টানা অবরোধ-হরতালের প্রথম দিকে পরিবহনসংকটের কারণে খনির
স্টোন ইয়ার্ডে জমা হয়ে গিয়েছিল ৩ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন পাথর।
পরিবহনসংকটের মুখে সরবরাহ কমে যাওয়ায় প্রতিদিন মজুত বেড়ে যাচ্ছিল। তবে
বর্তমানে পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসছে। এদিকে প্রতি জেলায়
পরিবেশক নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ জন্য তিন সদস্যের একটি
কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
পেট্রোবাংলার মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড
সূত্র জানায়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১ মার্চ পর্যন্ত তিন দিনে কমপক্ষে ১০
হাজার মেট্রিক টন পাথর সরবরাহ করা হয়েছে। অথচ তার আগের সপ্তাহে সরবরাহ
হয়েছিল ২ হাজার মেট্রিক টনের নিচে। তখন স্টোন ইয়ার্ডে পাথরের পাহাড় জমে
যাওয়ায় তিল ধারণের জায়গা ছিল না।
মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক (জিএম)
ফজলুর রহমান জানান, সারা দেশে ২১ জন পরিবেশক আছেন। এর বাইরে রেলওয়ে,
সড়কসহ সরকারি-বেসরকারি অবকাঠামো উন্নয়নে মধ্যপাড়ার পাথরের চাহিদা
বাড়ছে। তিনি বলেন, ‘সিমেন্ট কারখানাগুলোতেও যাচ্ছে আমাদের পাথরের গুঁড়া
(ডাস্ট)। সরকারিভাবে উন্নয়ন প্রকল্পে মধ্যপাড়ার পাথর ব্যবহারের নির্দেশনা
রয়েছে।’
এর কারণ হিসেবে ফজলুর রহমান বলেন, মধ্যপাড়া খনির পাথরের
গুণগত মান বিশ্বসেরা। বুয়েট, সিঙ্গাপুরভিত্তিক অ্যাডমেরিয়াল ও
ইংল্যান্ডের কিউইউডির ল্যাবে এর মান যাচাই করা হয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর
দেওয়া সনদে বলা হয়েছে, মধ্যপাড়ার পাথর ভারতের পাকুর গ্রেডের চেয়েও
উন্নত মানের। অর্থাৎ বিশ্বমানের।
বর্তমানে খনি উন্নয়নে কাজ করছে জার্মানিয়া ট্রেস্ট
কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) নামের একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৩ সাল থেকে
খনিমুখ উন্নয়ন করে পাথর উৎপাদন চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে প্রতিদিন ৩ হাজার
৫০০ মেট্রিক টন পাথর উৎপাদিত হচ্ছে এই খনি থেকে।
কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী আবুল বাশার
বলেন, ‘পাথর বিক্রি বাড়াতে আমরা দেশের প্রতিটি জেলায় পরিবেশক নিয়োগের
উদ্যোগ নিয়েছি।’ দেশের সব স্থাপনায় মধ্যপাড়ার পাথর ব্যবহারে সংশ্লিষ্ট
ব্যক্তিরা এগিয়ে আসবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।