মমতার
নিজের আঁকা ছবির আয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আর তা নিয়ে এবার বিপাকে খোদ
তৃণমূল। গত লোকসভা নির্বাচনে কলকাতায় প্রচারে গিয়ে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী
পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদি নাম উল্লেখ না করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছিলেন, 'এক কোটি ৮০ লাখ টাকায় আপনার ছবি কে
কিনেছে দিদি?'
সম্প্রতি বিষয়টি আবার আলোচনায় এসেছে যখন তিনি দেশের
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে দিল্লিতে বৈঠক করেছেন। এই ছবি নিয়ে
তৃণমূল নেত্রীকে বিপাকে ফেলেছে প্রধানমন্ত্রীরই হাতে থাকা কেন্দ্রীয়
তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। কয়েকদিন আগেই বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মমতা দাবি
করেছিলেন, নিজের আঁকা ছবি বিক্রির টাকায় তিনি পার্টি চালান। সারদা কাণ্ডের
তদন্তে এবার তৃণমূলকে চিঠি দিয়ে ছবি বিক্রি বাবদ দলের আয়ের সবিস্তার হিসেব
তলব করেছে সিবিআই। ফলে গত বছরের মে মাসে সারদা তদন্ত শুরু করার পর এই
প্রথমবার সিবিআইয়ের নিশানায় চলে এলেন মমতা।
সিবিআইয়ের চিঠিতে শুধু
মুখ্যমন্ত্রীর আঁকা ছবিই নয়, তৃণমূলকে জানাতে বলা হয়েছে, ২০১০-১১ থেকে
২০১৩-১৪ পর্যন্ত ডোনেশন, বিজ্ঞাপন এবং দলীয় মুখপত্র 'জাগো বাংলা' বিক্রি
করে কত টাকা আয় হয়েছে। আজ মঙ্গলবারের মধ্যে সিবিআইয়ের সল্টলেকের দপ্তরে এই
সংক্রান্ত নথিপত্র পৌঁছে দিতে বলা হয়েছে। এদিকে সিবিআইয়ের এই চিঠিকে
কেন্দ্র করে মুকুল রায়ের সঙ্গে দলের দূরত্ব আরও বেড়েছে। তৃণমূল নেতৃত্বের
সন্দেহ, এর পেছনে রয়েছেন দলের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল।
সিবিআইয়ের
জিজ্ঞাসাবাদের জবাবে তিনিই পার্টি তহবিল সংক্রান্ত গোপন খবর ফাঁস করে
এসেছেন বলে মনে করছে দল। এ ব্যাপারে সিবিআইয়ের চিঠির বক্তব্যই তাদের সন্দেহ
বাড়িয়ে দিয়েছে। চিঠিতে সারদা রিয়েলটি মামলার উল্লেখ করে তৃণমূলের কাছে
তথ্য চাওয়া হয়েছে। ঘটনাচক্রে ওই মামলার সূত্রে মুকুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য
ডেকেছিল সিবিআই।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রী এ মাসের গোড়ার দিকে বিধানসভায়
দাবি করেন, ছবি বিক্রি বাবদ এক পয়সাও তিনি ব্যক্তিগতভাবে নেননি। পুরোটাই
দিয়েছেন দলীয় তহবিলে। নির্বাচন কমিশনের কাছে পেশ করা হিসাবেও মুখ্যমন্ত্রীর
এই দাবির সত্যতা রয়েছে। যেমন ২০১৩-১৪ আর্থিক বছরের হিসেবে তৃণমূল আয় বাবদ
ছবি বিক্রি থেকে দুই কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার আয় দেখানো হয়েছে। এর আগের
বছর এই খাতে আয় দেখানো হয়েছিল দুই কোটি ৫৩ লাখ টাকা। তবে ছবি বিক্রি বাবদ
২০১১-১২ আর্থিক বছরে সবচেয়ে বেশি আয় দেখানো হয়েছে।