বসন্তকালের
ব্যাপ্তি প্রতিবছর প্রায় ৩০ সেকেন্ড থেকে এক মিনিট করে কমছে। মহাজাগতিক
কারণেই এমনটা ঘটছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের একদল জ্যোতির্বিদ। উত্তর
গোলার্ধে কয়েক হাজার বছর ধরে বসন্তের সময়সীমা হ্রাসের প্রক্রিয়াটি অব্যাহত
রয়েছে।
নিউইয়র্কের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ল্যারি গার্টসম্যান বলেন, উত্তর গোলার্ধে চলতি বছর বসন্তকাল প্রায় ৯৩ দিন স্থায়ী হবে। প্রতিবছর বসন্তের সময় কমে কমে গ্রীষ্মের সঙ্গে যোগ হচ্ছে।
কিন্তু কেন এমন হচ্ছে? পৃথিবী নিজ অক্ষের ওপর ঢালু বা কাত হওয়ার কারণেই ঋতুর পরিবর্তন হয়। সোজা ওপর এবং নিচে থেকে ২৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি কোণে কাত হলে পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধ সূর্যের দিকে সরাসরি হেলে যায়। আর বাকি ছয় মাস পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্যের দিকে হেলে থাকে। পৃথিবীতে বসন্তকাল ক্রমশ সংক্ষিপ্ত হয়ে যাওয়ার কারণ—পৃথিবীর অক্ষ নিজেই স্থান পরিবর্তন করে, অনেকটা কম্পনশীল শীর্ষের মতো। এই পরিবর্তনের নাম অয়নচলন, যার ফলে সূর্যের বিষুবরেখা অতিক্রমণের সময় প্রতিবছর কিছুটা এগিয়ে আসে। গ্রীষ্মকালে নিরক্ষরেখা থেকে সূর্যের দূরতম স্থানে অবস্থানকালে বসন্ত শেষ হয়। আর অয়নচলনের কারণে পৃথিবী নিজের কক্ষপথের যে বিন্দুতে পৌঁছায়, তা সামান্য সরে যায়। পরবর্তী বছরে পৃথিবী সেই একই বিন্দুতে কিছুটা আগে পৌঁছে যাবে। বসন্ত শেষ হবে আর গ্রীষ্মকাল শুরু হবে আগের বছরের তুলনায় একটু আগে। গার্টসম্যান আরও বলেন, ৮৬৮০ খ্রিষ্টাব্দের কাছাকাছি কোনো এক বছর বসন্তকাল সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত হবে এবং তখন ঋতুটির ব্যাপ্তি হবে প্রায় ৮৮ দিন, যা কিনা চলতি বছরের বসন্তকালের চেয়ে প্রায় চার দিন কম। আর সেই বছরের পর থেকে বসন্তের সময়সীমা আবার একটু একটু করে বাড়তে থাকবে।
এখন প্রশ্ন হলো, বসন্তকাল কেন গ্রীষ্মের চেয়ে সংক্ষিপ্ত হয়? পৃথিবীর গতিবিধির আরও কয়েকটি বৈশিষ্ট্যের কারণে ঋতুগুলোর প্রকৃত দৈর্ঘ্যের ওপর প্রভাব পড়ে। যেমন: সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর কক্ষপথ নিখুঁত বৃত্তাকার নয়, বরং উপবৃত্তাকার। অর্থাৎ, গ্রহটি সূর্য থেকে সব সময় সমান দূরত্বে অবস্থান করে না। জানুয়ারির শুরুর দিকে পৃথিবী নিজ কক্ষপথে সূর্য থেকে সবচেয়ে কম দূরত্বে থাকে যার পরিমাণ প্রায় ১৪ কোটি ৮০ লাখ কিলোমিটার। তখন কক্ষপথে পৃথিবীর গতি সবচেয়ে বেশি হয়। আর জুলাইয়ের প্রথমদিকে পৃথিবী সূর্য থেকে সবচেয়ে বেশি দূরে (১৫ কোটি ৩০ লাখ কিলোমিটার) থাকে। তখন কক্ষপথে পৃথিবী সবচেয়ে ধীরগতিতে চলে। শীতকালজুড়ে গতি বেশি থাকে আর গ্রীষ্মে সূর্য থেকে অনেক বেশি দূরত্বে অবস্থানকালে গতি থাকে তুলনামূলক কম। গতির এই পরিবর্তনের প্রভাব ঋতুগুলোর দৈর্ঘ্যকে প্রভাবিত করে। ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত পৃথিবী নিজ কক্ষপথে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে চলে। আর তাই শীত ও বসন্তকাল উত্তর গোলার্ধের অন্য দুই প্রধান ঋতু (গ্রীষ্ম ও শরৎ) থেকে সংক্ষিপ্ত সময় স্থায়ী হয়। ১২৪৬ খ্রিষ্টাব্দে পৃথিবী সূর্যের সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে গিয়েছিল ডিসেম্বরে। আর চলতি বছর সেই অবস্থানে পৌঁছায় গত ৪ জানুয়ারি। ৩০০০ খ্রিষ্টাব্দের কাছাকাছি পৃথিবী ওই অবস্থানে পৌঁছাবে আনুমানিক ২০ জানুয়ারি। আর ৪০০০ খ্রিষ্টাব্দে সময়টা হবে আনুমানিক ৭ ফেব্রুয়ারি। ৬৪৩০ খ্রিষ্টাব্দে পৃথিবী ওই অবস্থানে পৌঁছাবে মার্চের কোনো এক দিনে। কিন্তু বসন্তকাল সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত হবে যখন ঋতুটির মাঝামাঝি পর্যায়ে পৃথিবীর সবচেয়ে নিকট অবস্থানে পৌঁছাবে। আর এভাবেই সূর্য থেকে পৃথিবীর নিকটতম ও দূরতম অবস্থানের ওপর ভিত্তি করেই পৃথিবীর গতি ও কাত হওয়ার মতো ব্যাপারগুলো নিয়ন্ত্রিত হয়। কিন্তু বসন্তের সময় কমে যাওয়ার ব্যাপারটা এত সূক্ষ্ম যে অধিকাংশ মানুষ সারা জীবনেও ব্যাপারটা খেয়াল করার সুযোগ পায় না। তবে জ্যোতির্বিদেরা ঠিকই এসবের হিসাব রাখেন।
নিউইয়র্কের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ল্যারি গার্টসম্যান বলেন, উত্তর গোলার্ধে চলতি বছর বসন্তকাল প্রায় ৯৩ দিন স্থায়ী হবে। প্রতিবছর বসন্তের সময় কমে কমে গ্রীষ্মের সঙ্গে যোগ হচ্ছে।
কিন্তু কেন এমন হচ্ছে? পৃথিবী নিজ অক্ষের ওপর ঢালু বা কাত হওয়ার কারণেই ঋতুর পরিবর্তন হয়। সোজা ওপর এবং নিচে থেকে ২৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি কোণে কাত হলে পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধ সূর্যের দিকে সরাসরি হেলে যায়। আর বাকি ছয় মাস পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্যের দিকে হেলে থাকে। পৃথিবীতে বসন্তকাল ক্রমশ সংক্ষিপ্ত হয়ে যাওয়ার কারণ—পৃথিবীর অক্ষ নিজেই স্থান পরিবর্তন করে, অনেকটা কম্পনশীল শীর্ষের মতো। এই পরিবর্তনের নাম অয়নচলন, যার ফলে সূর্যের বিষুবরেখা অতিক্রমণের সময় প্রতিবছর কিছুটা এগিয়ে আসে। গ্রীষ্মকালে নিরক্ষরেখা থেকে সূর্যের দূরতম স্থানে অবস্থানকালে বসন্ত শেষ হয়। আর অয়নচলনের কারণে পৃথিবী নিজের কক্ষপথের যে বিন্দুতে পৌঁছায়, তা সামান্য সরে যায়। পরবর্তী বছরে পৃথিবী সেই একই বিন্দুতে কিছুটা আগে পৌঁছে যাবে। বসন্ত শেষ হবে আর গ্রীষ্মকাল শুরু হবে আগের বছরের তুলনায় একটু আগে। গার্টসম্যান আরও বলেন, ৮৬৮০ খ্রিষ্টাব্দের কাছাকাছি কোনো এক বছর বসন্তকাল সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত হবে এবং তখন ঋতুটির ব্যাপ্তি হবে প্রায় ৮৮ দিন, যা কিনা চলতি বছরের বসন্তকালের চেয়ে প্রায় চার দিন কম। আর সেই বছরের পর থেকে বসন্তের সময়সীমা আবার একটু একটু করে বাড়তে থাকবে।
এখন প্রশ্ন হলো, বসন্তকাল কেন গ্রীষ্মের চেয়ে সংক্ষিপ্ত হয়? পৃথিবীর গতিবিধির আরও কয়েকটি বৈশিষ্ট্যের কারণে ঋতুগুলোর প্রকৃত দৈর্ঘ্যের ওপর প্রভাব পড়ে। যেমন: সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর কক্ষপথ নিখুঁত বৃত্তাকার নয়, বরং উপবৃত্তাকার। অর্থাৎ, গ্রহটি সূর্য থেকে সব সময় সমান দূরত্বে অবস্থান করে না। জানুয়ারির শুরুর দিকে পৃথিবী নিজ কক্ষপথে সূর্য থেকে সবচেয়ে কম দূরত্বে থাকে যার পরিমাণ প্রায় ১৪ কোটি ৮০ লাখ কিলোমিটার। তখন কক্ষপথে পৃথিবীর গতি সবচেয়ে বেশি হয়। আর জুলাইয়ের প্রথমদিকে পৃথিবী সূর্য থেকে সবচেয়ে বেশি দূরে (১৫ কোটি ৩০ লাখ কিলোমিটার) থাকে। তখন কক্ষপথে পৃথিবী সবচেয়ে ধীরগতিতে চলে। শীতকালজুড়ে গতি বেশি থাকে আর গ্রীষ্মে সূর্য থেকে অনেক বেশি দূরত্বে অবস্থানকালে গতি থাকে তুলনামূলক কম। গতির এই পরিবর্তনের প্রভাব ঋতুগুলোর দৈর্ঘ্যকে প্রভাবিত করে। ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত পৃথিবী নিজ কক্ষপথে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে চলে। আর তাই শীত ও বসন্তকাল উত্তর গোলার্ধের অন্য দুই প্রধান ঋতু (গ্রীষ্ম ও শরৎ) থেকে সংক্ষিপ্ত সময় স্থায়ী হয়। ১২৪৬ খ্রিষ্টাব্দে পৃথিবী সূর্যের সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে গিয়েছিল ডিসেম্বরে। আর চলতি বছর সেই অবস্থানে পৌঁছায় গত ৪ জানুয়ারি। ৩০০০ খ্রিষ্টাব্দের কাছাকাছি পৃথিবী ওই অবস্থানে পৌঁছাবে আনুমানিক ২০ জানুয়ারি। আর ৪০০০ খ্রিষ্টাব্দে সময়টা হবে আনুমানিক ৭ ফেব্রুয়ারি। ৬৪৩০ খ্রিষ্টাব্দে পৃথিবী ওই অবস্থানে পৌঁছাবে মার্চের কোনো এক দিনে। কিন্তু বসন্তকাল সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত হবে যখন ঋতুটির মাঝামাঝি পর্যায়ে পৃথিবীর সবচেয়ে নিকট অবস্থানে পৌঁছাবে। আর এভাবেই সূর্য থেকে পৃথিবীর নিকটতম ও দূরতম অবস্থানের ওপর ভিত্তি করেই পৃথিবীর গতি ও কাত হওয়ার মতো ব্যাপারগুলো নিয়ন্ত্রিত হয়। কিন্তু বসন্তের সময় কমে যাওয়ার ব্যাপারটা এত সূক্ষ্ম যে অধিকাংশ মানুষ সারা জীবনেও ব্যাপারটা খেয়াল করার সুযোগ পায় না। তবে জ্যোতির্বিদেরা ঠিকই এসবের হিসাব রাখেন।