International news - ভারতকে উড়িয়ে ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া

রোহিতকে ফিরিয়ে জনসনের বুনো উল্লাস! পুরো ম্যাচে অস্ট্রেলীয়দের এমন দাপটই দেখা গেল। ছবি: শামসুল হক, সিডনি থেকে
বিরাট কোহলি যখন ফিরলেন, তখনই গ্যালারিতে এক ভারতীয় সমর্থকের চোখে অশ্রু। ম্যাচ তো তখনই শেষ হয়নি। তবে কেন কাঁদছেন এ দর্শক? একেই বুঝি বলে ‘সমর্থকের আতঙ্ক’! আতঙ্কটা শেষমেশ দূর হয়নি। সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৯৫ রানে হেরে বিশ্বকাপ-অধ্যায় শেষ হয়েছে ভারতের।
অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সবচেয়ে বেশি সময় পেয়েছিল ভারত। সেই নভেম্বরে ধোনি-কোহলিরা পা রেখেছিলেন অস্ট্রেলিয়ায়। চার টেস্টের সিরিজের পর ভারত ত্রিদেশীয় সিরিজে খেলেছে চারটি ওয়ানডে। চার ওয়ানডেতেই মহেন্দ্র সিং ধোনির দল ছিল জয়হীন। এমন বাজে পারফরম্যান্সের পরও বিশ্বকাপে ভারতের পারফরম্যান্সটা ছিল কিন্তু দারুণ। প্রতিটি ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয়েছিল আত্মবিশ্বাসী ধোনি-ব্রিগেড। সৌরভ গাঙ্গুলি তো ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’য় নিজের কলামে লিখেছেন, ‘আমার কাছে বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় ম্যাচ আজই। যেখানে দুটো দলের কেউ অন্যের চেয়ে এগিয়ে নেই।’ কিন্তু ম্যাচের ছবিটা তা বলল কই?

৩২৯ রানের বিরাট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিলেন ভারতের দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ান। উদ্বোধনী জুটিতেই আসে ৭৬ রান। এর পরই ছন্দপতন। বিনা উইকেটে ৭৬ রান থেকে ৪ উইকেটে ১০৮। ৩২ রানের ব্যবধানে পড়ে ৪ উইকেট। এরপর ভারতীয়দের স্বপ্ন বেশ কিছুক্ষণ ধরে রাখেন অজিঙ্কা রাহানে ও অধিনায়ক ধোনির পঞ্চম উইকেট জুটি। এ জুটিতে আসে ৭০ রান। জুটি ভাঙেন মিচেল স্টার্ক। ফেরার আগে রাহানের সংগ্রহ ৪৪ রান। তবে ধোনি ছিলেন আরও কিছুক্ষণ। ৪৩ রানের মাথায় মাইকেল ক্লার্কের হাতে জীবন পেয়ে তুলে নিলেন ওয়ানডেতে তাঁর ৫৮ তম ফিফটিতে। স্টিভেন স্মিথের হাতে রানআউটে কাটা পড়ার আগে ধোনির সংগ্রহ সর্বোচ্চ ৬৫ রান। ধোনি ফিরে যাওয়ার পরই একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে যায় ভারতের পরাজয়। খুড়িয়ে চলা ইনিংসটা থামে ২৩৩ রানে। শেষ ২৫ রানেই পড়েছে ভারতের ৫ উইকেট।

মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বিরাট কোহলি ‘বিরাট’ ফ্লপ! জনসনের বলে ১৩ বলে মাত্র ১ রান করে ফিরেছেন কোহলি। মুহূর্তেই টিভি ক্যামেরা খুঁজে ফিরল গ্যালারিতে থাকা তাঁর প্রেমিকা আনুশকা শর্মাকে। বলিউড অভিনেত্রীর চোখে-মুখে তখন বিষাদের ছায়া! সে বিষাদ থেকেই গেল ম্যাচ শেষেও।

শুরু থেকেই ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের চাপে রেখেছিলেন অস্ট্রেলীয় বোলাররা। গতি-সুইংয়ে কাঁপিয়ে তুলেছিলেন ভারতের ব্যাটিং লাইন-আপ। তবে অস্ট্রেলীয় ফিল্ডারদের পিচ্ছিল হাত গলে বেশ কয়বার জীবন পেয়েও সুযোগ খুব একটা কাজে লাগাতে পারেননি ভারতের ব্যাটসম্যানরা। জেমস ফকনার নিয়েছেন সর্বোচ্চ ৩ উইকেট, দুটি করে উইকেট পেয়েছেন মিচেল স্টার্ক ও জনসন।

এর আগে প্রথমে ব্যাট করে স্মিথের অসাধারণ সেঞ্চুরি, সঙ্গে অ্যারন ফিঞ্চের ৮১ রানের সুবাদে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩২৮ রান তোলে অস্ট্রেলিয়া। এ রান তাড়া করতে হলে ভারতকে ইতিহাসই গড়তে হতো। কিন্তু ধোনির দল ইতিহাস গড়ার পথে নয়, হাঁটল দেশের ‘বিমান ধরা’র পথে!

ভারতের বিদায়ে খালি হাতেই ফিরতে হলো উপমহাদেশের দলগুলোকে। ফাইনালে উঠল দুই আয়োজকই। কথা হলো, ২৯ মার্চ ফাইনালে কে জিতবে? বিশ্বকাপ পাবে নতুন চ্যাম্পিয়ন নাকি দেখা যাবে অস্ট্রেলীয়দের দাপট? সেটি না জানা গেলেও একটা কথা নিশ্চিত করেই বলা যায়, এবার শিরোপা যাচ্ছে দক্ষিণ গোলার্ধেই!
-

Latest

Popular Posts

Popular Posts

Popular Posts