মাছরাঙাটা
একদৃষ্টিতে পানির দিকে চেয়ে আছে। নৌকা যায়, ট্রলার যায়। পাখিটি খাবার ধরবে
বলে জলের দিকে তাকিয়ে থাকে। নদীর জলরাশির ওপরে কিছু পানকৌড়ি, কাদাখোঁচা আর
গাংচিলের ওড়াওড়ি চোখে পড়ে। আর জলের পথে পথে ছোট মাছ ধরার নৌকায় জেলেদের
রাজত্ব। ধান, নদী আর খালের বরিশােল এমন ছবি আপনার চোখে পড়তে পারে। শীতের
শুরুতেই দেখে এসেছিলাম এই বরিশাল।
নদীর নাম কালাবদর। বরিশালের পাতারহাট থেকে লঞ্চঘাটে যাওয়ার পথে পথে দূরের গ্রামগুলোতে ছোট ছোট পানের বরজ। বাঁশের কঞ্চি (স্থানীয়রা বলেন জিংলা) আর পাটকাঠির বেড়ার ফাঁকে ফাঁকে সবুজ-সতেজ পানগাছ চোখ মেলে তাকাবে। মাটিতে পানগাছ আর কম পানিতে আছে পাটিপাতা। এটি অবশ্য স্থানীয়ভাবে হোগলা বা হোগলপাতা নামেও পরিচিত। চরের বরজগুলোতে অবশ্য কৃষক ছাড়া কারও প্রবেশের অনুমতি নেই। বাইরে থেকে পানগাছ দেখে তুষ্ট থাকতে হলো। পাতারহাট থেকে যাওয়ার পথে ছোট ছোট কয়েকটি ঘাট পড়বে। এসব ঘাটে স্থানীয় কিছু পণ্যের বেচাকেনা চলে। সবচেয়ে বেশি বিক্রি হবে লেবু আর মহিষের দই। আবার এই দুইয়ের মিশ্রণের স্বাদটাও আপনার কাছে অমৃত মনে হতে পারে। আমরাও একটু চেখে দেখেছিলাম।
ভ্রমণে অবশ্য একটু বিপত্তিই ঘটেছিল। ঢাকা-বরিশাল লঞ্চযাত্রা তো দারুণ। শুরুটাও দারুণই ছিল। তবে বাড়তি রোমাঞ্চের লোভ করতেই বিপদে পড়লাম। লেংগুটিয়া থেকে বরিশাল শহর যাওয়ার পথটুকু স্পিডবোটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। অল্প পথ, কিন্তু কিছুদূর যেতেই স্পিডবোটের ইঞ্জিন বিকল হয়ে গেল। চালক অবশ্য ধীরে ধীরে তীরের দিকে নিয়ে যান। সে যাত্রায় আমরাও বেঁচে যাই। পরের স্পিডবোট আসতে আসতে রথ দেখা আর কলা বেচা মানে অপেক্ষা আর চর দেখা এক সঙ্গেই হয়ে যায়। যাওয়ার পথেও নদীতে কখনো কখনো চরের দেখা মিলবে। সে চরে আবার পাখি-মহিষের একসঙ্গে বসবাস। মহিষের শিংয়ের ডগায় বিশ্রাম নেয় গাংচিল, কাদাখোঁচা। আবার ক্লান্ত মহিষগুলোও কিছু সময় পর পর গলাপানিতে ডুব মেরে বসে থাকে।
এ ছিল দুপুরের কালাবদর নদের কথা। ভোর সকালের কালাবদর নদের পাশের উলানিয়া গ্রামটা আরও মায়াময়। ধানের ওপর শিশিরবিন্দু আর সরিষার খেতে মৌমাছির আনাগোনা সব আছে এখানে। হালকা শীতে, কোথাও কোথাও খেজুরের রসে গলা ভেজানোর সুযোগ আছে। আর রাতের নদীর পাড় ধরা দেবে অন্যভাবে। চাঁদের আলোয় চিকচিকে রুপালি নদীতে নৌকায় ঘুরে বেড়ানো যাবে অনায়াসেই। দূরপথের জাহাজের আলো আর জেলে-মাঝিদের নৌকার টিম টিম লণ্ঠন চোখ পড়বে কিছুক্ষণ পর পর। জেলেদের হাঁকডাকও শোনা যায় বেশ। কালাবদর নদের মতো বরিশালের কীর্তনখোলা আর অন্য নদীগুলোর পানিও এমন রুপালি চাদর বিছিয়ে দেবে জলপথে। আর আপনাকে স্বাগত জানাবে ধান-নদীর বরিশালে।
যেভাবে যাবেনমেহেন্দীগঞ্জের পাতারহাট, লাহারহাট বা লেংগুটিয়া যেতে হলে ঢাকার সদরঘাট থেকে হাতিয়াগামী লঞ্চে উঠতে হবে। বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে লঞ্চ ছাড়া শুরু হয়। এখানে ডেক বা কেবিন দুই পদ্ধতিতে যাওয়া যায়। ডেকের ভাড়া ২২০ টাকা। আর কেবিন (সিঙ্গল) ৮০০ টাকা, (ডাবল) ১৬০০ টাকা। ফেরার পথেও একইভাবে ফেরা যাবে। আর থাকতে হলে উপজেলা পরিষদের বাংলো, কিংবা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর রেস্ট হাউসে উঠতে হবে। তবে আগ থেকেই খোঁজখবর নিয়ে থাকা ভালো। না হয় থাকা নিয়ে ঝামেলায় পড়তে হবে। আর ঘুরতে গেলে স্থানীয় একজন গাইডকে সঙ্গে নেওয়া ভালো। আর সাঁতার না জানলে লাইফ জ্যাকেট সঙ্গে রাখাটাই নিরাপদ।
নদীর নাম কালাবদর। বরিশালের পাতারহাট থেকে লঞ্চঘাটে যাওয়ার পথে পথে দূরের গ্রামগুলোতে ছোট ছোট পানের বরজ। বাঁশের কঞ্চি (স্থানীয়রা বলেন জিংলা) আর পাটকাঠির বেড়ার ফাঁকে ফাঁকে সবুজ-সতেজ পানগাছ চোখ মেলে তাকাবে। মাটিতে পানগাছ আর কম পানিতে আছে পাটিপাতা। এটি অবশ্য স্থানীয়ভাবে হোগলা বা হোগলপাতা নামেও পরিচিত। চরের বরজগুলোতে অবশ্য কৃষক ছাড়া কারও প্রবেশের অনুমতি নেই। বাইরে থেকে পানগাছ দেখে তুষ্ট থাকতে হলো। পাতারহাট থেকে যাওয়ার পথে ছোট ছোট কয়েকটি ঘাট পড়বে। এসব ঘাটে স্থানীয় কিছু পণ্যের বেচাকেনা চলে। সবচেয়ে বেশি বিক্রি হবে লেবু আর মহিষের দই। আবার এই দুইয়ের মিশ্রণের স্বাদটাও আপনার কাছে অমৃত মনে হতে পারে। আমরাও একটু চেখে দেখেছিলাম।
ভ্রমণে অবশ্য একটু বিপত্তিই ঘটেছিল। ঢাকা-বরিশাল লঞ্চযাত্রা তো দারুণ। শুরুটাও দারুণই ছিল। তবে বাড়তি রোমাঞ্চের লোভ করতেই বিপদে পড়লাম। লেংগুটিয়া থেকে বরিশাল শহর যাওয়ার পথটুকু স্পিডবোটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। অল্প পথ, কিন্তু কিছুদূর যেতেই স্পিডবোটের ইঞ্জিন বিকল হয়ে গেল। চালক অবশ্য ধীরে ধীরে তীরের দিকে নিয়ে যান। সে যাত্রায় আমরাও বেঁচে যাই। পরের স্পিডবোট আসতে আসতে রথ দেখা আর কলা বেচা মানে অপেক্ষা আর চর দেখা এক সঙ্গেই হয়ে যায়। যাওয়ার পথেও নদীতে কখনো কখনো চরের দেখা মিলবে। সে চরে আবার পাখি-মহিষের একসঙ্গে বসবাস। মহিষের শিংয়ের ডগায় বিশ্রাম নেয় গাংচিল, কাদাখোঁচা। আবার ক্লান্ত মহিষগুলোও কিছু সময় পর পর গলাপানিতে ডুব মেরে বসে থাকে।
এ ছিল দুপুরের কালাবদর নদের কথা। ভোর সকালের কালাবদর নদের পাশের উলানিয়া গ্রামটা আরও মায়াময়। ধানের ওপর শিশিরবিন্দু আর সরিষার খেতে মৌমাছির আনাগোনা সব আছে এখানে। হালকা শীতে, কোথাও কোথাও খেজুরের রসে গলা ভেজানোর সুযোগ আছে। আর রাতের নদীর পাড় ধরা দেবে অন্যভাবে। চাঁদের আলোয় চিকচিকে রুপালি নদীতে নৌকায় ঘুরে বেড়ানো যাবে অনায়াসেই। দূরপথের জাহাজের আলো আর জেলে-মাঝিদের নৌকার টিম টিম লণ্ঠন চোখ পড়বে কিছুক্ষণ পর পর। জেলেদের হাঁকডাকও শোনা যায় বেশ। কালাবদর নদের মতো বরিশালের কীর্তনখোলা আর অন্য নদীগুলোর পানিও এমন রুপালি চাদর বিছিয়ে দেবে জলপথে। আর আপনাকে স্বাগত জানাবে ধান-নদীর বরিশালে।
যেভাবে যাবেনমেহেন্দীগঞ্জের পাতারহাট, লাহারহাট বা লেংগুটিয়া যেতে হলে ঢাকার সদরঘাট থেকে হাতিয়াগামী লঞ্চে উঠতে হবে। বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে লঞ্চ ছাড়া শুরু হয়। এখানে ডেক বা কেবিন দুই পদ্ধতিতে যাওয়া যায়। ডেকের ভাড়া ২২০ টাকা। আর কেবিন (সিঙ্গল) ৮০০ টাকা, (ডাবল) ১৬০০ টাকা। ফেরার পথেও একইভাবে ফেরা যাবে। আর থাকতে হলে উপজেলা পরিষদের বাংলো, কিংবা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর রেস্ট হাউসে উঠতে হবে। তবে আগ থেকেই খোঁজখবর নিয়ে থাকা ভালো। না হয় থাকা নিয়ে ঝামেলায় পড়তে হবে। আর ঘুরতে গেলে স্থানীয় একজন গাইডকে সঙ্গে নেওয়া ভালো। আর সাঁতার না জানলে লাইফ জ্যাকেট সঙ্গে রাখাটাই নিরাপদ।