National news - সুপেয় পানির তীব্র সংকট

মংলার চিলা গ্রামের তুলসী বাবুর ছোট্ট পুকুর থেকে পানি সংগ্রহ করে ১০ গ্রামের মানুষ। সম্প্রতি তোলা ছবি l প্রথম আলোবাগেরহাটের মংলা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে সুপেয় পানির তীব্র সংকট। ফলে এই এলাকার লক্ষাধিক মানুষকে পুকুরের পানিই পান করতে হচ্ছে। কিন্তু মিঠা পানির পুকুরও এখানে কম। ফলে পানির জন্য নারীদের ছুটতে হচ্ছে মাইলের পর মাইল।
উপজেলার চাঁদপাই, সোনাইলতলাসহ কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে জানা যায়, এখানকার অগভীর নলকূপগুলোতে লোনা পানি ওঠে। এ কারণে এখানকার মানুষ বর্ষা মৌসুম ছাড়া অন্য সময়ে পুকুরের পানি খেয়ে থাকে। উপজেলার নির্দিষ্ট কয়েকটি পুকুর থেকে তারা পানির চাহিদা মেটাচ্ছে। কিন্তু¦দীর্ঘদিন খনন না করায় শুকনো মৌসুমে এই পুকুরগুলো শুকিয়ে যায়। ফলে সুপেয় পানির সংকট প্রকট আকার ধারণ করে।
উপজেলার চাঁদপাই ইউনিয়নের কানাইনগর গ্রামের শিউলী বেগম চার মাইল পেরিয়ে আসেন তুষার বাবুর পুকুরে পানি নিতে। শিউলী বলেন, ‘আসতি-যাতি এক ঘণ্টারও বেশি লাগে। সকালে দুইবার যাই, বিকালে দুইবার যাই। সারা দিনে পানির জন্য চাইর ঘণ্টা সময় যায়, কষ্টের কথা আর কী কব? চাইর ঘণ্টা খাটলি দুই শ টাহা পাতাম। কিন্তু¦পানি ছাড়া বাঁচব কি এইরে?’ চাঁদপাই ও চিলা ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানির জন্য ওই একটি পুকুরের ওপর নির্ভর করে।
সোনাইলতলা ইউনিয়নের জয় খাঁ গ্রামের আবদুল কালাম বলেন, তাঁদের গ্রামের মিঠা পানির একমাত্র পুকুরের ওপর উপজেলার চারটি ইউনিয়নের মানুষ নির্ভরশীল।
চিলা গ্রামের অসীম মণ্ডল বলেন, ক্ষেত্রবিশেষে ১০-১৫ কিলোমিটার দূরে গিয়ে নারীদের এক কলস খাওয়ার পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে। পাশের রামপাল উপজেলার একটি পুকুরের পানি ব্যবহার করছে চার গ্রামের মানুষ। আর কেউ কেউ রিকশা-ভ্যানওয়ালাদের কাছ থেকে ২৫ লিটারের এক পাত্র পানি ২০ টাকায় কিনছে। গ্রামের দরিদ্র মানুষের জন্য এ যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।
মিঠেখালী গ্রামের আ. কাদের বলেন, ‘সেই ব্রিটিশ আমল দইরে দেহে আসতিছি পানির কষ্ট। তারপর পাকিস্তান শাসন গেল, বাংলাদেশ স্বাধীন অলো, মেলা সরকার ক্ষমতায় আসলো-গ্যালো। কিন্তু¦ আমাগে পানির কষ্ট দূর অলো না।’
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার বলেন, ‘আমাদের এই এলাকায় পুকুর খনন বা সংস্কারের জন্য আলাদা কোনো বরাদ্দ নেই। গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে উপজেলায় তিনটি মিঠা পানির পুকুর খনন করেছি। কিন্তু¦প্রয়োজনের তুলনায় সেটা খুবই অপ্রতুল।’ এ ছাড়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর উপজেলাবাসীকে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার জন্য কিছু পানির ট্যাংক দেয়।
-

Latest

Popular Posts

Popular Posts

Popular Posts