Lifestyle news - ব্যস্ত বলে বই পড়তে মানা?

.  
একাধিক গবেষণায় দেখা যায়, মানুষের পড়ার অভ্যাস ক্রমশ কমছে। অনেকেই এজন্য ব্যস্ততাকে অজুহাত হিসেবে দেখান। কিন্তু নিজের ও দেশের সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে চাইলে বই পড়ার অভ্যাস ধরে রাখতেই হবে। যাঁরা শিক্ষা ও গবেষণার মতো বিষয়কে পেশা হিসেবে নিয়েছেন, তাঁদেরকে প্রাসঙ্গিক বইপত্র পড়তে হয়। পাশাপাশি নিজস্ব কৌতূহল ও আগ্রহ থেকেও অনেকে পড়েন। এ রকম পেশাজীবী বিশেষজ্ঞরা বই পড়ার অভ্যাস ধরে রাখার জন্য ব্যস্ত মানুষদের কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছেন:
বেশি বেশি বই ধার করুন: পাঠাগার বা বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে বই ধার করে পড়তে পারেন। এত বেশি বই নিয়ে আসুন, যেগুলো নির্দিষ্ট সময়ে পড়ে শেষ করতে পারবেন না। ফলে ঘরে স্তূপ জমে যাবে এবং সেগুলো ফেরত দেওয়ার তাড়া থাকবে। কিন্তু কষ্ট করে নিয়ে এসেছেন, না পড়ে কেন ফেরত দেবেন। সেই তাড়া থেকেই আপনি বেশি বেশি পড়ার উৎসাহ পাবেন।
একসঙ্গে একাধিক বই পড়ুন: কেউ কেউ একটি একটি করে বই পড়ে শেষ করেন। কিন্তু একসঙ্গে একাধিক বই পড়ার সুবিধাও আছে। কিছু বই রাতে পড়ার উপযোগী (যেমন: উপন্যাস বা কল্পকাহিনি)। আর প্রবন্ধ বা বিশ্লেষণধর্মী বইগুলো দিনে বা চলতে-ফিরতে গাড়িতে পড়তেই ভালো লাগে। একসঙ্গে বেশি বই ধরলে সময় অনুযায়ী পড়া চালিয়ে যেতে পারবেন।
লক্ষ্য স্থির করে নিন: যে বইটি পড়ছেন, তা বন্ধ করার আগে কত পৃষ্ঠা পর্যন্ত যাবেন, ঠিক করে নিন। এভাবে একটি নিয়ম বা অভ্যাস করে নিলে বই পড়াটা ঠিকই এগোবে। পারলে প্রতিদিন এই লক্ষ্য বা পৃষ্ঠাসংখ্যা একটু একটু করে বাড়ান। একসময় আপনার আগ্রহ বেড়ে যাবে, নিজের অজান্তেই বেশি পড়ে ফেলবেন।
‘উচিত’ বইটি উপেক্ষা করুন: নিজের আনন্দ ও চাহিদা অনুযায়ী পড়ুন। যে বইটি ভালো লাগে না, কিন্তু অন্যরা খুব প্রশংসা করছে, সেটি না পড়লেও চলবে। আপনার আগ্রহ আছে—এমন বিষয়ের ওপর লেখা বইগুলো বাছাই করুন। অনেক বই আছে যেগুলো আপনাকে পড়ায় আটকে রাখে। কয়েক দিন পড়লেই আপনি সে ধরনের বই চিনে ফেলবেন এবং সেগুলোই বেশি বেশি পড়বেন।
দ্রুত পড়ার অভ্যাস করুন: কম সময়ে বেশি বই পড়তে চাইলে দ্রুত এগোতে হবে। এ ক্ষেত্রে কিছু কৌশল প্রয়োগ করা যায়। কলম বা পেনসিল হাতে নিয়ে প্রতি লাইনের নিচে ধরে ধরে পড়লে কিছুটা দ্রুত পৃষ্ঠা পেরোনো যায়। তবে বিষয়বস্তু আকর্ষণীয় হলে এমনিই কাজ হয়।
অ্যাপস ব্যবহার করুন: যান্ত্রিক পর্দায় পড়লে নির্দিষ্ট কিছু অ্যাপ ডাউনলোড করে নিতে পারেন। এসব অ্যাপের সাহায্যে নানা রকমের সুবিধা পাওয়া যায়। যেমন: আলো কমানো বা বাড়ানো, লেখার আকার ছোট-বড় করে নেওয়া, পাতা ওল্টানো ইত্যাদি।
ঘুমানোর আগে পড়ুন: রাতে ঘুমানোর আগে নির্দিষ্ট সময় ধরে বই পড়ার অভ্যাস বেশ ভালো। বইটি আকর্ষণীয় হলে সকালে উঠেও পড়া চালিয়ে যেতে পারেন। এতে ঘুম বা কাজকর্মে যেন কোনো বিঘ্ন না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করুন: নিয়মিত আড্ডা এবং অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বন্ধুদের সঙ্গে বইপত্র নিয়ে আলোচনায় অংশ নিন। এতে অনেক বইয়ের খোঁজখবর পাবেন এবং সেগুলো পড়ার আগ্রহ তৈরি হবে। আপনার পড়া বইগুলো নিয়েও মতামত দিতে পারেন।
চ্যালেঞ্জ নিন এবং হিসাব রাখুন: বই পড়াকে একটা বড় দায়িত্ব বা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিন। যাচাই করে দেখুন, আপনি আসলেই পড়তে পারেন কি না। এক বছরে কতগুলো বই পড়লেন, হিসাব রাখুন। পরবর্তী বছরে নিজেকে ছাড়িয়ে যান।
ই–বুক বনাম ছাপা বই
নানা রকমের বই পড়লে আপনার সৃজনশীলতা বাড়ে, অনেক জটিল সমস্যা সমাধানের সামর্থ্য তৈরি হয়, চিন্তাভাবনার বিকাশ ঘটে।
প্রযুক্তির কল্যাণে এখন হাতের নাগালে এসেছে বই পড়ার বিকল্প উপায়। বড় পর্দার স্মার্টফোন, ট্যাবলেট কম্পিউটার, ই-বুক ও ল্যাপটপেও বড় বই পড়ে ফেলার সুযোগ আছে। অবশ্য সবাই এ ধরনের প্রযুক্তিতে অভ্যস্ত নন। আর কাগজে ছাপা বইয়ের সব সুবিধাও এসব যান্ত্রিক পর্দায় পাওয়া যায় না।
সুবিধা
 ইন্টারনেট ব্যবহার ও অডিও শোনার ব্যবস্থা
 লেখার আকার ছোট-বড় করে সুবিধামতো পড়ার ব্যবস্থা
 হালকা ও সহজে বহনযোগ্য
 একটি যন্ত্রে অসংখ্য বই ধারণ
অসুবিধা
 নিয়মিত চার্জ করতে হয়
 পর্দা থেকে যে আলো বের হয়, তা চোখের ক্ষতি করতে পারে
 নতুন বই আপলোড করতে হলে ইন্টারনেট সংযোগ প্রয়োজন
সুবিধা
 ব্যাটারি লাগে না
 দাম কম হয়
অসুবিধা
 প্রচুর কাগজের প্রয়োজন হয়
 বই রাখার জন্য প্রচুর জায়গা প্রয়োজন
-

Latest

Popular Posts

Popular Posts

Popular Posts