Media news - প্রকৌশলী থেকে অভিনয়ে

তৌসিফ মাহবুব, ছবি: আনন্দ     
অভিনয়ে আমি একেবারেই নতুন। শিখতে শিখতে এগোচ্ছি। অনেক বই পড়ছি, ছবি দেখছি। বড় বড় অভিনেতার কাছ থেকে শেখার চেষ্টা করছি। এই জায়গায় নিজেকে প্রস্তুত না করলে এখান থেকে ছিটকে পড়ার আশঙ্কা অনেক বেশি।বললেন তৌসিফ মাহবুব। উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের একটি শুটিংবাড়িতে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
গত ৩১ জানুয়ারি দুপুরে শুটিং হাউসে ক্যামেরার সামনে তৌসিফ, অপর্ণা ঘোষ আর সাফা কবির। ইমরাউল রাফাতের রাব্বু ভাইয়ের বউ নাটকের দৃশ্য ধারণ হচ্ছে।
শট শেষে তৌসিফ বললেন, ‘চলুন, তাড়াতাড়ি কথা বলে ফেলি। আবার শট দেওয়ার জন্য ছুটতে হবে।
এখন টিভি নাটকে নতুন প্রজন্মের অনেকেই কাজ করছেন। তাঁদের মধ্যে তৌসিফ একটু এগিয়ে। ইদানীং তিনি ভীষণ ব্যস্ত। একাধিক এক ঘণ্টা আর ধারাবাহিক নাটকের কাজ করছেন।
তৌসিফ বললেন, ‘রাব্বু ভাইয়ের বউ ও ফ্যামিলি প্যাক নামে দুটি ধারাবাহিক টিভিতে দেখানো হচ্ছে। ফেব্রুয়ারি মােসই দোস্ত দুশমন ও ঝালমুড়ির প্রচার শুরু হবে। শুটিং চলছে দুটি মন দুটি আশা ধারাবাহিকের। সামনে থ্রিজি নামে নতুন আরেকটি ধারাবাহিকের শুটিং শুরু হবে।
ফেসবুক ও ইতিকথা, যাযাবর, নিউ রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট, কালো মেকাপ, একটি অসমাপ্ত কবিতার গল্প, ফর গিভ মি, তুমি মেয়েসহ এক ঘণ্টার ১৫টি নাটকের শুটিং এরই মধ্যে শেষ করেছেন।
নাটকে অভিনয়ের প্রথম সুযোগ হলো কীভাবে? তৌসিফ জানান, চাকরির পাশাপাশি আদনান আল রাজীবের কিছু বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করেছেন। ২০১৩ সালের ভালোবাসা দিবসের জন্য একই পরিচালকের অল টাইম দৌড়ের উপর নাটকে অভিনয়ের সুযোগ পান।
তৌসিফ বলেন, ‘অডিশন দেওয়ার দিন চারেক পর জানতে পারলাম কাজটি করার সুযোগ পাচ্ছি। এরপর যা বলা হলো, তাতে আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার অবস্থা। শুটিংয়ের জন্য ২০ দিন সময় লাগবে! তাহলে চাকরির কী হবে! অফিস থেকে ছুটি পাইনি। আমাকে বলা হলো, চাকরি ছেড়ে শুটিং করতে হবে। শেষে চাকরিটাই ছেড়ে দিয়েছি।
টিভির আগে নাটকটির প্রথম প্রদর্শনী হয় রাজধানীর ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবরে। তৌসিফ বলেন, ‘তখন তো আমি একেবারেই অপরিচিত। আমাকে কেউ মঞ্চে উঠতে দেননি। পরিচয় দেওয়ার পর আমাকে মঞ্চে উঠতে দেওয়া হলো। রবীন্দ্রসরোবরে নাটকটি দেখতে এসেছেন হাজার পাঁচেক দর্শক। শেষে এমন অবস্থা হলো, নাটকটি শেষ হওয়ার পর আমি আর ওখান থেকে বেরোতেই পারছিলাম না।
আর টিভিতে দেখানোর পর? তৌসিফ বললেন, ‘নাটকটি প্রচারের আগের দিন পর্যন্ত আমার ফেসবুকে ফলোয়ার ছিল মাত্র এক শ। রাতারাতি তা সাত হাজার ছাড়িয়ে যায়।
প্রথম নাটক প্রচারের পর প্রায় আট মাস আর কোনো কাজ করেননি তৌসিফ। কেন? তৌসিফ বললেন, ‘কাজের জন্য নাটকের মানুষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগটা বড় ব্যাপার। সবার সঙ্গে তো জানাশোনা ছিল না। মাঝের সময়টা আমার জন্য খুব খারাপ ছিল।
এরপর মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের প্যানাল্টি, আশফাক নিপুণের ল্যান্ডফোনের দিনগুলোতে প্রেম, মাবরুর রশীদ বান্নার ইট ক্যান হেপেন, মিনার ও অতঃপর আমরা নাটকে কাজ করেন তৌসিফ। এই নাটকগুলো তাঁর যাত্রা শুরুর পথে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে।
আর বিজ্ঞাপনচিত্র? টিভিতে তো তৌসিফের শুরুটা হয়েছিল ২০১২ সালে বিজ্ঞাপনচিত্র দিয়ে। ওই বছর ফেব্রুয়ারি মাসেস্পেলিং বিপ্রতিযোগিতার বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেল হন তিনি। এরপর অনেকগুলো কাজ করেছেন। তৌসিফ বলেন, ‘এখন নাটকের কাজই বেশি করছি।
তৌসিফের বাবার স্বপ্ন ছিল ছেলে বড় হয়ে প্রকৌশলী হবেন। বাবার স্বপ্ন পূরণ করেছেন তৌসিফ। আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেছেন তিনি। তৌসিফের ভাষায়, ‘প্রকৌশলী শব্দটি এখন কাগজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
তৌসিফের সব স্বপ্ন ছোট পর্দাকে ঘিরে। এখন একজন ভালো অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন তাঁর।

-

Latest

Popular Posts

Popular Posts

Popular Posts