‘আমি আমি আমি আমি আমি আমি আমি আমি এমনই আইটেম
খেলি খেলি খেলি খেলি খেলি খেলি খেলি খেলি খেলি প্রেমের গেম
সেই খেলায় আমি হারি না
আমি সুপার গ্লু সুপার গ্লু, লাগলে ছাড়ি না, আমি সুপার গ্লু সুপার গ্লু, ছুটতে পারি না!’
গানের কথা শুনেই আপনার বুঝে নেওয়া উচিত, হলে গিয়ে বিগ ব্রাদার না দেখে থাকলে বিরাট মিস করে ফেলেছেন! আমাদের দেশীয় চলচ্চিত্রের ভাষায়, একেই বোধ হয় ‘বাণিজ্যিক ছবি’ বলে। যাকে বলে আগাগোড়া বিনোদন। নায়িকা হাঁটবে কম উড়বে বেশি, নায়ক মাটি খুঁড়ে নামবে পানি ফুঁড়ে উঠবে—এটাই তো স্বাভাবিক! কার্যকারণ না খঁুজে কেবল আনন্দ খুঁজতেই ১৬ ফেব্রুয়ারি আনন্দ সিনেমা হলে বিগ ব্রাদার মাহীর সঙ্গে পরিচিত হই।
সেভেন স্টার গ্রুপের প্রধান, অপরাধ জগতের ‘কিং’ গোল্ডেন গুলজার (আহমেদ শরীফ), বিগ ব্রাদার তাঁর ডান হাত। মেয়েকে ছোটবেলা থেকে ছেলের মতো করেই বড় করেছে গুলজার। ‘বিগ ব্রাদার’ খেতাবের আড়ালে হারিয়ে গেছে মেয়ের আসল নাম, কাজল। ওদিকে কাজলকে পেতে আদাজল খেয়ে নেমেছে বেকার যুবক রানা (শিপন)। এত মেয়ে থাকতে সে পড়েছে বিগ ব্রাদারের প্রেমে! ব্লেড দিয়ে হাতে কাটাকুটি খেলেও বেচারা রানা কাজলের মন পায় না। রণেভঙ্গ দিয়ে অবশেষে নিজের পথ ধরে সে।
একসময় বড় বোনের ‘ইমোশনাল ডায়ালগে’ কুপোকাত হয়ে বিয়ে করবে বলে সিদ্ধান্ত নেয় বিগ ব্রাদার। কিন্তু তাঁকে বিয়ে করতে কোনো ছেলেই রাজি না। কেন? কারণটা শোনা যায় বিগ ব্রাদারের এক চ্যালা রতনের মুখে, ‘পুরুষ মানুষ তো মাইয়া মাইনষেরে বিয়া করতে চায়। আপনে তো ব্যাডা! বিগ ব্রাদার! আপনেরে যে বিয়ে করব, তারে সবাই ভাবি ডাকব...!’ বাধ্য হয়েই রানাকে তলব। কিন্তু তত দিনে, ঘটনাক্রমে বেকার রানা কোটিপতি বনে গেছে...
সংলাপে ‘হজম’ শব্দটা ঘুরেফিরে আসে বারবার। এ ওকে মেরে হজম করে ফেলে, ও এর টাকা হজম করে ফেলে! ছবির শুরুতেই মানসিকভাবে হজমি বড়ি খেয়ে নিয়েছি, তাই এত ‘হজম’ হজম করতে কষ্ট হয়নি। ছয়টা গান, পাঁচটা মারামারি, একটা আইটেম গান—ফর্মুলা যতই অনুসরণ করা হোক, গল্প ভালো না হলে দর্শক ধরে রাখা কঠিন। এই দিক থেকে সাফিউদ্দিন সাফি পরিচালিত ছবিটি ষোলো আনা সফল। শুধু সুপার গ্লু গান নয়, গল্পেও ‘এরপর কী হয়?’ আগ্রহের সুপার গ্লু দর্শককে আসন ছাড়তে দেয়নি। সুখবর হলো; আজকাল শুধু তামিল বা ভারতীয় বাংলা নয়, কোরিয়ান ছবি (মাই ওয়াইফ ইজ আ গ্যাংস্টার) থেকেও বাংলা সিনেমার গল্প ধার করা হচ্ছে!
ছবির গান আর কলাকুশলীদের অভিনয়টা কেমন হলো? ওই তো, ফর্মুলা অনুযায়ী ‘বাণিজ্যিক ছবি’র ক্ষেত্রে যেমন হওয়ার কথা, তেমনই। নবাগত নায়ক শিপন দেখলাম কিছুদিন আগে একটা সাক্ষাৎকারে বলেছেন, শিগগিরই অভিনয়ের ওপর কোর্স করতে তিনি মুম্বাই যাচ্ছেন। চমৎকার উদ্যোগ। তবে শুরুটা বোধ হয় ‘অ-তে অভিনয়’ থেকেই করতে হবে!