দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ
আবারও নতুন রেকর্ডে বা উচ্চতায় অবস্থান নিয়েছে। রিজার্ভ প্রথমবারের মতো ২
হাজার ৩০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের
হিসাবে সংরক্ষিত বৈদেশিক মুদ্রা মজুতের পরিমাণ বৃদ্ধি হয়ে ২ হাজার ৩০৩
কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণে উন্নীত হয়। বর্তমান রিজার্ভ দিয়ে দেশের
সাত মাসেরও অধিক সময়ের আমদানি দায় মেটানো যাবে।
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম অর্ধেকে নেমে আসা এবং দেশে বিরাজমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিনিয়োগ আটকে পড়ায় রিজার্ভ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এর আগে গত বছরের ৭ আগস্ট দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত ২ হাজার ২০০ কোটি ডলার অতিক্রম করে। তার আগে ১৬ জুন ২ হাজার ১০০ কোটি ডলার এবং ১০ এপ্রিল ২ হাজার কোটি ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করে। আর তারও ঠিক এক বছর আগে অর্থাৎ ২০১৩ সালের ১০ এপ্রিল রিজার্ভ ছিল ১ হাজার ৪২২ কোটি ডলার।
সার্কভুক্ত দেশগুলোর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের হিসাবে বাংলাদেশের অবস্থান এখন দ্বিতীয়তে। প্রথম অবস্থানে রয়েছে ভারত। রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার তথ্য অনুসারে ১৩ ফেব্রুয়ারি ভারতের রিজার্ভ ছিল ৩৩ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। এর পরই বাংলাদেশ। আর তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান। স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের তথ্য অনুসারে ১৩ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের রিজার্ভ ছিল ১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন মূলত, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বানানি তেলের দাম অর্ধেকে নেমে আসায় ব্যয় সাশ্রয় হয়েছে। তার সঙ্গে চলমান অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং পাশাপাশি রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি ও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি হয়েছে।
রিজার্ভ বৃদ্ধির আরেক অন্যতম কারণ হচ্ছে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশে বিনিয়োগ আটকে পড়েছে। অন্যদিকে বিদেশ থেকে বেসরকারি খাত প্রায় ৩০০ কোটি ডলারের যে ঋণ এনেছে, এতেও দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর থেকে চাপ কমেছে।
বিদেশি মুদ্রার মজুত পরিস্থিতি এখন এমন হয়েছে যে অনেক বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছেই পর্যাপ্ত ডলার রয়েছে। কারও কারও সংরক্ষণসীমাও অতিক্রম করছে। তারা ডলার বিক্রিও করছে। কিন্তু ক্রেতা কম। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংককে নিয়ম অনুসারে ডলার কিনতে হয়েছে ব্যাংকের কাছ থেকে। তবে ২০১৪ সালের অক্টোবর-নভেম্বর সময়ে চাহিদা বৃদ্ধি পায়। তখন উল্টো কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে ডলার বিক্রিও করে।
কয়েক বছর আগে এ পরিস্থিতি ছিল না। তখন ডলারের জন্য হাহাকার ছিল। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) মাধ্যমে জ্বালানি তেল আমদানি করতে ডলার জোগান দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছিল রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোকে। বাংলাদেশ ব্যাংকও নানা বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়ে আসছিল। আইডিবির কাছ থেকে শেষমেশ একটা বড় সহায়তা মেলে। যে পরিমাণ অর্থ জ্বালানি কিনতে ব্যয় হবে আইডিবি তা পরিশোধ করবে। আর ছয় থেকে নয় মাস পর তা পরিশোধ করা হবে।
আবার সমসাময়িক সময়ে সার্বিক বৈদেশিক বিনিময় পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকেও সরকার ১০০ কোটি ডলার ঋণ নেয়। যার পাঁচটি কিস্তির অর্থ ইতিমধ্যেই রিজার্ভে এসে জমা হয়েছে।
কিন্তু এখন কেউ আর ডলার চায় না। যে সময়টা ডলারের জন্য হাহাকার ছিল, তখন আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য বাড়ছিল হু হু করে। একই সঙ্গে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প চালুর একটা তোড়জোড় পড়ে য়ায়। যার চাপ গিয়ে পড়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে। এই বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য হঠাৎ করে জ্বালানি তেলের চাহিদাও বাড়ে। যার জোগান দিতেও বেশি আমদানি করতে হয় বিপিসিকে। এখন তার পরিমাণ না কমলেও বৃদ্ধির হার নেই।
সব মিলে সার্বিক আমদানি ব্যয় কমেছে। ব্যয় কমেছে দুভাবে। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্য মূল্য কমে যাওয়ায় আমদানি কমেছে, আবার পরিমাণেও কমেছে আমদানি। আবার দেশে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় খাদ্যপণ্য আমদানি কমে গেছে।
অবশ্য তার পরও আমদানি ব্যয়ের জন্য আগামী সপ্তাহে রেকর্ড পরিমাণ ১০০ কোটি ডলারের বেশি অর্থ এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) পরিশোধ করতে হবে বাংলাদেশকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) কাজী ছাইদুর রহমান রিজার্ভ বৃদ্ধির কারণ উল্লেখ করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, রপ্তানিতে একটা প্রবৃদ্ধি আছে। অন্যদিকে অপ্রয়োজনীয় আমদানি কমেছে। খাদ্যপণ্য আমদানিও নেই। এখন যা আমদানি হচ্ছে তা প্রকৃত চাহিদা। এতে রিজার্ভ বাড়ছে।
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম অর্ধেকে নেমে আসা এবং দেশে বিরাজমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিনিয়োগ আটকে পড়ায় রিজার্ভ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এর আগে গত বছরের ৭ আগস্ট দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত ২ হাজার ২০০ কোটি ডলার অতিক্রম করে। তার আগে ১৬ জুন ২ হাজার ১০০ কোটি ডলার এবং ১০ এপ্রিল ২ হাজার কোটি ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করে। আর তারও ঠিক এক বছর আগে অর্থাৎ ২০১৩ সালের ১০ এপ্রিল রিজার্ভ ছিল ১ হাজার ৪২২ কোটি ডলার।
সার্কভুক্ত দেশগুলোর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের হিসাবে বাংলাদেশের অবস্থান এখন দ্বিতীয়তে। প্রথম অবস্থানে রয়েছে ভারত। রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার তথ্য অনুসারে ১৩ ফেব্রুয়ারি ভারতের রিজার্ভ ছিল ৩৩ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। এর পরই বাংলাদেশ। আর তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান। স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের তথ্য অনুসারে ১৩ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের রিজার্ভ ছিল ১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন মূলত, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বানানি তেলের দাম অর্ধেকে নেমে আসায় ব্যয় সাশ্রয় হয়েছে। তার সঙ্গে চলমান অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং পাশাপাশি রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি ও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি হয়েছে।
রিজার্ভ বৃদ্ধির আরেক অন্যতম কারণ হচ্ছে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশে বিনিয়োগ আটকে পড়েছে। অন্যদিকে বিদেশ থেকে বেসরকারি খাত প্রায় ৩০০ কোটি ডলারের যে ঋণ এনেছে, এতেও দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর থেকে চাপ কমেছে।
বিদেশি মুদ্রার মজুত পরিস্থিতি এখন এমন হয়েছে যে অনেক বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছেই পর্যাপ্ত ডলার রয়েছে। কারও কারও সংরক্ষণসীমাও অতিক্রম করছে। তারা ডলার বিক্রিও করছে। কিন্তু ক্রেতা কম। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংককে নিয়ম অনুসারে ডলার কিনতে হয়েছে ব্যাংকের কাছ থেকে। তবে ২০১৪ সালের অক্টোবর-নভেম্বর সময়ে চাহিদা বৃদ্ধি পায়। তখন উল্টো কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে ডলার বিক্রিও করে।
কয়েক বছর আগে এ পরিস্থিতি ছিল না। তখন ডলারের জন্য হাহাকার ছিল। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) মাধ্যমে জ্বালানি তেল আমদানি করতে ডলার জোগান দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছিল রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোকে। বাংলাদেশ ব্যাংকও নানা বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়ে আসছিল। আইডিবির কাছ থেকে শেষমেশ একটা বড় সহায়তা মেলে। যে পরিমাণ অর্থ জ্বালানি কিনতে ব্যয় হবে আইডিবি তা পরিশোধ করবে। আর ছয় থেকে নয় মাস পর তা পরিশোধ করা হবে।
আবার সমসাময়িক সময়ে সার্বিক বৈদেশিক বিনিময় পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকেও সরকার ১০০ কোটি ডলার ঋণ নেয়। যার পাঁচটি কিস্তির অর্থ ইতিমধ্যেই রিজার্ভে এসে জমা হয়েছে।
কিন্তু এখন কেউ আর ডলার চায় না। যে সময়টা ডলারের জন্য হাহাকার ছিল, তখন আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য বাড়ছিল হু হু করে। একই সঙ্গে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প চালুর একটা তোড়জোড় পড়ে য়ায়। যার চাপ গিয়ে পড়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে। এই বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য হঠাৎ করে জ্বালানি তেলের চাহিদাও বাড়ে। যার জোগান দিতেও বেশি আমদানি করতে হয় বিপিসিকে। এখন তার পরিমাণ না কমলেও বৃদ্ধির হার নেই।
সব মিলে সার্বিক আমদানি ব্যয় কমেছে। ব্যয় কমেছে দুভাবে। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্য মূল্য কমে যাওয়ায় আমদানি কমেছে, আবার পরিমাণেও কমেছে আমদানি। আবার দেশে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় খাদ্যপণ্য আমদানি কমে গেছে।
অবশ্য তার পরও আমদানি ব্যয়ের জন্য আগামী সপ্তাহে রেকর্ড পরিমাণ ১০০ কোটি ডলারের বেশি অর্থ এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) পরিশোধ করতে হবে বাংলাদেশকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) কাজী ছাইদুর রহমান রিজার্ভ বৃদ্ধির কারণ উল্লেখ করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, রপ্তানিতে একটা প্রবৃদ্ধি আছে। অন্যদিকে অপ্রয়োজনীয় আমদানি কমেছে। খাদ্যপণ্য আমদানিও নেই। এখন যা আমদানি হচ্ছে তা প্রকৃত চাহিদা। এতে রিজার্ভ বাড়ছে।