Lifestyle news - বিউটির বেগম রোকেয়া হ্যান্ডিক্র্যাফটস

রংপুর বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্রের পাশেই বিউটি আক্তারের ‘বেগম রোকেয়া হ্যান্ডিক্র্যাফট’ l ছবি: মঈনুল ইসলামনারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার পায়রাবন্দ। এই পায়রাবন্দ ইউনিয়নের খোর্দ মুরাদপুর গ্রামে নারীদের হাতের কাজ শিখিয়ে পারদর্শী ও স্বাবলম্বী করে তোলার কাজ করে চলেছেন বিউটি আক্তার।
মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দে ২০১০ সালে ‘বেগম রোকেয়া হ্যান্ডিক্র্যাফটস’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন বিউটি আক্তার। নকশিকাঁথা, বিছানার চাদর, টেবিলের ম্যাট, পাপশ, ওয়াল ম্যাট, শোপিস, ফতুয়া, থ্রি পিসে নকশার কাজ দিয়ে শুরু। তেমন একটা পুঁজিও ছিল না। প্রথমে নিজেই করতেন। আস্তে আস্তে গ্রামের নারীরা যুক্ত হলেন। তাঁর এই কাজ প্রচার পেতে থাকে। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করে তোলে। চাহিদা বাড়তে থাকে। এতে তাঁর উৎসাহ-উদ্দীপনা বেড়ে যায়।
একসময় যে নারীরা শুধু ঘরের কাজ করতেন, তাঁদের বুঝিয়ে এই কাজে যুক্ত করেন বিউটি। গত ছয় বছরে খোর্দ মুরাদপুর গ্রামের প্রায় ১০০ নারীকে হাতের কাজ শিখিয়েছেন। তাঁরা এখন নিজের বাড়িতেই কাপড়ে নকশার কাজ করে বিভিন্ন দোকানে সরবরাহ করেন। এ ছাড়া ওই গ্রামের ৮০ জন নারী তাঁদের নিজেদের বাড়িতে কাজ করে বিউটি আক্তারের প্রতিষ্ঠানে পণ্য সরবরাহ করেন।
রংপুর শহর থেকে আনুমানিক ২০ কিলোমিটার পায়রাবন্দ। সেখানে বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্রের পাশেই বিউটি আক্তারের ‘বেগম রোকেয়া হ্যান্ডিক্র্যাফট’ নামের শোরুম। এ স্থানে লোকজন ঘুরতে এসে তাঁর প্রতিষ্ঠানের পণ্য কিনে থাকেন। সেই সঙ্গে বিভিন্ন এলাকা থেকে অর্ডারও পান।
সম্প্রতি সেখানে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের নারীরা তাঁদের নিজ বাড়িতে বসে নিপুণ হাতে চাদরের মধ্যে সেলাই করে ফুল তুলছেন। কেউ কাপড় কাটছেন। আবার কেউ শতরঞ্জি ও নকশিকাঁথা বুনন করছেন।
খোর্দ মুরাদপুর গ্রামের আছিরন বেগম তিন বছর থেকে বাড়িতেই এ কাজ করছেন। তিনি বলেন, ‘বাড়ির কাজকর্মের সঙ্গে বিভিন্ন কাপড়ে নকশার কাজও করছি। এসব মালামাল গ্রামের বিউটির কাছোত দিই। এতে বাড়ির কাজের কোনো অসুবিধা হয় না। নিজের পায়ে দাঁড়াতে পরিশ্রম করছি। এতে করে সংসার ভালোভাবেই চলে যাচ্ছে। এসব কাজ করতে বেশ আনন্দই লাগে।’
মোমেনা বেগম বলেন, ‘হামার গ্রামের বিউটির কাছোত হাতের কাজ শিখছি। সুতা, কাপড় সাপ্লাই দেয়। তারপর নকশা করিয়া জমা দেই। এর বিনিময়ে কিছু টাকাও পাই।’ আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘বিউটি আপা কাজের অর্ডার দেয়। গ্রামের মহিলাদের এলা বাড়তি আয় হইছে।’
এ প্রসঙ্গে বিউটি আক্তার বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই এই কাজে আমার অনেক শখ ছিল। অনেক কষ্ট করেছি। গ্রামের বাড়িতেই মহিলাদের কাজ শিখিয়েছি। তাঁরা এখন স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। গ্রামের মহিলাদের এমন কাজে উদ্যোগী করে তুলতে পেরে আমি আনন্দিত।’

-

Latest

Popular Posts

Popular Posts

Popular Posts