Commercial News - বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম কমল

Image result for বোতলজাত সয়াবিন তেলের picture


বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম কমিয়েছে ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। প্রতি লিটারে সয়াবিন তেলের দাম কমেছে চার টাকা করে আর পাঁচ লিটারে কমেছে ২০ টাকা।
এত দিন কয়েকটি ব্র্যান্ডের এক লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হতো ১০৬ টাকায়। সেই তেল এখন বিক্রি হবে ১০২ টাকায়। আর ৫২৫ টাকায় বিক্রি হওয়া পাঁচ লিটারের তেল এখন ক্রেতারা পাবেন ৫০৫ টাকায়।
ইতিমধ্যে ভোগ্যপণ্য বিপণনকারী বড় দুই প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপ আর মেঘনা গ্রুপ বোতলজাত তেলের দাম কমিয়েছে। আরেক বড় প্রতিষ্ঠান টি কে গ্রুপ এখনো দাম কমায়নি। তবে তারাও দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিশ্ববাজারে সয়াবিন তেলের দাম কমলেও দেশের বাজারে না কমায় গত ডিসেম্বরে বৈঠক করে বাণিজ্যমন্ত্রী ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে তেলের দাম কমানোর নির্দেশ দেন। ফলে ডিসেম্বরে প্রতি লিটারে ১১-১৪ টাকা এবং পাঁচ লিটারে ৫৫ টাকা কমায় প্রতিষ্ঠানগুলো। কিন্তু জানুয়ারি মাসে হঠাৎ করেই প্রতিষ্ঠানগুলো এক লিটারে ৪ টাকা এবং পাঁচ লিটারে ২০ টাকা বাড়িয়ে দেয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ৮ ফেব্রুয়ারি নিত্যপণ্যের মূল্য পরিস্থিতি নিয়ে বাণিজ্যসচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম কমানোর বিষয়ে আলোচনাও হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতেই তেলের দাম কমানো হলো।
ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, টানা হরতাল-অবরোধে সারা দেশে চাহিদা অনুযায়ী ভোজ্যতেল পৌঁছানো যায়নি। সে কারণে তেলের বিক্রিও কমে গেছে। বিক্রি বাড়িয়ে ওই ক্ষতি পুষিয়ে নিতেই তেলের দাম কমানো হয়েছে। আরেকটি বড় কারণ হলো, বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম কিছুটা কমেছে। এর প্রভাবও তেলের দামে পড়েছে।
দাম কমার বিষয়টি জেনেছেন বাণিজ্যসচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুনও। তিনি এ বিষয়ে ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে চিঠি পেয়েছেন বলে প্রথম আলোকে জানান।
২০১৩ সালে ভোজ্যতেল আমদানি ও সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ে করা ট্যারিফ কমিশনের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের ভোজ্যতেলের বাজার মূলত টি কে গ্রুপ (পুষ্টি ব্র্যান্ড) আর সিটি গ্রুপের (তীর ব্র্যান্ড) নিয়ন্ত্রণে। ২০১৩ সালে মোট অপরিশোধিত সয়াবিন তেল আমদানির ৩২ শতাংশ এবং অপরিশোধিত পাম তেলের ৪৩ শতাংশই আমদানি করে টি কে গ্রুপ। আর অপরিশোধিত সয়াবিন তেল কম আমদানি করলেও (১৩ শতাংশ) পাম তেল বেশি আমদানি করে সিটি গ্রুপ (৪২ শতাংশ)।
ভোজ্যতেল বাজারজাতকারী বড় প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপ সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠানটি লিটারপ্রতি চার টাকা করে তেলের দাম কমিয়েছে। ৯ ফেব্রুয়ারি এই তেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত হয়। আর মঙ্গলবার থেকেই নতুন দামের সয়াবিন তেল বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে। বাণিজ্যসচিব, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে গঠিত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তদারক সেল এবং বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনকে চিঠি দিয়ে দাম কমানোর বিষয়টি জানানো হয়েছে। ট্যারিফ কমিশন অবশ্য বলেছে, তারা কোনো চিঠি পায়নি।
দাম কমানোর বিষয়ে সিটি গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক বিশ্বজিৎ সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আগে দাম কমিয়ে পরে চিঠি দিয়েছি। গতকাল (মঙ্গলবার) থেকেই এই তেল বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।’
অবশ্য কারওয়ান বাজার ঘুরে নতুন দামের বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হতে দেখা যায়নি।
কেন দাম কমানো হলো জানতে চাইলে বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, হরতালের অজুহাতে অনেক খুচরা ব্যবসায়ী তেলের দাম বাড়িয়ে দেন। সেটা যেন না করতে পারেন, সে জন্যই তাঁরা দাম কমিয়েছেন। বিশ্ববাজারে তো সয়াবিন তেলের দাম কমেছে—এমন প্রশ্নের জবাবে তাঁর উত্তর, কম দামে কেনা ওই তেল এখনো দেশে এসে পৌঁছায়নি। তার আগেই তাঁরা দাম কমিয়েছেন।
ভোগ্যপণ্য বিপণনকারী আরেক প্রতিষ্ঠান মেঘনা গ্রুপও (ফ্রেশ ব্র্যান্ড) সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি চার টাকা করে কমিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি মঙ্গলবার তেলের দাম কমায়।
জানতে চাইলে মেঘনা গ্রুপের জ্যেষ্ঠ সহকারী মহাব্যবস্থাপক (বিক্রয়) ইয়াসিন মোল্লা বলেন, হরতাল-অবরোধে ভোজ্যতেল বিক্রি বেশ কমে গিয়েছিল। বিক্রি বাড়াতেই তেলের দাম কমানো হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ক্রেতারা কিছুটা স্বস্তিও পাবেন।
ভোজ্যতেলের বাজারের বড় নিয়ন্ত্রক টি কে গ্রুপ এখনো বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম কমায়নি। গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক সফিউল আথহার জানান, গতকাল বুধবারই তাঁরা বোতলজাত তেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শিগগিরই তা কার্যকর হবে। তাঁরাও লিটারপ্রতি চার টাকা করে কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
-

Latest

Popular Posts

Popular Posts

Popular Posts