সারাদেশের
কারাগারে বর্তমানে তিল ধারণেরও উপায় নেই। দেশের ৬৮টি কারাগারে বন্দী
ধারণক্ষমতা সাড়ে ৩৪ হাজার। অথচ সেখানে প্রতিদিন গড়ে বন্দী থাকছে ৭৫ থেকে ৭৬
হাজার। অর্থাত্ প্রতিদিন দ্বিগুণ বন্দী থাকছে কারাগারে। কারা অধিদফতর
সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার সবকয়টি কারাগারে মোট বন্দী ছিল প্রায় ৭৬
হাজার।
কারা অধিদফতর এবং বিভিন্ন কারাগার সূত্রে জানা যায়, ২০০১ সালে বিএনপিসহ চার দলীয় জোট ক্ষমতা গ্রহণের পর শুরু হয় দেশব্যাপী গণগ্রেফতার। ঐসময় ৬৬টি কারাগারে বন্দী ধারণক্ষমতা ছিল ২৫,০১৮। তখন গড়ে প্রতিদিন বন্দী থাকতো ৭৫ হাজারেরও বেশি। ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল বিএনপি সরকার পতনের ডেডলাইন ঘোষণা করে বলেন তার হাতে “ট্রাম্পকার্ড” আছে। এর পরপরই রাজধানীসহ দেশব্যাপী শুরু হয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী গ্রেফতার। ঐসময় ৬৬টি কারাগারে ধারণক্ষমতা ছিল ২৫,৩৯৬ জন। প্রতিদিন গড়ে বন্দী থাকতো ৮৫ হাজারেরও বেশি। ২০০৬ সালে বিএনপির শাসনামলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান কে হবেন এ ইস্যুতে আওয়ামী লীগ ও এর সমমনা দলগুলো দেশব্যাপী তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলে। পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী চালায় গণগ্রেফতার। সেই সময় ৬৬টি কারাগারের প্রতিদিন গড়ে বন্দী ছিল ৯০ হাজার।
চলতি বছর বিএনপিসহ ২০ দলের টানা অবরোধ এবং সপ্তাহে ৫ দিন হরতালে নাশকতা প্রতিরোধে চলছে গণগ্রেফতার। গতকাল ছিল অবরোধের ৭৫তম দিন। বর্তমানে ৬৮টি কারাগারে বন্দী ধারণক্ষমতা সাড়ে ৩৪ হাজার। সেখানে প্রতিদিন বন্দী থাকছে ৭৫ হাজার।
৭টি কারাগার কর্তৃপক্ষ বলেন, ধারণক্ষমতার দ্বিগুণের বেশি বন্দী হওয়ায় থাকা, টয়লেট ও গোসল নিয়ে কি যে অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে বন্দীরা, এই চিত্র যেকোন বিবেকবান মানুষ একনজর দেখলে চোখের পানি ধরে রাখতে পারবেন না। জেল কোড অনুযায়ী বন্দীদের ব্যয়ভার বহন করা হয়ে থাকে। খাওয়ার কোন সমস্যা হয় না। গাদাগাদি করে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকতে হয় বলে বন্দীরা নানা রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। এমন অনেক বন্দী আছে যারা জানে না কি অপরাধে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ধরনের বন্দী চরম দুর্বিষহ অবস্থায় থাকতে থাকতে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। এমন তথ্য জানান ঐসব কারা কর্তৃপক্ষ। তাদের মতে, নিরপরাধ মানুষ গ্রেফতারে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর আরও সতর্ক হওয়া উচিত।
সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী দলের আন্দোলন এবং নাশকতা প্রতিরোধে সারাদেশে বর্তমানে কঠোর অবস্থানে রয়েছে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। নাশকতাকারীদের গ্রেফতারের পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর একশ্রেণির কর্মকর্তা গ্রেফতার বাণিজ্য চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। চাহিদামত ঘুষ না দিলে থানায় ইতিপূর্বে দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হবে বলে হুমকি দেয়া হয় গ্রেফতারকৃতদের। যারা টাকা দিতে পারেন তাদের মুক্তি মেলে। যারা দিতে পারেন না কারাগারে স্থান হয় তাদের। তবে শুধু এই সরকারের আমলেই এধরনের গ্রেফতার বাণিজ্য হচ্ছে তা নয়। প্রতিটি সরকারের আমলেই গ্রেফতারের নামে বাণিজ্য হয়েছে।
একশ্রেণির পুলিশ কর্মকর্তা দলীয় পরিচয়ে গ্রেফতারের নামে দুই হাতে ঘুষ বাণিজ্য করে আসছেন। ঐসকল পুলিশ কর্মকর্তা শুধু দলীয় নেতার মত আচরণই করেন না, মোটা অংকের উেকাচ দিয়ে রাজধানী ও ঢাকার বাইরে ভাল জায়গায় বদলি হন। তাদের কাছে ভাল জায়গা মানে যে থানায় বেশি ঘুষ বাণিজ্য করা যায় সেটাই। তবে শুধু ঘুষ দিয়েই এসব থানায় বদলি হওয়া যায় না। পিছনে প্রভাবশালী নেতা থাকতে হয়। এজন্য কোন কোন নেতা প্রতিমাসে থানা থেকে মাসোহারা পেয়ে থাকেন। ঐসকল দলীয় লেজুড়ভিত্তিক পুলিশ কর্মকর্তাকে বলা হয় ওয়ান টাইম অফিসার। সরকার যতদিন ক্ষমতায় তাদের চাকরিও ততদিন। এসময় কয়েকশ’ কোটি টাকা কামিয়ে কিংবা বিপুল সম্পদের মালিক হন ওই পুলিশ কর্মকর্তারা। সরকারের মেয়াদ শেষে তারা চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে যান আত্মগোপনে, কেউ স্বেচ্ছা অবসরে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা এর সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, থানায় এ ধরনের ওয়ান টাইম কর্মকর্তাদের এখন দাপট। তারা নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা করে না।
বিরোধী দলীয় রাজনীতি করলেই যে সবাই বোমাবাজি কিংবা নাশকতার সঙ্গে জড়িত তা নয়। অনেক নেতাকর্মী রয়েছেন তারা শুধুই রাজনীতি করেন। নাশকতা, ভাংচুর ও বোমা মেরে মানুষ হত্যাকে ঘৃণা করেন। এ ধরনের নেতা-কর্মীরাও গণগ্রেফতারের শিকার হন।
নাশকতাকারী,
অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও পেট্রোল বোমা নিক্ষেপকারী বেশিরভাগই এগুলো ঘটিয়ে চলে
যান আত্মগোপনে। জঘন্য অপরাধীদের চেয়ে গণগ্রেফতারের শিকার হন নিরীহ সাধারণ
মানুষ। বিগত সরকারের আমলেও এক চিত্র ছিল। রাজধানীর তিনটি থানার ওসির
বিরুদ্ধে সর্বাধিক গ্রেফতার বাণিজ্যের অভিযোগ। এদের মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে
হত্যাসহ ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ সবচেয়ে বেশি। এ পুলিশ (ওসি) কর্মকর্তার
পুলিশ না হয়ে ডাকাত হওয়া উচিত বলে শীর্ষ কর্মকর্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সরকারের ভাবমূর্তি এ ধরনের পুলিশ কর্মকর্তারা ক্ষুণ্ন করছে। শীর্ষ
কর্মকর্তারা ভয়ে তাকে কিছু বলতে নারাজ। এমন তথ্য জানান এক কর্মকর্তা। তার
বিরুদ্ধে যে পুলিশ কর্মকর্তা কথা বলে তাকে রাজাকার বানিয়ে নাস্তানাবুদ করে
কারা অধিদফতর এবং বিভিন্ন কারাগার সূত্রে জানা যায়, ২০০১ সালে বিএনপিসহ চার দলীয় জোট ক্ষমতা গ্রহণের পর শুরু হয় দেশব্যাপী গণগ্রেফতার। ঐসময় ৬৬টি কারাগারে বন্দী ধারণক্ষমতা ছিল ২৫,০১৮। তখন গড়ে প্রতিদিন বন্দী থাকতো ৭৫ হাজারেরও বেশি। ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল বিএনপি সরকার পতনের ডেডলাইন ঘোষণা করে বলেন তার হাতে “ট্রাম্পকার্ড” আছে। এর পরপরই রাজধানীসহ দেশব্যাপী শুরু হয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী গ্রেফতার। ঐসময় ৬৬টি কারাগারে ধারণক্ষমতা ছিল ২৫,৩৯৬ জন। প্রতিদিন গড়ে বন্দী থাকতো ৮৫ হাজারেরও বেশি। ২০০৬ সালে বিএনপির শাসনামলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান কে হবেন এ ইস্যুতে আওয়ামী লীগ ও এর সমমনা দলগুলো দেশব্যাপী তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলে। পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী চালায় গণগ্রেফতার। সেই সময় ৬৬টি কারাগারের প্রতিদিন গড়ে বন্দী ছিল ৯০ হাজার।
চলতি বছর বিএনপিসহ ২০ দলের টানা অবরোধ এবং সপ্তাহে ৫ দিন হরতালে নাশকতা প্রতিরোধে চলছে গণগ্রেফতার। গতকাল ছিল অবরোধের ৭৫তম দিন। বর্তমানে ৬৮টি কারাগারে বন্দী ধারণক্ষমতা সাড়ে ৩৪ হাজার। সেখানে প্রতিদিন বন্দী থাকছে ৭৫ হাজার।
৭টি কারাগার কর্তৃপক্ষ বলেন, ধারণক্ষমতার দ্বিগুণের বেশি বন্দী হওয়ায় থাকা, টয়লেট ও গোসল নিয়ে কি যে অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে বন্দীরা, এই চিত্র যেকোন বিবেকবান মানুষ একনজর দেখলে চোখের পানি ধরে রাখতে পারবেন না। জেল কোড অনুযায়ী বন্দীদের ব্যয়ভার বহন করা হয়ে থাকে। খাওয়ার কোন সমস্যা হয় না। গাদাগাদি করে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকতে হয় বলে বন্দীরা নানা রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। এমন অনেক বন্দী আছে যারা জানে না কি অপরাধে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ধরনের বন্দী চরম দুর্বিষহ অবস্থায় থাকতে থাকতে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। এমন তথ্য জানান ঐসব কারা কর্তৃপক্ষ। তাদের মতে, নিরপরাধ মানুষ গ্রেফতারে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর আরও সতর্ক হওয়া উচিত।
সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী দলের আন্দোলন এবং নাশকতা প্রতিরোধে সারাদেশে বর্তমানে কঠোর অবস্থানে রয়েছে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। নাশকতাকারীদের গ্রেফতারের পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর একশ্রেণির কর্মকর্তা গ্রেফতার বাণিজ্য চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। চাহিদামত ঘুষ না দিলে থানায় ইতিপূর্বে দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হবে বলে হুমকি দেয়া হয় গ্রেফতারকৃতদের। যারা টাকা দিতে পারেন তাদের মুক্তি মেলে। যারা দিতে পারেন না কারাগারে স্থান হয় তাদের। তবে শুধু এই সরকারের আমলেই এধরনের গ্রেফতার বাণিজ্য হচ্ছে তা নয়। প্রতিটি সরকারের আমলেই গ্রেফতারের নামে বাণিজ্য হয়েছে।
একশ্রেণির পুলিশ কর্মকর্তা দলীয় পরিচয়ে গ্রেফতারের নামে দুই হাতে ঘুষ বাণিজ্য করে আসছেন। ঐসকল পুলিশ কর্মকর্তা শুধু দলীয় নেতার মত আচরণই করেন না, মোটা অংকের উেকাচ দিয়ে রাজধানী ও ঢাকার বাইরে ভাল জায়গায় বদলি হন। তাদের কাছে ভাল জায়গা মানে যে থানায় বেশি ঘুষ বাণিজ্য করা যায় সেটাই। তবে শুধু ঘুষ দিয়েই এসব থানায় বদলি হওয়া যায় না। পিছনে প্রভাবশালী নেতা থাকতে হয়। এজন্য কোন কোন নেতা প্রতিমাসে থানা থেকে মাসোহারা পেয়ে থাকেন। ঐসকল দলীয় লেজুড়ভিত্তিক পুলিশ কর্মকর্তাকে বলা হয় ওয়ান টাইম অফিসার। সরকার যতদিন ক্ষমতায় তাদের চাকরিও ততদিন। এসময় কয়েকশ’ কোটি টাকা কামিয়ে কিংবা বিপুল সম্পদের মালিক হন ওই পুলিশ কর্মকর্তারা। সরকারের মেয়াদ শেষে তারা চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে যান আত্মগোপনে, কেউ স্বেচ্ছা অবসরে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা এর সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, থানায় এ ধরনের ওয়ান টাইম কর্মকর্তাদের এখন দাপট। তারা নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা করে না।
বিরোধী দলীয় রাজনীতি করলেই যে সবাই বোমাবাজি কিংবা নাশকতার সঙ্গে জড়িত তা নয়। অনেক নেতাকর্মী রয়েছেন তারা শুধুই রাজনীতি করেন। নাশকতা, ভাংচুর ও বোমা মেরে মানুষ হত্যাকে ঘৃণা করেন। এ ধরনের নেতা-কর্মীরাও গণগ্রেফতারের শিকার হন।