Environmental news - ১০ গ্রামে জলাবদ্ধতার শঙ্কা

Image result for ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর picture

     ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার উলুকান্দিতে বালু ফেলে খাল ভরাট করছেন স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি। এতে ওই এলাকার কয়েক হাজার একর কৃষিজমিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতা তৈরি ও নৌপথ বন্ধ হওয়ার শঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ৪৫-৫০ বছর আগে উপজেলার উত্তর সীমান্তবর্তী উলুকান্দিসংলগ্ন মেঘনা নদী থেকে একটি খালের সৃষ্টি হয়। মেঘনা নদী থেকে দক্ষিণ দিকে এ খালটি প্রবাহিত হয়েছে। খালটি হিজলাকান্দি বিল ও তা থেকে আরও দক্ষিণে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে পাহাড়িয়াকান্দির চন্দন বিল হয়ে সাত-আট কিলোমিটার দূরে জীবনগঞ্জ বাজারসংলগ্ন তিতাস নদীতে গিয়ে মিলেছে। এসব এলাকার কয়েক হাজার একর কৃষিজমিতে বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি প্রবাহিত হয়। অন্তত ১০টি গ্রামের কয়েক শ জেলে বর্ষা মৌসুমে নৌকায় করে ওই খাল দিয়ে মেঘনা নদীতে গিয়ে মাছ শিকার করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, উলুকান্দি গ্রামের ইব্রাহিম মিয়া, মজিবুর রহমান, সজিবুর রহমান, জব্বার আলী, মোহন মিয়াসহ নয়জন খালের অন্তত ৪৮ শতক জায়গায় বালু ফেলে ভরাট করছেন। গত মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে বালু ফেলে এ খাল ভরাট করা হচ্ছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, খালের উৎপত্তিস্থল মেঘনা নদী থেকে প্রায় ৩০০ মিটার দক্ষিণে বালু ফেলার কাজ চলছে। এতে খালের অন্তত ৫০০ ফুট দৈর্ঘ্যের জায়গায় বালু ভরাট করা হচ্ছে। খালে বালু ফেলে জমিসমান উঁচু করায় পানি দক্ষিণ দিকে আটকে গেছে।
উলুকান্দি গ্রামের কৃষক মজিবুর রহমান বলেন, ‘এই খাল ভরাট অইয়া গেলে উপরের জমিতে পানি জইমা থাকবে, সারা বছর আর ফসল করন যাইব না। স্থানীয় জেলেরাও মাছ ধরতে পারবে না।’
এ ব্যাপারে খাল ভরাটকারী ইব্রাহিম মিয়া বলেন, ‘খালের মধ্যে আমার সাত শতক জায়গা রয়েছে। ছেলেরা বড় হওয়ায় বাড়িতে জায়গা কইমা গেছে। হের লাইগগা খালে বালু দিয়া ভইরা বাড়ি বানাইতাছি।’ খাল ভরাটকারী জব্বার আলীর স্ত্রী ময়না বেগম বলেন, ‘আমরা বাড়ি বানানোর লাইগা খালের পাঁচ-ছয় শতক জায়গা ভরাট করতাছি। এই জায়গার দলিল আমাগোর নামে আছে, হের লাগি ভইরা ফালাইতাছি। এই জায়গায় বালু ফালাইতে আমাগোর ২৮ হাজার টাকা খরচ অইছে।’ একই গ্রামের সজিবুর রহমানের স্ত্রী আঞ্জুমান আরা বলেন, ‘খালে আমাগোর ১০ শতক জায়গা আছে। এই জায়গা খেতের সমান কইরা ভরতে ৫৬ হাজার টেকা খরচ অইব।’
পাহাড়িয়াকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল গনি তালুকদার জানান, খাল ভরাট করা হলে অন্তত ১০টি গ্রামের কৃষিজমি এবং হিজলাকান্দি বিল ও পাহাড়িয়াকান্দির চন্দন বিলে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে। এ ছাড়া এ খাল ভরাট করা হলে নৌপথও বন্ধ হয়ে যাবে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মামুন সরদার জানান, খাল ব্যক্তিগত জায়গায় হলেও ভরাট করা যাবে না। খাল দিয়ে পানিপ্রবাহে বিঘ্ন হতে পারে, এমন কিছুই করা যাবে না। খাল ভরাট বন্ধ করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ভূমি কর্মকর্তার প্রতিবেদন পেয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
-

Latest

Popular Posts

Popular Posts

Popular Posts