বিভিন্ন
অফিসে আজকাল নানা রকমের প্রশিক্ষণ হয়। এসব প্রশিক্ষণে একটা সময় পর্যন্ত
প্রশিক্ষক হিসেবে পুরুষকেই দেখা যেত। চারপাশের নানা পরিবর্তনের সঙ্গে এই
অবস্থারও পরিবর্তন হয়েছে। বদলে গেছে এই চিত্র। আজকাল নারীদের নেতৃত্বে অনেক
প্রশিক্ষণ হচ্ছে। শুধু নারীরাই নন, পুরুষেরাও প্রশিক্ষণে অংশ নিচ্ছেন।
বেসরকারি আবাসন প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ বিভাগে কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন সুতপা চৌধুরী (ছদ্মনাম)। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষে কয়েক মাস হলো চাকরিতে যোগদান করেছেন। মানবসম্পদ বিভাগের অধীনে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন কর্মশালা, প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করেন তিনি। প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিভাগের কর্মীদের জন্য নিয়মিত নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হয় তাঁকে।
সুতপা নিজে প্রশিক্ষক হিসেবে অনেক সেমিনার আর কর্মশালা পরিচালনা করেন। নারী হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী পুরুষ সহকর্মীদের সঙ্গে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে তাঁকে। তিনি বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক কর্মশালাগুলোতে অনেক ক্ষেত্রে অংশগ্রহণকারী পুরুষ সহকর্মী ও কর্মকর্তারা প্রশিক্ষক হিসেবে নারীদের মেনে নিতে চান না। নারীদের প্রশিক্ষক বা মডারেটর হিসেবে পুরুষদের সংকীর্ণ আচরণ লক্ষ করা যায়। বিভিন্ন ব্যাংক-বিমা, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলোতে খোঁজ নিয়ে এমন ঘটনার চিত্র খুঁজে পাওয়া যায়। সুতপার মতোই একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন আরমিন জামান চৌধুরী। আরমিনও
প্রশিক্ষক হিসেবে নানা ধরনের হেনস্তার শিকার হওয়ার ঘটনার কথা জানান। তাঁর কাছে জানা গেল, সবাই নয়, অনেকের মধ্যে এই প্রবণতা থাকে। তরুণদের বেশি সহযোগিতার মনোভাব থাকে। তবে মধ্যম পদের পুরুষ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা মাঝেমধ্যে মানতে চান না।
নারী প্রশিক্ষকের হাতেই থাকে এ সমস্যার সমাধান। আন্তর্জাতিক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ইউনিলিভার বাংলাদেশের এইচআর বিজনেস পার্টনার, সাপ্লাই চেইন কর্মকর্তা তানভীরা চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পর্যায়ের সহকর্মীদের নানা ধরনের প্রশিক্ষণকে আরও প্রাণবন্ত করা ও নারী প্রশিক্ষকের কর্মনৈপুণ্যতাই পুরুষ সহকর্মীর দৃষ্টি বদলাতে পারে।’
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নানা পর্যায়ের কর্মীদের প্রশিক্ষণ সারা বছরই দেওয়া হয়। লক্ষ করা যায়, প্রশিক্ষক হিসেবে যেসব কর্মশালায় নারীরা থাকেন, সেখানে অংশগ্রহণকারীদের মানসিক টানাপোড়েন খেয়াল করা যায় না। পুরুষ প্রশিক্ষকের ক্ষেত্রে অনেক সময় অংশগ্রহণকারীরা সত্য কথা বা আসল তথ্য দিতে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। কিন্তু নারী প্রশিক্ষকের ক্ষেত্রে স্বাধীনভাবেই সবাই অংশগ্রহণ করেন। অনেক পুরুষ সহকর্মী নারী প্রশিক্ষকের সামনে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এসব ক্ষেত্রে নারী প্রশিক্ষকের অংশগ্রহণকারীর সঙ্গে কথা বলে, হাস্যোজ্জ্বল পরিবেশ তৈরি করতে পারেন। এতে জড়তা কেটে যাবে।
পেশা পরামর্শক ও যোগাযোগ প্রতিষ্ঠান বেস্টকমের পরিচালক রুবিনা খান মনে করেন, নারী প্রশিক্ষকের সক্রিয় ভূমিকার মাধ্যমে পুরুষদের ধ্যানধারণা বদলানো সম্ভব। এ ধরনের ঘটনাগুলোতে সাধারণত পুরুষেরা নারী সহকর্মীর যোগ্যতা কিংবা অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ‘প্রশিক্ষক হিসেবে নারীদের গুরুত্বহীন মনে করার ভাবনা থেকে এমন বিপত্তির কথা শোনা যায়। এ ক্ষেত্রে অংশগ্রহণকারী পুরুষ সহকর্মীর জড়তা বা মানসিক চিন্তা পরিবর্তনের চেষ্টা করতে পারেন নারী প্রশিক্ষক নিজেই।’
পুরুষদের যেকোনো কর্মশালায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে নারী প্রশিক্ষককে নারী হিসেবে না ভেবে মানুষ হিসেবে সম্মান দিলেই কর্মশালায় এ ধরনের বিপত্তি কাটানো সম্ভব।
খেয়াল রাখুন
. নারী প্রশিক্ষককে ‘মেয়ে’ মনে না করে সহকর্মী হিসেবে সম্মান দিলেই জড়তা বা যেকোনো বিব্রতকর পরিস্থিতি কাটানো সম্ভব।
. কর্মশালায় পুরুষ সহকর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের সুযোগ দিলে জড়তা বা অস্বস্তিকর পরিস্থিতির উদ্ভব হয় না।
. বিশেষ পরিস্থিতিতে সেই পুরুষ সহকর্মীর সঙ্গে আলাদা মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তাদের পরামর্শ নিয়ে কাউন্সেলিং করতে পারেন।
. যেকোনো বিব্রতকর পরিস্থিতি কাটানোর জন্য কর্মশালার নিয়ন্ত্রণ নিজের ওপর রাখুন।
বেসরকারি আবাসন প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ বিভাগে কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন সুতপা চৌধুরী (ছদ্মনাম)। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষে কয়েক মাস হলো চাকরিতে যোগদান করেছেন। মানবসম্পদ বিভাগের অধীনে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন কর্মশালা, প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করেন তিনি। প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিভাগের কর্মীদের জন্য নিয়মিত নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হয় তাঁকে।
সুতপা নিজে প্রশিক্ষক হিসেবে অনেক সেমিনার আর কর্মশালা পরিচালনা করেন। নারী হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী পুরুষ সহকর্মীদের সঙ্গে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে তাঁকে। তিনি বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক কর্মশালাগুলোতে অনেক ক্ষেত্রে অংশগ্রহণকারী পুরুষ সহকর্মী ও কর্মকর্তারা প্রশিক্ষক হিসেবে নারীদের মেনে নিতে চান না। নারীদের প্রশিক্ষক বা মডারেটর হিসেবে পুরুষদের সংকীর্ণ আচরণ লক্ষ করা যায়। বিভিন্ন ব্যাংক-বিমা, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলোতে খোঁজ নিয়ে এমন ঘটনার চিত্র খুঁজে পাওয়া যায়। সুতপার মতোই একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন আরমিন জামান চৌধুরী। আরমিনও
প্রশিক্ষক হিসেবে নানা ধরনের হেনস্তার শিকার হওয়ার ঘটনার কথা জানান। তাঁর কাছে জানা গেল, সবাই নয়, অনেকের মধ্যে এই প্রবণতা থাকে। তরুণদের বেশি সহযোগিতার মনোভাব থাকে। তবে মধ্যম পদের পুরুষ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা মাঝেমধ্যে মানতে চান না।
নারী প্রশিক্ষকের হাতেই থাকে এ সমস্যার সমাধান। আন্তর্জাতিক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ইউনিলিভার বাংলাদেশের এইচআর বিজনেস পার্টনার, সাপ্লাই চেইন কর্মকর্তা তানভীরা চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পর্যায়ের সহকর্মীদের নানা ধরনের প্রশিক্ষণকে আরও প্রাণবন্ত করা ও নারী প্রশিক্ষকের কর্মনৈপুণ্যতাই পুরুষ সহকর্মীর দৃষ্টি বদলাতে পারে।’
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নানা পর্যায়ের কর্মীদের প্রশিক্ষণ সারা বছরই দেওয়া হয়। লক্ষ করা যায়, প্রশিক্ষক হিসেবে যেসব কর্মশালায় নারীরা থাকেন, সেখানে অংশগ্রহণকারীদের মানসিক টানাপোড়েন খেয়াল করা যায় না। পুরুষ প্রশিক্ষকের ক্ষেত্রে অনেক সময় অংশগ্রহণকারীরা সত্য কথা বা আসল তথ্য দিতে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। কিন্তু নারী প্রশিক্ষকের ক্ষেত্রে স্বাধীনভাবেই সবাই অংশগ্রহণ করেন। অনেক পুরুষ সহকর্মী নারী প্রশিক্ষকের সামনে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এসব ক্ষেত্রে নারী প্রশিক্ষকের অংশগ্রহণকারীর সঙ্গে কথা বলে, হাস্যোজ্জ্বল পরিবেশ তৈরি করতে পারেন। এতে জড়তা কেটে যাবে।
পেশা পরামর্শক ও যোগাযোগ প্রতিষ্ঠান বেস্টকমের পরিচালক রুবিনা খান মনে করেন, নারী প্রশিক্ষকের সক্রিয় ভূমিকার মাধ্যমে পুরুষদের ধ্যানধারণা বদলানো সম্ভব। এ ধরনের ঘটনাগুলোতে সাধারণত পুরুষেরা নারী সহকর্মীর যোগ্যতা কিংবা অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ‘প্রশিক্ষক হিসেবে নারীদের গুরুত্বহীন মনে করার ভাবনা থেকে এমন বিপত্তির কথা শোনা যায়। এ ক্ষেত্রে অংশগ্রহণকারী পুরুষ সহকর্মীর জড়তা বা মানসিক চিন্তা পরিবর্তনের চেষ্টা করতে পারেন নারী প্রশিক্ষক নিজেই।’
পুরুষদের যেকোনো কর্মশালায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে নারী প্রশিক্ষককে নারী হিসেবে না ভেবে মানুষ হিসেবে সম্মান দিলেই কর্মশালায় এ ধরনের বিপত্তি কাটানো সম্ভব।
খেয়াল রাখুন
. নারী প্রশিক্ষককে ‘মেয়ে’ মনে না করে সহকর্মী হিসেবে সম্মান দিলেই জড়তা বা যেকোনো বিব্রতকর পরিস্থিতি কাটানো সম্ভব।
. কর্মশালায় পুরুষ সহকর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের সুযোগ দিলে জড়তা বা অস্বস্তিকর পরিস্থিতির উদ্ভব হয় না।
. বিশেষ পরিস্থিতিতে সেই পুরুষ সহকর্মীর সঙ্গে আলাদা মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তাদের পরামর্শ নিয়ে কাউন্সেলিং করতে পারেন।
. যেকোনো বিব্রতকর পরিস্থিতি কাটানোর জন্য কর্মশালার নিয়ন্ত্রণ নিজের ওপর রাখুন।