আইন
প্রয়োগকারী
সংস্থাকে টার্গেট করে ভয়ঙ্কর অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা চলছে। শুধু তাই নয়, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও
বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিও রয়েছেন দুর্বৃত্তদের
এই নিশানায়। একই সঙ্গে রাজধানীসহ
গুরুত্বপূর্ণ
কয়েকটি শহর ব্ল্যাকআউট করার ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। চলমান পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করার প্রয়াসে একটি মহল তাদের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে- এমন উল্লেখ করে একটি গোয়েন্দা
সংস্থা তাদের প্রতিবেদন তৈরি করেছে।
তবে এরই মধ্যে এ
বিষয়গুলো সরকারের উচ্চপর্যায়কে অবহিত করার পর ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা এবং পুলিশ ও বর্ডার গার্ডের টহলগুলোকে সতর্কতামূলক বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দেওয়া
হয়েছে।
এ বিষয়ে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে
বলেন, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ঠেকাতে এ মুহূর্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী
বাহিনীর চেইন অব কমান্ড শক্তিশালী
এবং গোয়েন্দা
কার্যক্রমে আরও গতি নিয়ে আসা দরকার। গোয়েন্দা কার্যক্রমে শুধু গতি এলেই হবে না, গোয়েন্দা কার্যক্রমে কঠোর মনিটরিংও নিশ্চিত করা প্রয়োজন। নইলে এ পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন,
আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা যে নাশকতাকারীদের সঙ্গে
হাত মেলাচ্ছেন না এ বিষয়টিও
নিশ্চিত করে বলা
যাচ্ছে না। নইলে নাশকতা বন্ধ হচ্ছে না কেন?
গোয়েন্দা
সূত্র জানায়, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের টার্গেট করে তাদের গাড়িতে এবং জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা
করেছে একটি গোষ্ঠী। জামায়াত-শিবিরসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো
নেপথ্য থেকে দুর্বৃত্তদের মদদ
দিচ্ছে। সম্প্রতি
রাজধানীর নিউমার্কেট থানায় গ্রেফতারকৃত আন্দোলনকারী এক নেতার কাছ থেকে ইতিমধ্যে এ ধরনের খবরের সত্যতা খুঁজে পেয়েছেন গোয়েন্দারা। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র-প্রবাসী ব্লগার ড.
অভিজিৎ রায়কে হত্যাও নীলনকশার
একটি অংশ বলে
ধারণা গোয়েন্দাদের। এ ছাড়া গতকাল কমলাপুর রেল স্টেশনের ‘আইসিডি’তেও আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এরই মধ্যে
দুর্বৃত্তরা অব্যাহত রেখেছে
গুরুত্বপূর্ণ
ব্যক্তিদের বাসস্থান এবং তাদের যাতায়াতের সম্ভাব্য স্থানগুলো রেকি করার কাজ। তুলনামূলকভাবে সহজ টার্গেটের দিকেই প্রাথমিক নজর দুর্বৃত্তদের। এ ছাড়াও একইভাবে বিদ্যুৎ
কেন্দ্র ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো
রেকি করা অব্যাহত
রেখেছে তারা।
রাজধানীসহ গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলো ব্ল্যাকআউট করার ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি এড়াতে ওই গোয়েন্দা প্রতিবেদনেই আইন
প্রয়োগকারী সংস্থার টহল গাড়িগুলোকে এবং
চেকপোস্টগুলোতে
বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। সন্দেহভাজনদের ওপর বিশেষ নজরদারির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিয়া রহমান বলেন, ‘অস্থিতিশীল পরিস্থিতি আমাদের কারোরই কাম্য নয়। তবে
দুঃখের বিষয় হলো এখন পর্যন্ত আমরা
আইনশৃঙ্খলা
রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো কম্বিং অপারেশন দেখতে পাইনি। গোয়েন্দা কার্যক্রমেও কেন জানি ভাটা চলে এসেছে।
তাহলে কীভাবে নাশকতা দমন হবে?’
তিনি
আরও বলেন, এর বাইরে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বিশ্বাস করে এমন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ খুবই দরকার। সূত্র আরও জানায়, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার
দুর্নীতিগ্রস্ত
সদস্যদের মাধ্যমেই অভিযান এবং অবস্থানের খবর আগেভাগেই জেনে যাচ্ছে নাশকতাকারীরা। যারা দায়িত্বনিষ্ঠ তাদের মনোবল ভেঙে দিতেই দুর্বৃত্তরা হামলার টার্গেট করছে বলে
জানা গেছে। এ টার্গেট থেকে বাদ নেই
বর্ডার গার্ড
বাংলাদেশের (বিজিবি) টহল গাড়িগুলোও। নাশকতাকারীদের দ্বারা আক্রান্ত হলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে- জানতে চাইলে বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, এখন পর্যন্ত বিজিবির সদস্যরা পেশাদার আচরণ করে আসছেন। তবে ভবিষ্যতে আক্রান্ত হলে তারাও বসে থাকবেন না। পরিস্থিতি অনুযায়ী যা প্রয়োজন তাই করা হবে বলে জানান তিনি।
এটা কোনোভাবে বরদাশত করা হবে না।