Lifestyle news- ফুলের ব্যবসায় চওড়া হাসি

নিজের ফুলের বাগানে রফিকুল ইসলাম l ছবি: এহসান–উদ–দৌলা
রফিকুল ইসলাম যশোরের সরকারি সিটি কলেজ থেকে বিএ পাস করেন ১৯৯২ সালে। স্বপ্ন ছিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার। তা আর হওয়া হয়নি। হলেন উদ্যোক্তা। এখন তাঁর অধীনে ১০ জন কাজ করছেন।
রফিকুল গদখালীর ‘ফুল সাম্রাজ্য’ এলাকার বাসিন্দা। ‘নুন আনতে পান্তা ফুরায়’ এমন এক কৃষক পরিবারে তাঁর বেড়ে ওঠা। বাবা ছিলেন কৃষক। অভাব-অনটন যেন তাঁদের পিছু ছাড়েনি। এখন তাঁর অনেকটা সুসময়। আর্থিক সমৃদ্ধি যেমন এসেছে, তেমনি বেড়েছে সামাজিক মর্যাদা। স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির অভিভাবক সদস্য হিসেবে তিনি মনোনীত হয়েছেন।
সম্প্রতি পানিসারা গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, শ্রমিকেরা বাগানে ফুলের পরিচর্যা করছেন। আর তাঁদের দেখভাল করছেন রফিকুল। রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এখন মনে হয়, চাকরিবাকরি না করেই অনেক ভালো আছি। চাকরি করে মাসে যে ক টাকা আয় হতো, এখন তার চেয়ে বেশি রোজগার করি। শুধু তাই নয়, কোনো কিছু উৎপাদনের সঙ্গে থাকতে পারা অনেক মজার। এতে সামাজিক মর্যাদা বেড়েছে। তা ছাড়া আমার খেত ও ফুল ব্যবসায় ১০ থেকে ১২ জন সব সময় কাজ করে।’
রফিকুল জানান, প্রতিদিন বিকেলে খেত থেকে ফুল তোলা হয়। পরদিন সকালে গদখালীর পাইকারি ফুল বাজারের শেডে নিয়ে তা প্যাকেজিং করা হয়। ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ গ্লাডিওলাস ও ২ হাজারের মতো গোলাপ দিয়ে এক একটি বান্ডিল করা হয়। এরপর তা ঢাকাসহ সারা দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। দৈনিক লাখ খানেক টাকার গোলাপ, গাঁদা, জারবেরা, গ্লাডিওলাস ও রজনীগন্ধা সারা দেশে পাঠানো হচ্ছে।
১৯৯২ সালে শুরুর দিকে রফিকুল হাজার দশেক টাকা পুঁজি নিয়ে ১৫ কাঠা জমিতে গোলাপের চাষ শুরু করেন। প্রথম মাসেই ভালো লাভ পান। পরের বছর তিন বিঘায় চাষ করার সাহস দেখান। ২০০৪ সাল পর্যন্ত তিনি গোলাপেরই চাষ করেন। ধীরে ধীরে পরিসর বাড়তে থাকে। জারবেরা, গাঁদা, গ্লাডিওলাস ও রজনীগন্ধার চাষ শুরু হয়। চাষের পাশাপাশি গদখালী বাজারের অন্য কৃষকদের কাছ থেকে পাইকারি ফুল কিনে ব্যবসা শুরু করেন তিনি।
এখন ১০ বিঘা জমিতে জারবেরা, রজনীগন্ধা, গ্লাডিওলাস ও গাঁদা ফুলের চাষ রয়েছে রফিকুলের। ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে তিনি ছয় বিঘা জমি কিনেছেন। পাকা বাড়ি করেছেন। অগ্রণী ব্যাংক থেকে ১০ শতাংশ লাভে তিনি পাঁচ লাখ টাকা ঋণ পেয়েছেন। যে কারণে ব্যবসা আরও প্রসারিত করার তিনি সুযোগ পেয়েছেন বলেও জানান।
রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যশোর অঞ্চলে ফুলের চাষ দিন দিন বাড়ছে। দেশের বাজারের পাশাপাশি বিদেশে আমাদের ফুলের বাজার সৃষ্টি করতে হবে। সেটি করতে পারলে সম্ভাবনাময় এ খাত থেকে ব্যাপকভাবে বৈদেশিক মুদ্রা আসতে পারে। এ জন্য আমাদের সরকারি সহায়তা দিতে হবে।’

-

Latest

Popular Posts

Popular Posts

Popular Posts