একদিকে এককাট্টা গোটা বিরোধী শিবির। এরই
সঙ্গে রাজধানীতে উপস্থিত প্রবীণ গান্ধীবাদী সমাজকর্মী আন্না হাজারে। দুই
পক্ষেরই লক্ষ্য এক, জমি অধিগ্রহণ অধ্যাদেশের আপত্তিকর ধারা বাতিলে সরকারকে
বাধ্য করা। এই সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে পড়ে হাঁসফাঁস করছে ভারতের নরেন্দ্র
মোদি সরকার। সংসদের বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিন অধ্যাদেশ পেশ এবং
রাষ্ট্রপতির ভাষণে জমিহারাদের স্বার্থ রক্ষার কথা বলা হলেও বিরোধীদের ‘রণং
দেহী’ ভূমিকায় পরিষ্কার—এই অধ্যাদেশ মোদি সরকারের গলার কাঁটা হয়ে
দাঁড়িয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের পর ১৮৯৪ সালের জমি অধিগ্রহণ আইনের যৌক্তিকতা নিয়ে সারা দেশেই প্রশ্ন ওঠে। দেশব্যাপী বিতর্কের পর কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার ২০১৩ সালে শতাব্দীপ্রাচীন জমি অধিগ্রহণ বিধিবিধান বদলে নতুন আইন প্রণয়ন করে। সরকারের সেই প্রচেষ্টায় বিজেপিও শামিল হয়েছিল। কিন্তু ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটে ক্ষমতায় এসে বিজেপি সেই আইনে সংশোধন আনতে উঠেপড়ে লাগে ‘শিল্প-বিকাশের তাগিদে’। সরকারি যুক্তি ছিল, নতুন আইনেও জমি অধিগ্রহণ কঠিন। এর ফলে শিল্পের বিকাশ আটকে রয়েছে। সরকারি হিসাবে রেল, ইস্পাত, খনি ও সড়ক খাতে আটকে থাকা লগ্নির পরিমাণ প্রায় ২০ লাখ কোটি রুপি। এই অচলাবস্থা কাটাতে ‘শিল্পবন্ধু’ প্রধানমন্ত্রী মোদি কংগ্রেসি আইনে থাকা সম্মতি ধারা একেবারেই তুলে দিচ্ছেন। সে লক্ষ্যেই এই নতুন আইনের উদ্যোগ।
ইউপিএ সরকারের করা আইনে বলা হয়েছিল, ‘জনস্বার্থে’ কৃষিজমি নিতে গেলে এলাকার ৭০ শতাংশ জমি মালিকের সম্মতি প্রয়োজন হবে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিপি) ক্ষেত্রে প্রয়োজন ৮০ শতাংশের সম্মতি। বিজেপির আনা অধ্যাদেশে জনস্বার্থের সংজ্ঞার ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটিয়ে আগের আইনের সম্মতির ধারাটি তুলে নেওয়া হয়। বিরোধীকুল এবং আন্না হাজারের আপত্তি এখানেই। তাঁরা মনে করছেন, শিল্পের বিকাশের জন্য কৃষিজমি ও কৃষকদের স্বার্থ সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা হয়েছে। এই অধ্যাদেশ পাস হলে দেশের সর্বনাশ। কংগ্রেস, বাম, তৃণমূল কংগ্রেস, জনতা দল (সংযুক্ত), ডিএমকে, এসপি, বিএসপি, এনসিপিসহ প্রায় সবাই একজোটে এই অধ্যাদেশের বিরোধিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকারের শরিক শিরোমণি অকালি দলও পর্যন্ত এর বিরোধী। সবচেয়ে বড় কথা, সরকারের এই ভূমিকার ঘোর বিরোধিতায় নেমেছে আদর্শিক মিত্র রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘও (আরএসএস)। তারা প্রকাশ্যেই বলেছে, কৃষি ও কৃষকের স্বার্থে অধ্যাদেশ সমর্থন করা যায় না।
লোকসভায় সরকারের কোনো বিপদ নেই। বিরোধীদের তোয়াক্কা না করেই লোকসভায় এই অধ্যাদেশ সরকার পাস করিয়ে নিতে পারে। কিন্তু বিপদ রাজ্যসভায়। এই মুহূর্তে রাজ্যসভায় শাসকগোষ্ঠীর মোট সদস্য সংখ্যা ৬০। তুলনায় বিরোধীদের মোট সংখ্যা অনেক বেশি—১৭০। অর্থাৎ রাজ্যসভায় পরাজয় অবশ্যম্ভাবী। এই অবস্থায় মোদি সরকারের চিন্তা আরও বাড়িয়েছেন আন্না হাজারে। গতকাল সোমবার থেকে ‘কৃষক স্বার্থে’ এই অধ্যাদেশ রুখতে দিল্লির যন্তর মন্তরে ধরনায় বসেছেন আন্না হাজারে। তাঁকে সমর্থন জানাচ্ছে দিল্লির আম আদমি সরকারও। গতকাল সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল আন্না হাজারের সঙ্গে দেখাও করেন।
এই সম্মিলিত বিরোধিতার মুখে বিজেপি সরকার ঠিক কী করবে তা এখনো অনিশ্চিত। গতকাল সংসদের বাজেট অধিবেশন প্রথামাফিক রাষ্ট্রপতির ভাষণ দিয়ে শুরু হয়। সেই ভাষণে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি বলেন, কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় তাঁর সরকার বদ্ধপরিকর। কিন্তু তাতে বিরোধী দলগুলোর মন ভেজেনি। এই অধ্যাদেশকে ভোটে হারাতে তাঁরা মরিয়া।
ভারতের সংবিধান অনুযায়ী যেকোনো অধ্যাদেশের মেয়াদ ছয় মাস। অর্থাৎ, ছয় মাসের মধ্যে তা সংসদ বা বিধানসভায় পাস করতে হয়। কিন্তু অধ্যাদেশ জারির পর সংসদ বা বিধানসভার অধিবেশন ডাকা হলে ছয় সপ্তাহের মধ্যে তা পাস করানো বাধ্যতামূলক। অর্থাৎ, এই বাজেট অধিবেশনে নতুন অধ্যাদেশ পাস না হলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে সেটা হবে এক বড় ধাক্কা। এই বছরের অক্টোবরে বিহার বিধানসভার ভোট। সেখানেও বিরোধীরা এই প্রশ্নে একজোট। কী করবে বিজেপি ও মোদি সরকার?
পশ্চিমবঙ্গের সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের পর ১৮৯৪ সালের জমি অধিগ্রহণ আইনের যৌক্তিকতা নিয়ে সারা দেশেই প্রশ্ন ওঠে। দেশব্যাপী বিতর্কের পর কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার ২০১৩ সালে শতাব্দীপ্রাচীন জমি অধিগ্রহণ বিধিবিধান বদলে নতুন আইন প্রণয়ন করে। সরকারের সেই প্রচেষ্টায় বিজেপিও শামিল হয়েছিল। কিন্তু ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটে ক্ষমতায় এসে বিজেপি সেই আইনে সংশোধন আনতে উঠেপড়ে লাগে ‘শিল্প-বিকাশের তাগিদে’। সরকারি যুক্তি ছিল, নতুন আইনেও জমি অধিগ্রহণ কঠিন। এর ফলে শিল্পের বিকাশ আটকে রয়েছে। সরকারি হিসাবে রেল, ইস্পাত, খনি ও সড়ক খাতে আটকে থাকা লগ্নির পরিমাণ প্রায় ২০ লাখ কোটি রুপি। এই অচলাবস্থা কাটাতে ‘শিল্পবন্ধু’ প্রধানমন্ত্রী মোদি কংগ্রেসি আইনে থাকা সম্মতি ধারা একেবারেই তুলে দিচ্ছেন। সে লক্ষ্যেই এই নতুন আইনের উদ্যোগ।
ইউপিএ সরকারের করা আইনে বলা হয়েছিল, ‘জনস্বার্থে’ কৃষিজমি নিতে গেলে এলাকার ৭০ শতাংশ জমি মালিকের সম্মতি প্রয়োজন হবে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিপি) ক্ষেত্রে প্রয়োজন ৮০ শতাংশের সম্মতি। বিজেপির আনা অধ্যাদেশে জনস্বার্থের সংজ্ঞার ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটিয়ে আগের আইনের সম্মতির ধারাটি তুলে নেওয়া হয়। বিরোধীকুল এবং আন্না হাজারের আপত্তি এখানেই। তাঁরা মনে করছেন, শিল্পের বিকাশের জন্য কৃষিজমি ও কৃষকদের স্বার্থ সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা হয়েছে। এই অধ্যাদেশ পাস হলে দেশের সর্বনাশ। কংগ্রেস, বাম, তৃণমূল কংগ্রেস, জনতা দল (সংযুক্ত), ডিএমকে, এসপি, বিএসপি, এনসিপিসহ প্রায় সবাই একজোটে এই অধ্যাদেশের বিরোধিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকারের শরিক শিরোমণি অকালি দলও পর্যন্ত এর বিরোধী। সবচেয়ে বড় কথা, সরকারের এই ভূমিকার ঘোর বিরোধিতায় নেমেছে আদর্শিক মিত্র রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘও (আরএসএস)। তারা প্রকাশ্যেই বলেছে, কৃষি ও কৃষকের স্বার্থে অধ্যাদেশ সমর্থন করা যায় না।
লোকসভায় সরকারের কোনো বিপদ নেই। বিরোধীদের তোয়াক্কা না করেই লোকসভায় এই অধ্যাদেশ সরকার পাস করিয়ে নিতে পারে। কিন্তু বিপদ রাজ্যসভায়। এই মুহূর্তে রাজ্যসভায় শাসকগোষ্ঠীর মোট সদস্য সংখ্যা ৬০। তুলনায় বিরোধীদের মোট সংখ্যা অনেক বেশি—১৭০। অর্থাৎ রাজ্যসভায় পরাজয় অবশ্যম্ভাবী। এই অবস্থায় মোদি সরকারের চিন্তা আরও বাড়িয়েছেন আন্না হাজারে। গতকাল সোমবার থেকে ‘কৃষক স্বার্থে’ এই অধ্যাদেশ রুখতে দিল্লির যন্তর মন্তরে ধরনায় বসেছেন আন্না হাজারে। তাঁকে সমর্থন জানাচ্ছে দিল্লির আম আদমি সরকারও। গতকাল সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল আন্না হাজারের সঙ্গে দেখাও করেন।
এই সম্মিলিত বিরোধিতার মুখে বিজেপি সরকার ঠিক কী করবে তা এখনো অনিশ্চিত। গতকাল সংসদের বাজেট অধিবেশন প্রথামাফিক রাষ্ট্রপতির ভাষণ দিয়ে শুরু হয়। সেই ভাষণে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি বলেন, কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় তাঁর সরকার বদ্ধপরিকর। কিন্তু তাতে বিরোধী দলগুলোর মন ভেজেনি। এই অধ্যাদেশকে ভোটে হারাতে তাঁরা মরিয়া।
ভারতের সংবিধান অনুযায়ী যেকোনো অধ্যাদেশের মেয়াদ ছয় মাস। অর্থাৎ, ছয় মাসের মধ্যে তা সংসদ বা বিধানসভায় পাস করতে হয়। কিন্তু অধ্যাদেশ জারির পর সংসদ বা বিধানসভার অধিবেশন ডাকা হলে ছয় সপ্তাহের মধ্যে তা পাস করানো বাধ্যতামূলক। অর্থাৎ, এই বাজেট অধিবেশনে নতুন অধ্যাদেশ পাস না হলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে সেটা হবে এক বড় ধাক্কা। এই বছরের অক্টোবরে বিহার বিধানসভার ভোট। সেখানেও বিরোধীরা এই প্রশ্নে একজোট। কী করবে বিজেপি ও মোদি সরকার?