তারুণ্য মানেই উচ্ছ্বাস, এই উচ্ছ্বাসকে স্থায়ী রাখতে শারীরিক সুস্থতার
বিকল্প নেই। নিজেকে সুন্দর এবং সুস্থভাবে উপস্থাপন করতে কে না চায়! তাই
তারুণ্যের এই সময়ে নিজেকে ফিট রাখাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ফিট থাকার সূত্র
জানাচ্ছেন আহসান রনি
ওজন কমানোর কথা ভাবলেই প্রথমেই মাথায় আসে
খাওয়াদাওয়ায় লাগাম টানার ব্যাপারটি। নানা ধরনের ভারী খাবার খাওয়ার অভ্যাসটি
ত্যাগ করাই ভালো। শুধু খেতে ভালো তাই বলে অনেক খেয়ে ফেললাম—এমন অভ্যাসও
পরিহার করা জরুরি। হয়তো রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে চটপটি বা ফুচকা দেখে একটু
চেখে দেখার জন্য প্রাণ প্রায় ওষ্ঠাগত, একটু মনটাকে দমিয়ে এড়িয়ে আসুন। তবে এ
ক্ষেত্রে মনে রাখবেন জীবন থেকে যেন সমস্ত রস উধাও হয়ে না যায়। যতটুকু যাই
খাচ্ছেন উপভোগ করে খান, দেখা গেল নিয়ম ভেঙে একদিন একটু বিরিয়ানি বেশি খেয়েই
ফেললেন। দুশ্চিন্তার কারণ নেই। পরেরদিন আরেকটু বেশি এক্সারসাইজ করুন।
প্রতিদিন তাজা ফল ও সবজি, শস্যদানা, দুধ ও দুধ জাতীয় খাবার এবং উচ্চমাত্রার
প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। এসবের পাশাপাশি মাল্টি ভিটামিন খাওয়াও
জরুরি। সুস্থতার অন্যতম চাবিকাঠি বিশুদ্ধ পানি পান করা। পানি শরীরকে
ডিহাইড্রেশনের কবল থেকে রক্ষা করে, মেটাবলিজমকে সচল রাখে। শুধু তাই নয়,
পানি শরীরের ওজন কমায়, ত্বক সুস্থ রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
ক্লাসে বা টিউটরের কাছে যেতে দেরি হচ্ছে এই অজুহাতে বেশিরভাগই তরুণ সকালের
নাস্তা না করেই বের হয়ে যায়। নিয়মিত সকালের নাস্তা খেয়ে নিন, কারণ এটি
আপনাকে সারাদিন চলতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, নাস্তা না করলে মুটিয়ে
যাওয়ার আশঙ্কা থাকে অনেক বেশি। তাই প্রতিদিন নাস্তা করুন। আর নাস্তায় ফল,
দুধ, ডিম, রুটি বা পরোটা, টোস্ট এসব খাবার রাখার চেষ্টা করুন। এসব সম্ভব না
হলে রুটি আর সবজি ভরপেট খান। বর্তমানে তরুণদের মাঝে তৈলাক্ত ফাস্ট ফুড
গ্রহণের প্রবণতা অনেক বেশি। অনেকে ঘরে তৈরি খাবার না খেয়ে বাইরের বার্গার,
ফ্রাইড চিকেন, পিত্জা, টিপস, কোমল পানীয়সহ বিভিন্ন ধরনের ফাস্ট ফুড খান।
এসব খাবার শরীরের হজম শক্তি কমিয়ে দেয়। এতে নানা রোগ অনায়াসেই বাসা বাঁধে
শরীরে। আর সবকিছুতেই তাড়াতাড়ি করা তরুণদের একটা ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। খাবার
নিয়েও তাদের তাড়াহুড়োর কমতি নেই। তাড়াহুড়ো না করে যত জলদিই থাকুক না কেন
ধীরে-সুস্থে খাবার শেষ করুন। আরেকটি কথা, পেট ভরে গেলে জোর করে না খাওয়াই
ভালো। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।
জিমে যাতায়াত
আজকাল
আড্ডায় কিংবা চলতে-ফিরতে কথাচ্ছলে কাউকে ঘটা করে ‘আমি জিমে যাচ্ছি’ কথাটা
বলতে পারা অনেকটা ফ্যাশনই হয়ে গেছে। জিমে ভর্তি হওয়ার পূর্বে আপনার
ফিটনেসের প্ল্যানিং করে নিন। বাড়ির কাছাকাছি কোনো জিমে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা
করুন, এতে টাইম ম্যানেজমেন্ট খুব ভালো হবে। জিমের ট্রেনারের সাথে নিজের
ফিটনেস গোল বা লক্ষ্য কী তা শেয়ার করুন এবং সে অনুযায়ী ট্রেনারের দেওয়া
লাইন-আপ ফলো করুন। জিমের জন্য নির্দিষ্ট পোশাক, জুতা, টাওয়েল, ব্যাগসহ
প্রয়োজনীয় জিনিস বাছাই করুন এবং জিমে যাওয়ার সময় নিজের সাথে রাখুন। আস্তে
আস্তে জিমের সময় বাড়ান। এতে এক্সারসাইজের ধকলটা শরীর ও মন সহজেই মানিয়ে
নিতে পারবে। জিমের ট্রেনার বা পরামর্শক প্রদত্ত খাদ্যতালিকা সব সময় মেনে
চলুন। হঠাত্ করেই জিমে যাওয়া বন্ধ করবেন না। বরং নিয়মিত কয়েক মাস যাওয়া-আসা
করুন দেখবেন এটা নিত্যদিনের কাজের একটা অপরিহার্য রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্পেশাল টিপস
l ধূমপান বা যেকোনো মাদক গ্রহণের অভ্যাস থাকলে তা ছেড়ে দিতে হবে।
l যারা আচরণগতভাবে অলস, তাদের কায়িক পরিশ্রমের কাজ না থাকলে কাজ খুঁজে বের করে কাজ করতে হবে।
l সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার চেষ্টা করুন।
l প্রাপ্ত বয়স্ক সকলের জন্য কমপক্ষে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে।
সকালে, বিকালে অথবা রাতে কমপক্ষে এক থেকে দুই ঘণ্টা শারীরিক ব্যায়াম করুন।
l সব বয়সীদের জন্য হাঁটা একটি অতি উত্তম ব্যায়াম।
l প্রতিদিন সকালে প্রচুর পানি পান করুন।
l বেশি করে শাক-সবজি বা ফলমূল খান।
l চা বা কফি পরিমাণমতো পান করা ভালো, কিন্তু অধিক পান করা স্বাস্থ্যর জন্য ক্ষতিকর।
মডেল শোভা