালাম মুর্শেদী ইত্তেফাককে বলেন, রপ্তানিকারকদের জন্য সরকারের কাছে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী কিছু দাবির তালিকা তৈরি করেছি। তিনি বলেন, ব্যাংক ঋণ, করসহ এসব ক্ষেত্রে সরকারের কাছে নীতি সহায়তা চাই। বিশেষত ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের টিকিয়ে রাখতে সরকারের নজর দিতে হবে।
রপ্তানিকারকরা এসব দাবির সঙ্গে ইউরোপের বাজারে রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন বাজারের ন্যায় প্রণোদনার দাবি জানিয়েছেন। সম্প্রতি টাকার বিপরীতে ইউরো’র বিনিময় মূল্য ১০৬ টাকা থেকে ৮৮ টানায় নেমেছে। দেশের মোট রপ্তানির ৬০ শতাংশই যায় ইউরোপের বাজারে। ইউরো’র মূল্যমান কমে যাওয়ায় রপ্তানির বিপরীতে কম অর্থ আসছে। ফলে রপ্তানিকারকদের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে রপ্তানি মূল্যের উপর ৩ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দেয়ার দাবি উঠেছে।
৩৫ গার্মেন্টসের ক্ষতি
১৮১ কোটি টাকা
হরতাল-অবরোধের কারণে ৩৫টি গার্মেন্টস তাদের আর্থিক ক্ষতির তালিকা বিজিএমইএতে পাঠিয়েছে। অর্ডার বাতিল, ডিসকাউন্ট, বিমানে পণ্য পাঠানোর ক্ষতি, দেরিতে পণ্য পাঠানো, সহিংসতায় ক্ষতিসহ নানামুখী কারণে এসব গার্মেন্টসের ১৮১ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম ইত্তেফাককে বলেন, ইতিমধ্যে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ উত্পাদন কমে গেছে। আগামী তিন-চার মাস পর ক্ষতির চিত্র স্পষ্ট হবে। যে ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে তা অর্থে মূল্যায়ন করা যাবে না। সেটি উদ্ধার করা যাবে না। তবে পরিস্থিতির দ্রুত অবসান না হলে ভবিষ্যতে অর্ডার পাওয়াই কঠিন হবে।
-

Latest

Popular Posts

Popular Posts

Popular Posts