International news - ফের ভারতে সোয়াইন ফ্লু ঝুঁকিতে বাংলাদেশও প্রতিরোধে সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে :স্বাস্থ্যমন্ত্রী

Swine flu or H1N1 Type A Influenza – Symptoms, Prevention and ...
ভারতের সাত প্রদেশে ফের সোয়াইন ফ্লুর ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। কোন কোন প্রদেশে তা মহামারির রূপ নিয়েছে। ইতিমধ্যে সেখানে মারা গেছে ৯২৬ জন, আক্রান্ত হয়েছে ১৬ সহস্রাধিক। বাংলাদেশ সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ ও আসামেও সোয়াইন ফ্লুর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে, তবে অন্য এলাকার চেয়ে ওখানে বিস্তার কম। ভারতে সোয়াইন ফ্লুর ব্যাপক বিস্তারের কারণে বাংলাদেশও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতর ঝুঁকির বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের সভাকক্ষে সোয়াইন ফ্লু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। সভাশেষে তিনি বলেন, সোয়াইন ফ্লুসহ যেকোনো সংক্রামক রোগের বিস্তার মোকাবিলায় বাংলাদেশ প্রস্তুত। ঝুঁকি মোকাবেলায় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশে যাতে এর সংক্রমণ না ঘটে এজন্য আগাম সতর্কতামূলক পদক্ষেপসহ জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। তিনি ভারতের সোয়াইন ফ্লু বিস্তারের কারণে বাংলাদেশের মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। 
সভায় জানানো হয়, সোয়াইন ফ্লু বিস্তার প্রতিরোধে ইতিমধ্যে জেলা পর্যায়ে মেডিক্যাল সার্ভিলেন্স টিম গঠন করা হয়েছে। বিশেষ করে সীমান্ত এলাকার জেলাগুলোতে এই দলগুলোকে সার্বক্ষণিক সতর্ক করে রাখা হয়েছে।
প্রয়োজনীয় ওষুধ সংগ্রহ মজুদ করার নির্দেশনা দিয়ে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বক্ষব্যাধি হাসপাতাল, সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালসহ দেশের ৬৪ জেলার হাসপাতালে এ জন্য বিশেষ ইউনিট পৃথকভাবে খোলার ব্যবস্থা করতে হবে। যদি কোনো ব্যক্তি সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হন তবে সাথে সাথে তাকে  ঐ ইউনিটে প্রেরণ করে দ্রুত চিকিত্সার ব্যবস্থা করতে হবে। এ সময় মন্ত্রী সোয়াইন ফ্লুর মতো বিশেষ রোগের জন্য দক্ষ ও প্রশিক্ষিত চিকিত্সক ও নার্স তৈরির উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি ঢাকা বিমান বন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে স্থাপিত সাতটি থার্মাল স্ক্যানারকে বিদেশ থেকে বিশেষ করে ভারত থেকে আগত যাত্রীদের জ্বর পরীক্ষার কাজে ব্যবহার করার জন্য নির্দেশ দিয়ে বলেন, সব বন্দরে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্য সচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. দীন মো. নূরুল হকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ৫৩ দিন হলো ফের ভারতে সোয়াইন ফ্লুর বিস্তার ঘটেছে। গত বছর সেখানে সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্তদের ২৩ ভাগই মারা যায়।
মহাখালী রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে সোয়াইন ফ্লুর প্রাদুর্ভাব শুরু হয় সাধারণত এপ্রিল-মে মাসে এবং শেষ হয় সেপ্টেম্বরে। তবে জুলাই-আগস্টে সোয়াইন ফ্লুর বিস্তার বেশি হয় বলে আইইডিসিআরের কর্মকর্তারা  জানান।
আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মাহমুদুর রহমান বলেন, সর্ব প্রথম ২০০৯ সালে মেক্সিকোতে সোয়াইন ফ্লুর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। শুকর থেকে মানুষের দেহে সোয়াইন ফ্লু ভাইরাস প্রবেশ করে। ঐ সময় সারাবিশ্বে সোয়াইন ফ্লু মহামারি আকারে দেখা দেয়। বাংলাদেশেও সোয়াইন ফ্লু প্রাদুর্ভাব হয়েছিল। তবে পরিমাণে ছিল কম। ২০০৯ সালে সোয়াইন ফ্লু এইচ-১, এন-১ ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়েছিল। ২০১০ সালে এদেশে সোয়াইন ফ্লু এইচ-১, এন-১ ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়েছিল। তবে ২০১৩ সাল থেকে সোয়াইন ফ্লুর এইচ-১, এন-১ ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। স্বাভাবিক ইনফ্লুয়েঞ্জা ছিল। সোয়াইন ফ্লুর এইচ-১, এন-১ ভাইরাস মারাত্মক। আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে সোয়াইন ফ্লুর সঙ্গে যদি অন্যান্য জটিল রোগ কিংবা অন্য ভাইরাস সংক্রমিত রোগ থাকে তাহলে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যুর ঝুঁকির সম্ভাবনা বেশি বলে তিনি জানান।
প্রতিরোধ
আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মাহমুদুর রহমান ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা বলেন, সোয়াইন ফ্লু নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এদেশে সোয়াইন ফ্লুর ওষুধ ও ভ্যাকসিন রয়েছে। প্রতিবছর সোয়াইন ফ্লুর ভ্যাকসিন নিলে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। নিয়মিত হাত সাবান দিয়ে ধুতে হবে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। হাঁচি-কাশি দেয়ার সময় মুখে রুমাল কিংবা টিস্যু পেপার ব্যবহার করার পরামর্শ দেন তারা। প্রচণ্ড জ্বর সঙ্গে সর্দি-কাশি ও শ্বাস কষ্ট হলো সোয়াইন ফ্লুর লক্ষণ।
-

Latest

Popular Posts

Popular Posts

Popular Posts