Lifestyle news - ফুটবলময় মামুনুল

সংগ্রহে রাখা বুটবাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক তিনি। তাঁর নেতৃত্বে কিছুদিন আগেই বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপে বাংলাদেশ হলো রানার্সআপ। এই মামুনুল ইসলামের জীবনযাপনের পুরোটায় ফুটবলময়। কোনো কিছুতে নেই বাহুল্য, একমাত্র বিলাসিতা ‘অ্যাডিডাস’।
পাঞ্জাবি পরতে ভালোবাসেন মামুনুল। ছবি: সুমন ইউসুফফেসবুক খুব একটা পছন্দ নয় মামুনুল ইসলামের। ডিজিটাল দুনিয়ার এই বিস্ময়কে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক মনে করেন সময় নষ্ট করার অনুষঙ্গ।
এই একটি ব্যাপারেই মোটামুটি চিনে নেওয়া যায় তাঁকে। জীবনে বাহুল্যকে দূরেই সরিয়ে রাখতে চান তিনি। তাই বলে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে যে তিনি নেই, তা নয়। সময়-সুযোগ পেলে ঢুঁ মারেন নিজের অ্যাকাউন্টে। সেখানে তিনি একেবারেই ‘ব্যক্তি’ মামুনুল। তারকা খেলোয়াড়ের খ্যাতির ব্যাপারটা ফেসবুক থেকে দূরেই সরিয়ে রাখতে চান তিনি, ‘আমার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রেখে দিয়েছি, আত্মীয়স্বজন আর খুব কাছের বন্ধুদের জন্য।’
জীবনের প্রতিও তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিটা এমনই। সুগন্ধি ব্যবহার করেন কিন্তু নির্দিষ্ট কোনো ব্র্যান্ডের প্রতি তাঁর দুর্বলতা নেই।
জীবনটা পুরোপুরিই ফুটবলময় মামুনুলের। সারাক্ষণ এ খেলা নিয়েই ভাবেন তিনি। স্বপ্ন দেখেন দেশের ফুটবলকে নিয়ে যাবেন অন্য উচ্চতায়, আর নিজের খেলোয়াড়ি জীবনের মধ্যেই। দেশকে সাফল্য উপহার দেওয়ার বিষয়টি রীতিমতো তাঁর জীবনের লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে, ‘ফুটবল নিয়ে এটাই আমার স্বপ্ন। কেউ যদি বলে তুমি খেলা ছেড়ে দিলে দেশের ফুটবলের উন্নতি হবে, তাহলে তা-ই সই। আমি ফুটবলই ছেড়ে দেব। আমার কাছে ফুটবলের চেয়ে বড় আর কিছুই হতে পারে না।’
ফুটবলার বলেই হয়তো, জীবনাচরণে ফুটবলের প্রভাবটাই সবচেয়ে বেশি। মনোযোগ দিয়ে বইপত্র পড়ার অভ্যেসটা কোনো দিনই ছিল না। তবে একটি বই পড়েন খুব মনোযোগ দিয়ে। ওটা ফুটবল-সংক্রান্ত একটা প্রকাশনা, ‘কোচ মারুফুল হক বইটা আমাকে কিনে পড়তে দিয়েছিলেন। মিডফিল্ডার বইটা আমি বেশ মনোযোগ দিয়ে পড়েছি আর মুগ্ধ হয়েছি। আমি নিজে একজন মধ্যমাঠের খেলোয়াড়। বইটা পড়ে বুঝতে পেরেছি ফুটবলের কত কিছুই আমাদের অজানা।’
পোশাক নিয়ে খুব যে ভাবেন, তা নয়। তবে রুচিশীল ও আরামদায়ক পোশাকের প্রতিই তাঁর বিশেষ পক্ষপাত। সবচেয়ে বেশি পরেন জিনস ও টি-শার্ট। এতে সব সময়ই আরাম পান। এদিক-ওদিক ঘোরাঘুরি আর বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে আড্ডার সময় তাঁর পরনে থাকে ওই জিনস ও টি-শার্ট। সাধারণ প্যান্টের সঙ্গে ফুলহাতা শার্ট আর চামড়ার জুতো তাঁর আনুষ্ঠানিকতার পোশাক। বিদেশ সফর কিংবা কোনো অনুষ্ঠানে এই পোশাকে দেখা যায় মামুনুলকে। পদযুগলে তাঁর নিত্যসঙ্গী কেডস। মাঝেমধ্যে স্যান্ডেল। পাঞ্জাবি-পাজামার প্রতিও যথেষ্ট দুর্বলতা এই ফুটবলারের।
বিদেশে গেলেই মামুনুলের নজর থাকে নতুন নতুন ডিজাইনের ফুটবল বুটের দিকে। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবে মামুনুলের নিজের ঘরে ঢুকলেই চোখে পড়ে বিভিন্ন কেতা ও ঢংয়ের বুট। অ্যাডিডাস, নাইকি, পুমা—মামুনুলের সংগ্রহে আছে নামকরা প্রায় সব ব্র্যান্ডের বুটই।
ক্রীড়াসামগ্রীর ক্ষেত্রে মামুনুলের পছন্দের ব্র্যান্ড অ্যাডিডাস। জার্মানির এই বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানের যেকোনো জিনিসই পছন্দ তাঁর। জার্সি, বুট, মোজা, শর্টস—অ্যাডিডাসে অদ্ভুত এক আভিজাত্য খুঁজে পান মামুনুল। জীবনে মামুনুলের একমাত্র বিলাসিতা এই অ্যাডিডাসই।
এমন পোশাক পরেন বিশেষ অনুষ্ঠানেসিনেমা দেখতে ভালোবাসেন মামুনুল। হলিউড-বলিউডের সিনেমা বেশি দেখা হয়। তবে দেশের প্রেক্ষাগৃহে ভালো কোনো ছবি এলে সেটা দেখেন যেকোনো মূল্যেই। জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় মুহূর্ত হিসেবে মনে করেন শচীন টেন্ডুলকারের সঙ্গে ‘সেলফি’ তোলার ব্যাপারটি। আইএসএলে তাঁর ক্লাব অ্যাটলেটিকো ডি কলকাতার মালিক ‘দাদা’ সৌরভ গাঙ্গুলীই নাকি টেন্ডুলকারের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন মামুনুলকে।
মাঝেমধ্যে চোখ বন্ধ করে ভাবেন, যদি ফুটবলার না হতেন, যদি বাংলাদেশ ফুটবল দলের অধিনায়ক না হতেন, তাহলে এমন ঘটনা কি ঘটত তাঁর জীবনে? দেশের ফুটবলের কাছে তাই তাঁর আজন্ম ঋণ!
-

Latest

Popular Posts

Popular Posts

Popular Posts