যেসব কৃষক সময়মত কৃষিঋণ পরিশোধ করতে পারেননি, তাদের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে
সার্টিফিকেট মামলা না করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সাথে
ইতোমধ্যে যেসব মামলা হয়েছে এবং যাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি
হয়েছে তাদের ঋণ পুনঃতফসিল করে মামলা থেকে রেহাই দিতেও বলা হয়েছে। গতকাল
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ৬ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা
পরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করে এসব নির্দেশনা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বৈঠক শেষে
আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস
কে সুর চৌধুরী।
তিনি বলেন, সামান্য ঋণের জন্য ২ লাখের মতো
কৃষকের বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১০ হাজার
কৃষকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এসব কৃষক ভয়ে পালিয়ে
বেড়াচ্ছেন বলেও জানা গেছে। তাই এসব কৃষকের ঋণ পুনঃতফসিল করে তাদের মামলা
নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশপাশি যেসব মামলা হয়েছে তা ছলেনামার
(আপোষরফার ভিত্তিতে) মাধ্যমে মামলা প্রত্যাহার করে কৃষকদের হয়রানি বন্ধের
নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আগামীতে কৃষকের ঋণ পেতে যেন কোন সমস্যা না
হয় সে বিষয়ে উদ্যোগ নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
ডেপুটি গভর্নর বলেন, ভবিষ্যতে যাতে কৃষিঋণ তামাদি (খেলাপি) না হয় সেজন্য
নজরদারি বাড়ানো এবং কৃষকদের মধ্যে সচেতনা বৃদ্ধি করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে আদায় প্রক্রিয়া বাড়ানো, যেসব কৃষক সময়মত ঋণ পরিশোধ করবে তাদেরকে
পুরস্কৃত করার বিষয়েও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতার
কারণে কৃষকরা যে ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে তা কাটিয়ে উঠতে কোন ধরনের সহায়তার
প্রয়োজন হলে বাংলাদেশ ব্যাংক সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে বলে জানান তিনি। বৈঠকে
কৃষিঋণ বিতরণ বাড়ানোর তাগিদ দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরের
প্রথম ৭ মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) মোট ৮ হাজার ৪৮৮ কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণ
হয়েছে যা লক্ষ্যমাত্রার ৫৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছর মোট ১৫ হাজার ৫০০ কোটি
টাকার কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের
নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা এবং কৃষিঋণ ও আর্থিক সেবাভুক্তি বিভাগের
মহাব্যবস্থাপক প্রভাষ চন্দ্র মল্লিক উপস্থিত ছিলেন।