যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন সিঙ্গাপুরের প্রতিষ্ঠাতা
নেতা লি কুয়ান ইউ’র শেষকৃত্যানুষ্ঠানে মার্কিন দলের নেতৃত্ব দেবেন। হোয়াইট
হাউসের এক বিবৃতিতে একথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার
পাঠানো প্রতিনিধিদলে সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারও
থাকবেন। আধুনিক সিঙ্গাপুরের রূপকার লি’কে রোববার সমাহিত করা হবে। তার
শেষকৃত্যানুষ্ঠানে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের
নেতারা অংশ নেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত সোমবার লি ৯১ বছর বয়সে
মারা যান। তাকে পার্লামেন্ট প্রাঙ্গণে শায়িত করে রাখা হয় বুধবার। তাকে শেষ
বারের মতো দেখতে হাজার হাজার মানুষ লাইনে দাঁড়ান। লম্বা লাইন ধরে একে একে
এসে তারা লি’র প্রতি শ্রদ্ধা জানান। সিঙ্গাপুরকে বিশ্বের অন্যতম
গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কেন্দ্রে পরিণত করেন লি কুয়ান। তার মৃত্যুতে এক
সপ্তাহের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করছে সিঙ্গাপুর।
৭১৬ বর্গ
কিলোমিটার আয়তনের নগররাষ্ট্র সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে লি দেশকে
নেতৃত্ব দিয়েছেন ৩১ বছর। তার পূর্বপুরুষ চীন থেকে এই দ্বীপে এসেছিলেন তিন
পুরুষ আগে। তার নেতৃত্বেই ব্রিটিশ সামরিক ঘাঁটি থেকে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ
মাথপিছু আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে ৫৫ লাখ মানুষের দেশ সিঙ্গাপুর। এ কারণে
তাকে বলা হয় আধুনিক সিঙ্গাপুরের জনক। এই সাফল্যের জন্য তিনি সারা বিশ্বে
প্রশংসিত হয়েছেন। ১৯৫৪ সালে পিপলস অ্যাকশন পার্টির (পিএপি) গোড়াপত্তন করে
৪০ বছর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন লি। সেই পিএপি এখনো সিঙ্গাপুর
শাসন করছে, পার্লামেন্টে বিরোধী দলের সদস্য আছেন মাত্র ছয়জন।
ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হওয়ার পর ১৯৬৩ সালে মালয়েশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়
সিঙ্গাপুর, যদিও তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। মতাদর্শগত দ্বন্দ্বের কারণে
মালয়েশিয়ার সঙ্গ ছেড়ে অল্প দিনের মধ্যেই পূর্ণাঙ্গ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে
যাত্রা শুরু করে সিঙ্গাপুর। দারিদ্র ও অপরাধে জর্জরিত এই বন্দর শহরটি পরের
তিন দশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যায়। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে
প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করার পর ১৯৯০ সালে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ান লি।