ভারতের কট্টরপন্থী কিছু মানুষ মনে করেন ভালোবাসা দিবসের ধারণা পশ্চিমা দেশ
থেকে এসেছে যা ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে যায় না। এই ধারণা থেকে ‘অখিল ভারত
হিন্দু মহাসভা’ নামের একটি সংগঠন ঘোষণা দিয়েছিল ভ্যালেন্টাইনস ডে পালন করতে
গেলে যুগলদের চরম খেসারত দিতে হবে। বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে প্রকাশ্য স্থানে
যুগলবন্দি হলেই তাদের ধরে এনে বিয়ে পড়িয়ে দেয়া হবে। এমন ঘোষণার পর ক্ষুব্ধ
হয় অনেকে, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
জোর করে বিয়ে
পড়িয়ে দেয়ার যে ঘোষণা এই গ্রুপটি দিয়েছিল দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা
সেক্ষেত্রে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করে। তারাও মনে করে,
ভালোবাসার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া এই কট্টরপন্থিদের বরং খেসারত দেয়া উচিত।
ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শত শত ছাত্র গতকাল শনিবার অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার
অফিসে চড়াও হয়ে গণ বিয়ের দাবি জানানোর ঘোষণা দেয় । তাদের ভাষায়, ‘দমন
নির্যাতনের’ বিরুদ্ধে তারা এ প্রতিবাদ জানানোর উদ্যোগ নিয়েছে।
কিন্তু তাতে বিচলিত হয়নি ডানপন্থি সংগঠনটি। রাজধানী জুড়ে ঘনিষ্ঠভাবে ঘুরে
বেড়ানো যুগলদের ধরতে তারা পার্ক ও শপিং মলগুলোতে টিম পাঠানোর পরিকল্পনা
করে। ছাত্র প্রতিবাদের নেতৃত্বে থাকা বিদ্যালক্ষ্মী কুমারী তার ফেসবুক
একাউন্টে বলেন, হিন্দু মহাসভার পরিকল্পনার জবাবে আমরাও পাল্টা পদক্ষেপ
নিয়েছি। আমরা তাদের উদ্যোগকে আরো সহজ করে দিয়েছি। আমরা বিশাল এক গণবিয়ের
জন্য সকল প্রেমিক প্রেমিকাকে মহাসভার অফিসের বাইরে জড়ো হতে বলেছি। তাদের আর
কষ্ট করে আমাদের ধরে আনতে হবে না। আমরা সেখানে হাজির হয়ে তাদের খরচে
বিয়েটা সেরে ফেলব!
পরিকল্পনা মতো শিক্ষার্থীরা বিয়ের পোশাক পরে
অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার অফিস অভিমুখে যাত্রা করে। কিন্তু অনাকাঙ্খিত ঘটনা
এড়াতে পুলিশ ওই শিক্ষার্থীদের বাধা দেয়। দুই পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তির এক
পর্যায়ে পুলিশ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এরপর তাদের
মুক্তি জন্য থানার বাইরে ছাত্র-ছাত্রীরা বিক্ষোভ শুরু করে।
‘খেসারত’ প্রসঙ্গে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার প্রধান চন্দর প্রকাশ কৌশিক
বলেন, আমরা আমাদের স্বেচ্ছাসেবকদের পাঠাতে চেয়েছিলাম যুগলদের বোঝাতে যে
ভালোবাসা দিবসের ধারণা হিন্দু সংস্কৃতির অংশ নয়। যদি তারা একে অন্যকে
সত্যিকারভাবে ভালোবাসে তাহলে তাদেরকে বলবো আমাদের অফিসে আসুন এবং অগ্নি
সাক্ষী রেখে বিয়ে করুন। আমরা এখানে অন্যায় কিছু দেখছি না।