চোয়ালের
নিচের অংশের এক টুকরো হাড়। তাতে যুক্ত রয়েছে পাঁচটি দাঁত। ইথিওপিয়ার আফার
অঞ্চলের লেডি–গেরারু এলাকার মাটি খুঁড়ে জীবাশ্মটি (ফসিল) উদ্ধার করা
হয়েছে। এটিই হোমো গণভুক্ত প্রাণীর সবচেয়ে পুরোনো ফসিল বলে একদল গবেষক
গত বুধবার দাবি করেছেন। মানুষও (বৈজ্ঞানিক নাম: হোমো স্যাপিয়েন্স) একই
গণ–এর অন্তর্ভুক্ত।
গবেষণা প্রতিবেদনটি নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। এই আবিষ্কারের ফলে ইঙ্গিত পাওয়া যায়, মানুষের পূর্বসূরিরা লেডি–গেরারুর উন্মুক্ত তৃণভূমি, হ্রদ, নদী ও সক্রিয় আগ্নেয়গিরির কাছাকাছি প্রায় ২৮ লাখ বছর আগে বসবাস করত। সময়টা বিজ্ঞানীদের আগের ধারণার চেয়েও চার লাখ বছর আগের।
ওই গবেষক দলের প্রধান এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ব্রায়ান ভিলমোয়ার বলেন, এটা হচ্ছে মানুষের পূর্বসূরি শাখাভুক্ত প্রজাতির প্রথম ফসিল। চোয়ালের ওই হাড়টির নাম দেওয়া হয়েছে এলডি থ্রিফিফটি–ওয়ান। ইথিওপিয়ার ওই গবেষণাস্থল থেকে ২০১৩ সালে এটি উদ্ধার করা হয়। ফসিলটি কোন প্রজাতির, তা এখনো সুনির্দিষ্ট করা হয়নি।
ফসিলটি আধুনিক মানুষ প্রজাতির আদি কোনো প্রতিনিধির চিহ্ন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এটি সরাসরি হোমো স্যাপিয়েন্স–এর পূর্বসূরি প্রজাতির নয়। কিন্তু তাঁরা ধাঁধায় পড়েছেন এ জন্য যে, ফসিলটি এমন এক সময়ের, যখন মানুষের পূর্বসূরি হোমিনিড প্রজাতিগুলো হারিয়ে যেতে শুরু করেছিল। ভিলমোয়ার বলেন, পূর্ব আফ্রিকা এলাকায় ২০ থেকে ৩০ লাখ বছর আগে যেসব ফসিল পাওয়া যায়, সেগুলো খুবই পাতলা। এমন ফসিল খুব কমই আছে যেগুলো হোমো গণভুক্ত প্রাণীর উৎস সম্পর্কে তথ্য দিতে পারে। তবে সময়টা ছিল মানুষের ক্রমবিকাশের কয়েকটি পর্যায়ের মধ্যে অত্যন্ত আকর্ষণীয় একটি।
এ পর্যন্ত হোমো গণভুক্ত সবচেয়ে প্রাচীন ফসিলটির বয়স প্রায় ২৩ লাখ থেকে ৩২ লাখ বছর। ইথিওপিয়ায় নতুন ফসিলটি দেখে গবেষকেরা মনে করছেন, প্রাণীটি তুলনামূলক দ্রুত রূপান্তরিত হয়েছে। ভিলমোয়ার আরও বলেন, ফসিলের নমুনাটি অবশ্যই উত্তরের চেয়ে বেশি প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। অধিকতর গবেষণার মাধ্যমে এসব প্রশ্নের জবাব মিলতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষক কায় রিড বলেন, নতুন ফসিলটি যে সময়ের, তখন গাছপালার সংখ্যা কম ছিল। জলবায়ু ছিল সম্ভবত তুলনামূলক উষ্ণ ও শুষ্ক। সেখানে টিকে থাকার জন্য প্রাণীটিকে পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়েছিল।
বিজ্ঞান সাময়িকী সায়েন্স–এর উপসম্পাদক অ্যান্ড্রু সাগডেন বলেন, নতুন আবিষ্কারটি আফ্রিকায় মানুষের ক্রমবিকাশ সম্পর্কে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করেছে। এতে করে শুধু যে মানুষের উৎস সম্পর্কে বিস্তারিত জানার সুযোগ হয়েছে, তা নয়। পূর্বসূরিদের বিচরণকালের পরিবেশ সম্পর্কেও নতুন নতুন বিষয়ের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত আরেকটি গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, গবেষকেরা কম্পিউটার টোমোগ্রাফি (সিটি) ও ত্রিমাত্রিক (থ্রিডি) প্রযুক্তি ব্যবহার করে চোয়ালের হাড়ের জীবাশ্মটি বিশ্লেষণ করেছেন। এ প্রক্রিয়ায় হাড়টির বিভিন্ন অংশের ডিজিটাল প্রতিরূপ কম্পিউটারের পর্দায় পুনরায় সংযোজন করা হয়। এতে দেখা যায়, চোয়ালের নিচের অংশটি সরু এবং অস্ট্রালোপিথেকাস আফারেনসিস–এর মতো তুলনামূলক পুরোনো প্রজাতির সঙ্গে অনেকটা মেলে। ২১ লাখ থেকে ১৬ লাখ বছর আগে বসবাসকারী হোমো গণভুক্ত আদি তিনটি প্রজাতির চোয়ালের গঠনে বিস্তর পার্থক্য ছিল।
যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থিত জাদুঘর ন্যাশনাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের অধ্যাপক ক্রিস স্ট্রিংগার বলেন, নতুন এসব গবেষণায় আদি মানুষ সম্পর্কে আরও জটিল একটি চিত্র উঠে এসেছে। এতে মানুষের সংজ্ঞা আসলে কী হওয়া উচিত, সে ব্যাপারেও নতুন করে ভাবার ব্যাপারটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দেখা দিয়েছে। ছোট ছোট দাঁত ও চোয়াল, বড় আকারের মস্তিষ্ক, দীর্ঘ পা, যন্ত্রপাতি তৈরির দক্ষতা অথবা এসবের সমন্বয়ে মানুষকে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে।
গবেষণা প্রতিবেদনটি নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। এই আবিষ্কারের ফলে ইঙ্গিত পাওয়া যায়, মানুষের পূর্বসূরিরা লেডি–গেরারুর উন্মুক্ত তৃণভূমি, হ্রদ, নদী ও সক্রিয় আগ্নেয়গিরির কাছাকাছি প্রায় ২৮ লাখ বছর আগে বসবাস করত। সময়টা বিজ্ঞানীদের আগের ধারণার চেয়েও চার লাখ বছর আগের।
ওই গবেষক দলের প্রধান এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ব্রায়ান ভিলমোয়ার বলেন, এটা হচ্ছে মানুষের পূর্বসূরি শাখাভুক্ত প্রজাতির প্রথম ফসিল। চোয়ালের ওই হাড়টির নাম দেওয়া হয়েছে এলডি থ্রিফিফটি–ওয়ান। ইথিওপিয়ার ওই গবেষণাস্থল থেকে ২০১৩ সালে এটি উদ্ধার করা হয়। ফসিলটি কোন প্রজাতির, তা এখনো সুনির্দিষ্ট করা হয়নি।
ফসিলটি আধুনিক মানুষ প্রজাতির আদি কোনো প্রতিনিধির চিহ্ন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এটি সরাসরি হোমো স্যাপিয়েন্স–এর পূর্বসূরি প্রজাতির নয়। কিন্তু তাঁরা ধাঁধায় পড়েছেন এ জন্য যে, ফসিলটি এমন এক সময়ের, যখন মানুষের পূর্বসূরি হোমিনিড প্রজাতিগুলো হারিয়ে যেতে শুরু করেছিল। ভিলমোয়ার বলেন, পূর্ব আফ্রিকা এলাকায় ২০ থেকে ৩০ লাখ বছর আগে যেসব ফসিল পাওয়া যায়, সেগুলো খুবই পাতলা। এমন ফসিল খুব কমই আছে যেগুলো হোমো গণভুক্ত প্রাণীর উৎস সম্পর্কে তথ্য দিতে পারে। তবে সময়টা ছিল মানুষের ক্রমবিকাশের কয়েকটি পর্যায়ের মধ্যে অত্যন্ত আকর্ষণীয় একটি।
এ পর্যন্ত হোমো গণভুক্ত সবচেয়ে প্রাচীন ফসিলটির বয়স প্রায় ২৩ লাখ থেকে ৩২ লাখ বছর। ইথিওপিয়ায় নতুন ফসিলটি দেখে গবেষকেরা মনে করছেন, প্রাণীটি তুলনামূলক দ্রুত রূপান্তরিত হয়েছে। ভিলমোয়ার আরও বলেন, ফসিলের নমুনাটি অবশ্যই উত্তরের চেয়ে বেশি প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। অধিকতর গবেষণার মাধ্যমে এসব প্রশ্নের জবাব মিলতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষক কায় রিড বলেন, নতুন ফসিলটি যে সময়ের, তখন গাছপালার সংখ্যা কম ছিল। জলবায়ু ছিল সম্ভবত তুলনামূলক উষ্ণ ও শুষ্ক। সেখানে টিকে থাকার জন্য প্রাণীটিকে পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়েছিল।
বিজ্ঞান সাময়িকী সায়েন্স–এর উপসম্পাদক অ্যান্ড্রু সাগডেন বলেন, নতুন আবিষ্কারটি আফ্রিকায় মানুষের ক্রমবিকাশ সম্পর্কে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করেছে। এতে করে শুধু যে মানুষের উৎস সম্পর্কে বিস্তারিত জানার সুযোগ হয়েছে, তা নয়। পূর্বসূরিদের বিচরণকালের পরিবেশ সম্পর্কেও নতুন নতুন বিষয়ের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত আরেকটি গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, গবেষকেরা কম্পিউটার টোমোগ্রাফি (সিটি) ও ত্রিমাত্রিক (থ্রিডি) প্রযুক্তি ব্যবহার করে চোয়ালের হাড়ের জীবাশ্মটি বিশ্লেষণ করেছেন। এ প্রক্রিয়ায় হাড়টির বিভিন্ন অংশের ডিজিটাল প্রতিরূপ কম্পিউটারের পর্দায় পুনরায় সংযোজন করা হয়। এতে দেখা যায়, চোয়ালের নিচের অংশটি সরু এবং অস্ট্রালোপিথেকাস আফারেনসিস–এর মতো তুলনামূলক পুরোনো প্রজাতির সঙ্গে অনেকটা মেলে। ২১ লাখ থেকে ১৬ লাখ বছর আগে বসবাসকারী হোমো গণভুক্ত আদি তিনটি প্রজাতির চোয়ালের গঠনে বিস্তর পার্থক্য ছিল।
যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থিত জাদুঘর ন্যাশনাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের অধ্যাপক ক্রিস স্ট্রিংগার বলেন, নতুন এসব গবেষণায় আদি মানুষ সম্পর্কে আরও জটিল একটি চিত্র উঠে এসেছে। এতে মানুষের সংজ্ঞা আসলে কী হওয়া উচিত, সে ব্যাপারেও নতুন করে ভাবার ব্যাপারটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দেখা দিয়েছে। ছোট ছোট দাঁত ও চোয়াল, বড় আকারের মস্তিষ্ক, দীর্ঘ পা, যন্ত্রপাতি তৈরির দক্ষতা অথবা এসবের সমন্বয়ে মানুষকে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে।