সূর্যগ্রহণ দেখার আশায় আজ শুক্রবার দুপুরের পর থেকে আকাশের দিকে অনেকেই হয়তো চোখ রাখবেন। নরওয়ের উত্তর স্যালবার্ড দ্বীপপুঞ্জ ও ডেনমার্কের ফ্যারো দ্বীপপুঞ্জে দেখা যাবে এই পূর্ণগ্রাস। এ ছাড়া আবহাওয়া পরিষ্কার থাকলে আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে ইউরোপ, উত্তর আফ্রিকা, মধ্য এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের কিছু অঞ্চলে। তবে বাংলাদেশের আকাশে সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে না।
বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আজ ২০ মার্চ শুক্রবার পূর্ণ সূর্যগ্রহণ ঘটতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সময় বেলা একটা ৪১ মিনিটে গ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল পাঁচটা ৫০ মিনিটে শেষ হবে এই সূর্যগ্রহণ। বাংলাদেশ মান সময় বিকেল তিনটা ১২ মিনিট ৪২ সেকেন্ডে শুরু হয়ে চারটা ১৮ মিনিট ১২ সেকেন্ডে শেষ হবে। বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী বিকেল তিনটা ৪৫ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডে পূর্ণগ্রাস ঘটবে। এর স্থায়িত্ব দুই মিনিট ৫০ সেকেন্ড। বাংলাদেশে অবশ্য এই গ্রহণ দেখা যাবে না।
মৌরিতানিয়ার কেপ ভার্দে দ্বীপপুঞ্জের পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগরে স্থানীয় মান সময় সকাল ছয়টা সাত মিনিট ৫৭ সেকেন্ডে গ্রহণ শুরু হবে। রাশিয়ার ক্রাসনোয়ার্স্ক শহরের দক্ষিণে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ছয়টা ছয় মিনিট ২৫ সেকেন্ডে শেষ হবে এই গ্রহণ। কানাডার কার্টরাইট শহরের পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগরে স্থানীয় মান সময় সকাল ছয়টা আট মিনিট ৪৮ সেকেন্ডে কেন্দ্রীয় গ্রহণ শুরু হয়ে রাশিয়ার সেভেরনায়া দ্বীপের উত্তর-পশ্চিমে আর্কটিক মহাসাগরে স্থানীয় মান সময় বিকেল চারটা ৪৭ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডে শেষ হবে। ডেনমার্কের ফ্যারো দ্বীপপুঞ্জের উত্তর-পশ্চিম দিকে স্থানীয় সময় সকাল নয়টা ১৯ মিনিট এক সেকেন্ডে সর্বোচ্চ গ্রহণ ঘটবে। এর স্থায়িত্ব হবে দুই মিনিট ৫০ সেকেন্ড।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শাহ আলম প্রথম আলোকে জানান, বাংলাদেশ থেকে সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে না। ইউরোপ, উত্তর আফ্রিকা, মধ্য এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের কিছু অঞ্চলে এই গ্রহণ দেখা যাবে।
আজ যা ঘটবে
যুক্তরাজ্যের নটিক্যাল অ্যালমানাক অফিসের তথ্য অনুযায়ী, আটলান্টিক মহাসাগরে চাঁদের ছায়া পৃথিবীকে ঢেকে দেবে। যাঁরা পূর্ণগ্রাসের দৃশ্য দেখতে উৎসাহী, তাঁরা ডেনমার্কের ফ্যারো দ্বীপপুঞ্জে কিংবা নরওয়ের স্যালবার্ডের সমবেত হচ্ছেন। তিন মিনিটেরও কম সময়ে দিনের বেলায় রাত নামার এই রোমাঞ্চকর দৃশ্য অবলোকন করার জন্য মানুষ সেই আদিকাল থেকেই আগ্রহ দেখিয়েছেন।
এএফপির এক খবরে জানানো হয়, ফ্যারো দ্বীপে আট হাজারের বেশি পর্যটক এই সূর্যগ্রহণ দেখবেন। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের অনেক পর্যটক এর মধ্যে রয়েছে। এ ছাড়াও বোয়িং বিমানে করে এই সূর্যগ্রহণ দেখার আয়োজন করেছে একদল ডেনিশ। নরওয়ের স্যালবার্ডে দুই হাজারের বেশি পর্যটক হতে পারে। সেখানকার পর্যটকদের অবশ্য বাড়তি কিছু ঝুঁকি নিতে হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা আর মেরুভালুকের হামলার আশঙ্কা।
যখন পূর্ণগ্রাস ঘটে, তখন সূর্য ও পৃথিবীর মাঝ বরাবর চাঁদ চলে আসে এবং তারা একই সরলরেখায় অবস্থান করে। এতে চাঁদের আড়ালে সূর্য ঢাকা পড়ে যায় এবং চাঁদকে অনেক বড় দেখায়। সূর্যগ্রহণে চাঁদ সূর্যকে সম্পূর্ণ ঢেকে ফেলতে পারে। এতে কোনো কোনো স্থানে তখন পূর্ণ সূর্যগ্রহণ দেখা দেয়। এ সময় সূর্য পুরোপুরি ঢাকা পড়ে যাওয়ার দৃশ্য চোখে পড়ে।