দক্ষিণ-পূর্ব
এশিয়ার প্রত্যন্ত এক অঞ্চলে ভিন্ন ধরনের যুদ্ধে নেমেছে দূর-নিয়ন্ত্রিত
উড়ন্ত যান বা ড্রোন। ড্রোনের এই যুদ্ধ কোনো বিদ্রোহী গোষ্ঠী বা
জঙ্গিদের বিরুদ্ধে নয়, সংক্রামক রোগ ম্যালেরিয়ার জীবাণুর বিরুদ্ধে।
ব্রুনেই, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়াজুড়ে বিস্তৃত বোর্নিও দ্বীপের মালয়েশিয়া অংশে একদল গবেষক ড্রোন ব্যবহার করে ম্যালেরিয়ার জীবাণু (বৈজ্ঞানিক নাম প্লাসমোডিয়াম নোলেসি বা পি. নোলেসি) ছড়িয়ে পড়া এলাকার একটি মানচিত্র তৈরি করছেন। এতে জানা যাবে রোগটির বিস্তারের কারণ এবং তা রোধে করণীয় সম্পর্কে। মালয়েশিয়া সরকারের একটি কর্মসূচির আওতায় এই মানচিত্র তৈরি করা হচ্ছে। এ-সংক্রান্ত একটি গবেষণা প্রতিবেদন ট্রেন্ডস ইন প্যারাসাইটোলজি সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট গবেষক যুক্তরাজ্যের লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের শিক্ষক ক্রিস ড্রেকলি আশা প্রকাশ করেন, ম্যালেরিয়ার জীবাণু ছড়িয়ে পড়া সব অঞ্চলের মানচিত্র তৈরির মাধ্যমে বানর থেকে মানুষের শরীরে কীভাবে রোগটি ছড়িয়ে পড়ছে, তা জানা যাবে।
ড্রেকলি ও তাঁর সহকর্মীদের গবেষণায় ব্যবহৃত সেন্সফ্লাই ইবি নামক ড্রোনটি ছোট হলেও একটি ক্যামেরা বহন করতে পারে। এটি মানুষের মধ্যে পি. নোলেসি বিস্তার লাভকারী নির্দিষ্ট এলাকার ওপর দিয়ে ওড়ার সময় নিচের ভূ-প্রকৃতি, চাষাবাদ ইত্যাদির ছবি তোলে। পরে সেই ছবি থেকে তৈরি করা হয় মানচিত্র ও ভূ-প্রকৃতির ডিজিটাল নমুনা। সেন্সফ্লাই ড্রোনটি টানা ৫০ মিনিট উড়তে পারে এবং একই সঙ্গে ১৬ মেগাপিক্সেল ক্ষমতার ক্যামেরায় ছবি তুলতে পারে।
গবেষকেরা বলেন, তাঁরা যে মানচিত্র তৈরি করছেন, তা থেকে নির্দিষ্ট এলাকাটিতে মানুষ ও মশার চলাফেরা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাওয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (জিপিএস) প্রযুক্তি ব্যবহার করে মানুষ ও বানরের চলাফেরার তথ্য নেওয়া হয়। এ জন্য স্থানীয় লোকজনকে জিপিএস যন্ত্র বহন করতে দেওয়া হয় আর ম্যাকাক বানরের গলায় লাগিয়ে দেওয়া হয় জিপিএস যন্ত্র সংযুক্ত বিশেষ কলার বা গলাবন্ধনী। জিপিএস থেকে পাওয়া তথ্য অনুসরণ করে জানা যাবে মানুষ ও ম্যাকাক কীভাবে ও কোথায় একে অপরের সংস্পর্শে আসে। আর ড্রোনের মাধ্যমে তোলা ছবি থেকে ওই স্থান সম্পর্কে আরও তথ্য পাওয়া যাবে।
পি. নোলেসি সম্পর্কে গবেষকেরা বলেন, আগে রোগটিতে আক্রান্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত করা সহজ ছিল। বনে-জঙ্গলে কিছুদিন অবস্থানকারী প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যেই শুধু এই পরজীবীর সংক্রমণ দেখা যেত। তবে এখন এমন মানুষের মধ্যেও রোগটি দেখা যাচ্ছে, যারা কখনো বনে যায়নি। এমনকি শিশুদের মধ্যেও পি. নোলেসি সংক্রমিত হচ্ছে। ফলে গবেষকেরা মনে করছেন, কৃষিজমি ব্যবহারের ধরনের পরিবর্তন আসায় রোগের বিস্তারের ধরনও পাল্টাচ্ছে। তবে এই ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তাই কী কারণে এটি ঘটছে, তা খুঁজে বের করতেই ড্রোন ব্যবহার করে তৈরি করা হচ্ছে রোগ ছড়িয়ে পড়া অঞ্চলের মানচিত্র ও ভূ-প্রকৃতির নমুনা।
ড্রেকলি বলেন, ড্রোন ব্যবহার করে নির্দিষ্ট অঞ্চলের ছবি তোলার পাশাপাশি ম্যালেরিয়া রোগটির বাহক ম্যাকাক বানর সম্পর্কেও নানা তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সম্প্রতি একটি উড্ডয়নে ড্রোনের মধ্যে অবলোহিত রশ্মি (ইনফ্রারেড) ব্যবহার করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ড্রোন দিয়ে ম্যাকাকের অবস্থান শনাক্ত করার পাশাপাশি কোনো এলাকায় অবস্থানকারী প্রাণীটির সংখ্যাও জানা যায়। এ ছাড়া রোগ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য দায়ী মশার বিস্তারও সম্পর্কেও জানা যাচ্ছে।
রোগ বিস্তারের ধরন ও কারণ নির্ণয়ে ড্রোনের ব্যবহার নতুন হলেও আকাশ থেকে ছবি তুলে রোগের বিস্তারের ব্যাপারে গবেষণা একেবারে নতুন নয়। এ ধরনের কাজে আগে ব্যবহার করা হতো পৃথিবীর কক্ষপথে অবস্থানকারী কৃত্রিম উপগ্রহের (স্যাটেলাইট) সাহায্যে তোলা ছবি। তবে ড্রোনের সাহায্যে তোলা ছবি স্যাটেলাইটের ছবির চেয়ে অনেক স্পষ্ট
ব্রুনেই, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়াজুড়ে বিস্তৃত বোর্নিও দ্বীপের মালয়েশিয়া অংশে একদল গবেষক ড্রোন ব্যবহার করে ম্যালেরিয়ার জীবাণু (বৈজ্ঞানিক নাম প্লাসমোডিয়াম নোলেসি বা পি. নোলেসি) ছড়িয়ে পড়া এলাকার একটি মানচিত্র তৈরি করছেন। এতে জানা যাবে রোগটির বিস্তারের কারণ এবং তা রোধে করণীয় সম্পর্কে। মালয়েশিয়া সরকারের একটি কর্মসূচির আওতায় এই মানচিত্র তৈরি করা হচ্ছে। এ-সংক্রান্ত একটি গবেষণা প্রতিবেদন ট্রেন্ডস ইন প্যারাসাইটোলজি সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট গবেষক যুক্তরাজ্যের লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের শিক্ষক ক্রিস ড্রেকলি আশা প্রকাশ করেন, ম্যালেরিয়ার জীবাণু ছড়িয়ে পড়া সব অঞ্চলের মানচিত্র তৈরির মাধ্যমে বানর থেকে মানুষের শরীরে কীভাবে রোগটি ছড়িয়ে পড়ছে, তা জানা যাবে।
ড্রেকলি ও তাঁর সহকর্মীদের গবেষণায় ব্যবহৃত সেন্সফ্লাই ইবি নামক ড্রোনটি ছোট হলেও একটি ক্যামেরা বহন করতে পারে। এটি মানুষের মধ্যে পি. নোলেসি বিস্তার লাভকারী নির্দিষ্ট এলাকার ওপর দিয়ে ওড়ার সময় নিচের ভূ-প্রকৃতি, চাষাবাদ ইত্যাদির ছবি তোলে। পরে সেই ছবি থেকে তৈরি করা হয় মানচিত্র ও ভূ-প্রকৃতির ডিজিটাল নমুনা। সেন্সফ্লাই ড্রোনটি টানা ৫০ মিনিট উড়তে পারে এবং একই সঙ্গে ১৬ মেগাপিক্সেল ক্ষমতার ক্যামেরায় ছবি তুলতে পারে।
গবেষকেরা বলেন, তাঁরা যে মানচিত্র তৈরি করছেন, তা থেকে নির্দিষ্ট এলাকাটিতে মানুষ ও মশার চলাফেরা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাওয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (জিপিএস) প্রযুক্তি ব্যবহার করে মানুষ ও বানরের চলাফেরার তথ্য নেওয়া হয়। এ জন্য স্থানীয় লোকজনকে জিপিএস যন্ত্র বহন করতে দেওয়া হয় আর ম্যাকাক বানরের গলায় লাগিয়ে দেওয়া হয় জিপিএস যন্ত্র সংযুক্ত বিশেষ কলার বা গলাবন্ধনী। জিপিএস থেকে পাওয়া তথ্য অনুসরণ করে জানা যাবে মানুষ ও ম্যাকাক কীভাবে ও কোথায় একে অপরের সংস্পর্শে আসে। আর ড্রোনের মাধ্যমে তোলা ছবি থেকে ওই স্থান সম্পর্কে আরও তথ্য পাওয়া যাবে।
পি. নোলেসি সম্পর্কে গবেষকেরা বলেন, আগে রোগটিতে আক্রান্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত করা সহজ ছিল। বনে-জঙ্গলে কিছুদিন অবস্থানকারী প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যেই শুধু এই পরজীবীর সংক্রমণ দেখা যেত। তবে এখন এমন মানুষের মধ্যেও রোগটি দেখা যাচ্ছে, যারা কখনো বনে যায়নি। এমনকি শিশুদের মধ্যেও পি. নোলেসি সংক্রমিত হচ্ছে। ফলে গবেষকেরা মনে করছেন, কৃষিজমি ব্যবহারের ধরনের পরিবর্তন আসায় রোগের বিস্তারের ধরনও পাল্টাচ্ছে। তবে এই ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তাই কী কারণে এটি ঘটছে, তা খুঁজে বের করতেই ড্রোন ব্যবহার করে তৈরি করা হচ্ছে রোগ ছড়িয়ে পড়া অঞ্চলের মানচিত্র ও ভূ-প্রকৃতির নমুনা।
ড্রেকলি বলেন, ড্রোন ব্যবহার করে নির্দিষ্ট অঞ্চলের ছবি তোলার পাশাপাশি ম্যালেরিয়া রোগটির বাহক ম্যাকাক বানর সম্পর্কেও নানা তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সম্প্রতি একটি উড্ডয়নে ড্রোনের মধ্যে অবলোহিত রশ্মি (ইনফ্রারেড) ব্যবহার করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ড্রোন দিয়ে ম্যাকাকের অবস্থান শনাক্ত করার পাশাপাশি কোনো এলাকায় অবস্থানকারী প্রাণীটির সংখ্যাও জানা যায়। এ ছাড়া রোগ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য দায়ী মশার বিস্তারও সম্পর্কেও জানা যাচ্ছে।
রোগ বিস্তারের ধরন ও কারণ নির্ণয়ে ড্রোনের ব্যবহার নতুন হলেও আকাশ থেকে ছবি তুলে রোগের বিস্তারের ব্যাপারে গবেষণা একেবারে নতুন নয়। এ ধরনের কাজে আগে ব্যবহার করা হতো পৃথিবীর কক্ষপথে অবস্থানকারী কৃত্রিম উপগ্রহের (স্যাটেলাইট) সাহায্যে তোলা ছবি। তবে ড্রোনের সাহায্যে তোলা ছবি স্যাটেলাইটের ছবির চেয়ে অনেক স্পষ্ট