Economics news - বাংলাদেশের পোশাকশ্রমিকদের নিরাপত্তা চান মার্কিন ছাত্ররা

PM tells unemployed workers of Cambodian to return to agriculture
    
বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশ্রমিকদের কর্মপরিবেশ নিরাপদ ও উন্নত করার দাবিতে এবার সোচ্চার হয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
দেশটির কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি অংশ ইতিমধ্যে কর্তৃক্ষের কাছে দাবি করেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে পোশাক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশের নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে উদ্যোগ না নিলে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। এরই পদক্ষেপ হিসেবে ওই শিক্ষার্থীরা আমেরিকান প্রতিষ্ঠান ভিএফ করপোরেশনের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করতে বলেছে। এই করপোরেশনের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান জ্যানস্পোর্ট ও ভিএফ ইমেজওয়্যার বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো প্রস্তুত করে থাকে। গত বুধবার মার্কিন পত্রিকা ডেইলি ক্যামেরায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে।
কলোরাডোর ছাত্র পার্কার হেইল বলেছেন, ‘আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পোশাক কারখানার অগ্নি ও ভবনধসের মতো দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করতে ওই প্রতিষ্ঠানকে ইউরোপীয় ক্রেতাদের জোট অ্যাকর্ড অন ফায়ার অ্যান্ড বিল্ডিং সেফটি ইন বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করতে চাপ দেবে।’ পার্কার হেইল দাবি করে বলেছেন, ‘অ্যালায়েন্সের পর্যাপ্ত স্বাধীনতা নেই এবং অ্যাকর্ডের চেয়ে তারা কম কঠোর।’
২০১৩ সালে সাভারে রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় ১ হাজার ১৩৬ জন পোশাকশ্রমিক নিহত হন। আহত হন আরও অনেক শ্রমিক। সেখানে পাঁচটি পোশাক কারখানা ছিল। এ ঘটনার পর কারখানা পরিদর্শন ও কর্মপরিবেশ উন্নয়নে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্রেতাদের সমন্বয়ে গঠিত হয় অ্যাকর্ড। বর্তমানে এতে এইচঅ্যান্ডএম, অ্যাডিডাসসহ ২০০ ব্র্যান্ড চুক্তি করেছে।
অন্যদিকে প্রায় একই উদ্দেশ্য নিয়ে ওয়ালমার্ট, গ্যাপ, ভিএফ করপোরেশনসহ উত্তর আমেরিকার ২৬ ব্র্যান্ড মিলে গঠন করে অ্যালায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওয়ার্কার সেফটি। গত বছরের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, অ্যালায়েন্স প্রথম বছরে ৫৮৭টি কারখানা পরিদর্শন করেছে। একই সঙ্গে ১১ লাখ শ্রমিককে অগ্নিনিরাপত্তা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এ ছাড়া ১ হাজার চাকরিচ্যুত শ্রমিককে ক্ষতিপূরণ দিয়েছে।
কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের অপর ছাত্র ক্যামেরন সিমানাস বলেন, ‘জনগণের মধ্যে একটি বড় অংশ চিন্তা করতে পারবে না যে কী ধরনের পরিবেশ থেকে তাদের পোশাক আসে?’
ভিএফ করপোরেশনের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, তারা বাংলাদেশের ৯০টি কারখানা থেকে পোশাক প্রস্তুত করায়। এসব কারখানায় কাজ করেন ১ লাখ ৯০ হাজার শ্রমিক। অবশ্য করপোরেশনের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান জ্যানস্পোর্ট বাংলাদেশ থেকে পোশাক তৈরি করায় না। তবে জ্যানস্পোর্ট অথবা ভিএফ ইমেজওয়্যারের সঙ্গে ১৬ বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্ক আছে। এর মধ্যে আছে কর্নেল ইউনিভার্সিটি, অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটি, পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি অব ফ্লোরিডা।
এদিকে বাংলাদেশ থেকে কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রানা প্লাজা ধসে বেঁচে যাওয়া পোশাকশ্রমিক মাহিনূর বেগম ও শ্রমিক অধিকার নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠনের নেত্রী কল্পনা আক্তারের বক্তব্য দেওয়ার কথা। আন্দোলনরত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আশা, এতে বাংলাদেশের শ্রমিকদের ইস্যুটির পক্ষে ক্যাম্পাসে সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে।
কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র ব্রনসন হিলারড নিশ্চিত করে বলেছেন, শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি একটি চিঠি কর্তৃপক্ষ পেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাথলেটিক বিভাগ আগামী জুলাইয়ে ভিএফের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়ন করবে। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘আমরা নিশ্চিত হয়েছি জ্যানস্পোর্ট কখনোই কোনো ধরনের কলেজসামগ্রী বাংলাদেশ থেকে তৈরি করাবে না। তবে মানবিক ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ থেকে পোশাক তৈরির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সমর্থন দেবে।’
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে অ্যালায়েন্স বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেসবাহ রবিন গতকাল রাতে পার্কার হেইলের দাবির প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ব্যক্তিবিশেষের যেকোনো মতামত দেওয়ার স্বাধীনতা আছে। তবে বাংলাদেশে পরিস্থিতি ভিন্ন। কারণ ভিএফ একমাত্র ব্র্যান্ড, যেটি তার সদস্য কারখানাকে সংস্কারকাজে সহায়তা করতে ব্যাংকঋণের জিম্মাদার হয়েছে। এটি অনন্য উদাহরণ।’
-

Latest

Popular Posts

Popular Posts

Popular Posts