আকাশে
মেঘের আনাগোনা হলেই বেজে ওঠে ফোন। বন্ধু রুবেল অনুরোধ করে তার বাড়িতে
বেড়িয়ে আসার জন্য। প্রতি বর্ষায় বেড়িবাঁধে পানি এলে বন্ধুরা মিলে নৌকা
নিয়ে আনন্দভ্রমণে বের হয় ওরা। এবার আমাকেও ডাকছে। নৌকা নিয়ে টইটই ঘুরে
বেড়ানোর এখনই তো মোক্ষম সময়। তা ছাড়া নদীর মাছ খাওয়ার লোভ সামলাই কী
করে। রোজার ঈদের ছুটি কদিন হাতে থাকতেই বেড়িয়ে পড়লাম।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেন থেকে নেমে মহানগর প্রভাতীর জন্য অপেক্ষা, তাও তিন ঘণ্টা বাকি। এত সময় কী করি? বন্ধু সাদ্দামকে ডেকে আনলে কেমন হয়? গল্প করা যেত—ওর বাড়ি এখানেই। সাদ্দাম এল বটে, তবে গল্প করতে নয়, ধরে-বেঁধে ওদের বাড়ি নিয়ে যেতে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া বেড়িবাঁধ
বিকেলে বেরিয়েছি ঘুরতে। বাড়ির পাশেই পিচঢালা রাস্তা, তার বিপরীতেই বসেছে অথই পানির মেলা। ফুরফুরে ঠান্ডা বাতাসে প্রাণ জুড়িয়ে যায় মুহূর্তেই। রাস্তা ঘেঁষে কয়েক ফালি জমির কোনোটিতে ছেলেরা ফুটবল খেলায় ব্যস্ত, কোনোটিতে চলছে নৌকা মেরামত আর বাকিগুলো লম্বাটে পাটখেত আর চালকুমড়ার মাচায় ছাওয়া। বিশাল বিশাল অনেকগুলো ধান শুকানোর চাতাল আছে এখানে। দিন শেষে ধান মেপে চলছে ট্রাকে বোঝাইয়ের কাজ। ছেড়ে যেখানে উঠে এলাম সেটি একটি বেড়িবাঁধ! নিকলী বেড়িবাঁধ দেখতে এসে এখানে পেয়ে গেলাম আরেকটি বেড়িবাঁধের দেখা! ঈদে বেড়াতে আসা শত শত পর্যটক ভিড় জমিয়েছে এখানে। ঢেউগুলো যেই সরে যাচ্ছে, আবার আছড়ে পড়ছে বেড়িবাঁধের পাথুরে ব্লকগুলোয়। এ যেন এক টুকরো পতেঙ্গা।
নিকলী বেড়িবাঁধ
পরদিন ভৈরব হয়ে কুলিয়ারচর, বাজিতপুর ছাড়িয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে চলে এলাম নিকলী। আসার পুরোটা পথই ছায়া দিয়ে ঢেকে রেখেছে দুই পাশের সারি সারি গাছগুলো। বেশির ভাগ জমিই পাট আর কচুখেতের দখলে।
একসময় অটোরিকশা ছেড়ে রিকশা, তারপর গিয়ে উঠলাম নৌকায়। হঠাৎই নামল ঝুমবৃষ্টি। নৌকার ছইয়ের ভেতরেও আমরা তো ভিজছিই, পাশে মনের সুখে ভিজে বেড়াচ্ছে পাতিহাঁসগুলো।
দুপুরে তৃপ্তি ভরে খাবার খেলাম নদীর মাছ দিয়ে। একটু বিশ্রাম নিয়ে সন্ধ্যায় আবারও নৌকা। এবার আর নৌকার ভেতরে গুটিসুটি মেরে বসে থাকা নয়, বরং ছইয়ের ওপর শুয়ে শুয়ে আকাশের চাঁদ দেখতে দেখতে চলে গেলাম বন্ধুর বাড়ি। ভোরে উঠেই নদীর ঘাটে, রাতভর জালে ধরা মাছ নিয়ে হাজির মাঝির দল। বিস্ময়ে অবাক হই, কত বাহারি সেসব নদীর মাছ। পু্ঁটি, টেংরা থেকে শুরু করে কই, টাকি, গুলশা, বাইলা, চিংড়ি, বাইম মাছ—তাও হরেক রকমের।
গ্রামটাও ঘুরে দেখা হলো। দল বেঁধে নরসুন্দা নদীতে গোসল তো হলোই।
ফিরতি পথে একজনকে দেখলাম বড়শিতে শাণ দিতে—শুধুই বোয়াল মাছ ধরার জন্য এই বড়শি। নরসুন্দা নদী বেয়ে যাচ্ছি বেড়িবাঁধে।
ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টির সঙ্গে সন্ধ্যা নামতেই আমরা ফেরার পথ ধরলাম। পরদিন সকালে আবারও নদীর মাছ খেয়ে সঙ্গে ব্যাগভর্তি আমড়া নিয়ে ঢাকার দিকে মুখ করলাম।
যেভাবে যাবেন
এই সময়ে পানি আছে নিকলি বেড়িবাঁধে। তবে আর বেশি দিন থাকবে না। ঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনযোগে চলে আসুন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। সকালের নাশতা সেরে রেলস্টেশন থেকে জনপ্রতি ২০ টাকা ভাড়ায় পৌঁছে যাবেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া বেড়িবাঁধে। নিকলী যেতে প্রথমে আসুন ভৈরব বাসস্ট্যান্ডে। সেখান থেকে ১০০ টাকা অটোরিকশা ভাড়ায় চলে যাবেন নিকলী সদরে। দুপুরের খাবারটা সেরে নিতে পারেন বেড়িবাঁধের কাছের সেবা হোটেল থেকে। তবে নিকলীতে কোনো আবাসিক হোটেল নেই। রাতে থাকতে চাইলে যেতে পারেন কিশোরগঞ্জে। গাঙচিল, শ্রাবণী আর আল-মুসলিমের মতো উন্নত হোটেলগুলোতে থাকতে পারেন। ফিরতি পথে নিকলী নতুন বাজার থেকে নদীর টাটকা মাছ আর কেজিপ্রতি ২০ টাকায় আমড়া আনতে ভুলবেন না যেন!
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেন থেকে নেমে মহানগর প্রভাতীর জন্য অপেক্ষা, তাও তিন ঘণ্টা বাকি। এত সময় কী করি? বন্ধু সাদ্দামকে ডেকে আনলে কেমন হয়? গল্প করা যেত—ওর বাড়ি এখানেই। সাদ্দাম এল বটে, তবে গল্প করতে নয়, ধরে-বেঁধে ওদের বাড়ি নিয়ে যেতে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া বেড়িবাঁধ
বিকেলে বেরিয়েছি ঘুরতে। বাড়ির পাশেই পিচঢালা রাস্তা, তার বিপরীতেই বসেছে অথই পানির মেলা। ফুরফুরে ঠান্ডা বাতাসে প্রাণ জুড়িয়ে যায় মুহূর্তেই। রাস্তা ঘেঁষে কয়েক ফালি জমির কোনোটিতে ছেলেরা ফুটবল খেলায় ব্যস্ত, কোনোটিতে চলছে নৌকা মেরামত আর বাকিগুলো লম্বাটে পাটখেত আর চালকুমড়ার মাচায় ছাওয়া। বিশাল বিশাল অনেকগুলো ধান শুকানোর চাতাল আছে এখানে। দিন শেষে ধান মেপে চলছে ট্রাকে বোঝাইয়ের কাজ। ছেড়ে যেখানে উঠে এলাম সেটি একটি বেড়িবাঁধ! নিকলী বেড়িবাঁধ দেখতে এসে এখানে পেয়ে গেলাম আরেকটি বেড়িবাঁধের দেখা! ঈদে বেড়াতে আসা শত শত পর্যটক ভিড় জমিয়েছে এখানে। ঢেউগুলো যেই সরে যাচ্ছে, আবার আছড়ে পড়ছে বেড়িবাঁধের পাথুরে ব্লকগুলোয়। এ যেন এক টুকরো পতেঙ্গা।
নিকলী বেড়িবাঁধ
পরদিন ভৈরব হয়ে কুলিয়ারচর, বাজিতপুর ছাড়িয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে চলে এলাম নিকলী। আসার পুরোটা পথই ছায়া দিয়ে ঢেকে রেখেছে দুই পাশের সারি সারি গাছগুলো। বেশির ভাগ জমিই পাট আর কচুখেতের দখলে।
একসময় অটোরিকশা ছেড়ে রিকশা, তারপর গিয়ে উঠলাম নৌকায়। হঠাৎই নামল ঝুমবৃষ্টি। নৌকার ছইয়ের ভেতরেও আমরা তো ভিজছিই, পাশে মনের সুখে ভিজে বেড়াচ্ছে পাতিহাঁসগুলো।
দুপুরে তৃপ্তি ভরে খাবার খেলাম নদীর মাছ দিয়ে। একটু বিশ্রাম নিয়ে সন্ধ্যায় আবারও নৌকা। এবার আর নৌকার ভেতরে গুটিসুটি মেরে বসে থাকা নয়, বরং ছইয়ের ওপর শুয়ে শুয়ে আকাশের চাঁদ দেখতে দেখতে চলে গেলাম বন্ধুর বাড়ি। ভোরে উঠেই নদীর ঘাটে, রাতভর জালে ধরা মাছ নিয়ে হাজির মাঝির দল। বিস্ময়ে অবাক হই, কত বাহারি সেসব নদীর মাছ। পু্ঁটি, টেংরা থেকে শুরু করে কই, টাকি, গুলশা, বাইলা, চিংড়ি, বাইম মাছ—তাও হরেক রকমের।
গ্রামটাও ঘুরে দেখা হলো। দল বেঁধে নরসুন্দা নদীতে গোসল তো হলোই।
ফিরতি পথে একজনকে দেখলাম বড়শিতে শাণ দিতে—শুধুই বোয়াল মাছ ধরার জন্য এই বড়শি। নরসুন্দা নদী বেয়ে যাচ্ছি বেড়িবাঁধে।
ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টির সঙ্গে সন্ধ্যা নামতেই আমরা ফেরার পথ ধরলাম। পরদিন সকালে আবারও নদীর মাছ খেয়ে সঙ্গে ব্যাগভর্তি আমড়া নিয়ে ঢাকার দিকে মুখ করলাম।
যেভাবে যাবেন
এই সময়ে পানি আছে নিকলি বেড়িবাঁধে। তবে আর বেশি দিন থাকবে না। ঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনযোগে চলে আসুন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। সকালের নাশতা সেরে রেলস্টেশন থেকে জনপ্রতি ২০ টাকা ভাড়ায় পৌঁছে যাবেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া বেড়িবাঁধে। নিকলী যেতে প্রথমে আসুন ভৈরব বাসস্ট্যান্ডে। সেখান থেকে ১০০ টাকা অটোরিকশা ভাড়ায় চলে যাবেন নিকলী সদরে। দুপুরের খাবারটা সেরে নিতে পারেন বেড়িবাঁধের কাছের সেবা হোটেল থেকে। তবে নিকলীতে কোনো আবাসিক হোটেল নেই। রাতে থাকতে চাইলে যেতে পারেন কিশোরগঞ্জে। গাঙচিল, শ্রাবণী আর আল-মুসলিমের মতো উন্নত হোটেলগুলোতে থাকতে পারেন। ফিরতি পথে নিকলী নতুন বাজার থেকে নদীর টাটকা মাছ আর কেজিপ্রতি ২০ টাকায় আমড়া আনতে ভুলবেন না যেন!