Traveller news - খইয়াছড়ার পথে

খইয়াছড়ার সাদা পানির তীব্র ধারা এ মৌসুমে হয়তো একটু ক্ষীণ। ছবি: লেখক


     

টানা ২০-২৫ মিনিট হাঁটার পর আশপাশে সবকিছু একটু পরিষ্কার হতে লাগল। পাহাড়ের সবুজ বেষ্টনী ভেদ করে সকালের আলো উঁকি দিয়েছে। জোনাকির ডাক বন্ধ হয়েছে, তার স্থান দখল করে নিয়েছে পাখির কিচিরমিচির। একটু যেতেই থমকে দাঁড়ালাম দুজন। গাছপালার ফাঁক দিয়ে দেখা যাচ্ছে ৩০-৩৫ ফুট উঁচু থেকে গড়িয়ে পড়া জলরাশি। তাড়াতাড়ি পা চালিয়ে সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই মুখের ভাষা হারিয়ে গেল। এমন ঝরনাও তবে আছে! লোকালয়ের এত কাছেই! বিস্ময় কাটতেই শুরু হলো ছবি তোলা। দুজন অন্য সবকিছু ভুলে পাল্লা দিয়ে ছবি তুলেছি। কখন যে ঘণ্টা দুয়েক সময় চলে গেছে, টেরও পাইনি।
একসময় রোদ এসে পড়ল ঝরনার ছিটকে পড়া জলের ওপর। দেখে মনে হয়, অসংখ্য হীরা শব্দ করে গড়িয়ে পড়ছে নিচের দিকে। এরপর আর একটু ওপরে উঠলে স্তরে স্তরে সাজানো তিনটি ছোট ঝরনার দেখা মেলে। আর জল পড়ার শব্দও যে কত বিচিত্র হতে পারে, তা এখানে না এলে জানা হতো না। কোথাও ছলছল, কোথাও কলকল, ঝিমঝিম, ফুটফুট, ফটফট কত অদ্ভুত শব্দেই যে তাকে অনুবাদ কারা যায়!
 যাওয়ার সময় যেসব আমাদের চোখে পড়েনি, ফিরতি পথে ভোরের আলোয় তা দেখে অবাক হতে হলো। পাহাড়ের গায়ে নানা ঝোপে ফুটে আছে রং-বেরঙের ফুল। তার চারপাশে প্রজাপতির দল। পাহাড়ের বাধা পেরিয়ে ক্ষণে ক্ষণে উঁকি দেওয়া সূর্যের আলোতে ছোটাছুটি করছিল কাঠবিড়ালিরা।
ছোট একটা দোকানে রুটি-সবজি আর কলা দিয়ে তৃপ্তি করে নাশতা সারা গেল। সকাল ১০টার মধ্যেই আমরা ফিরলাম বাজারে। হাতে অনেক সময় আছে। কোথায় যাওয়া যায়! ফোনে পলাশ মাহবুব জানালেন এখানে মহামায়া লেক ও মুহুরি সেচ প্রকল্পের কথা। আর দেরি না করে রওনা হলাম মহামায়ার দিকে। সেখানে পৌঁছানোর পর ইঞ্জিনচালিত নৌকাযোগে ঘুরলাম লেকের বিভিন্ন জায়গায়। এখানেও পাহাড়ের গায়ে ছোট-বড় বেশ কয়েকটি ঝরনার দেখা পাওয়া গেল। লেকের পানিতে শত শত পানকৌড়ির মাছ শিকার, সুড়ঙ্গ পথ দিয়ে নৌকা চলে যাওয়ার দৃশ্য সব মিলে যেন একটি ছবি।

যেভাবে যাবেন
বাসযোগে মিরসরাই নেমে সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে খইয়াছড়ায় যেতে হবে। এরপর চার থেকে পাঁচ মাইল হেঁটে ঝরনায় পৌঁছাতে হয়। আবার ওই স্থান থেকে অটোরিকশাযোগে মহামায়া লেক ও মুহুরি সেচ প্রকল্পে যাওয়া যায়। শীতের এই সময়টাতেও ঝরনায় পানি আছে। এ সময় রাস্তাও ভালো থাকে।
-

Latest

Popular Posts

Popular Posts

Popular Posts