Economic news - ভারতে ‘অভিনব’ রেল বাজেট

নয়াদিল্লির রেলস্টেশনে বসে যাত্রীরা গতকাল ভারতের ২০১৫–১৬ অর্থবছরের রেল বাজেট বক্তৃতা শোনেন l বিজনেস লাইন
     
ভারতের রেলব্যবস্থাকে কীভাবে লাভজনক, ঝুঁকিহীন ও ভোক্তাবান্ধব করে তোলা যায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্দেশে তারই একটা নমুনা রাখলেন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। গতকাল বৃহস্পতিবার লোকসভায় ২০১৫-১৬ সালের যে রেল বাজেট তিনি পেশ করলেন, তাতে যাত্রীভাড়া বাড়ানো হয়নি, নতুন কোনো ট্রেনও ঘোষণা করা হয়নি। তবে পণ্য মাশুলের হেরফের ঘটিয়ে বাড়তি রাজস্ব আদায়ের পথ সুগম করা হয়েছে। পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, ‘বাজেট অভিনব’।
কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধান শাসক দল দীর্ঘ দেড় দশকের বেশি রেল মন্ত্রণালয় নিজেদের হাতে রাখতে পারেনি। কোনো না কোনো শরিক দল তা পেয়ে এসেছে। এবং প্রতিটি দলই এই মন্ত্রণালয়কে তাদের দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করে এসেছে। নিজের ক্ষমতায় সরকার গড়ে বিজেপি এই প্রথম রেল মন্ত্রণালয় হাতে নিল। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু তাই কারও মন রাখার বাজেট তৈরির পথে না হেঁটে বেলাইন ভারতীয় রেলকে লাইনে তোলার চেষ্টা করেছেন। তাঁর প্রধান চার লক্ষ্য—রেল পরিষেবার সার্বিক উন্নতি ঘটানো, ভ্রমণকে নিরাপদ করে তোলা, রেলের ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার ও সে জন্য অবকাঠামোর আধুনিকীকরণ এবং ভারতীয় রেলকে অর্থনৈতিক দিক থেকে স্বাবলম্বী করে তোলা। এখন দৈনিক ২ কোটি ১০ লাখ মানুষ ভারতের ট্রেনগুলোতে ভ্রমণ করে, তা ৩ কোটি করা হবে। বার্ষিক ১০০ কোটি টন পণ্য পরিবহন বাড়িয়ে করা হবে দেড় শ কোটি টন।
এটা ঠিক যে ট্রেনের যাত্রীভাড়া ভারতে যথেষ্ট কম। পণ্য মাশুলের আয় থেকে যাত্রীভাড়ায় ভর্তুকি দেওয়া হয়। প্রতিবছরেই রেলমন্ত্রীরা যাত্রী সুরক্ষা ও স্বাচ্ছন্দ্যের ওপর জোর দেন। কিন্তু পরিচ্ছন্নতা ও স্বাচ্ছন্দ্যের যথেষ্ট অভাব থেকেই যায়। সুরেশ প্রভু এবারের বাজেটে এই দিকে বিশেষ নজর দিতে চেয়েছেন। টিকিট কাটা সহজ করে তুলতে বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছেন। খাবারের মানের উন্নতির ওপর জোর দিয়েছেন, বহু স্টেশনকে ওয়াই-ফাইয়ের আওতায় আনছেন, প্রবীণ ও গর্ভবতীদের নিচের বার্থ দেওয়া বাধ্যতামূলক করার কথা বলেছেন, ওপরের বার্থে ওঠার জন্য কামরায় ভাঁজ করা সিঁড়ি রাখারও বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। স্টেশন ও ট্রেনে আলোর জোগানে সৌরবিদ্যুতের ওপর বড় জোর দেওয়া হচ্ছে।
আগামী পাঁচ বছরে ভারতীয় রেলে সাড়ে আট লাখ কোটি রুপি লগ্নি হবে। প্রশ্ন উঠছে, এই বিপুল অর্থ কোথা থেকে আসবে। বাজেটে তার কোনো উত্তর কিন্তু সুরেশ প্রভু দেননি। বিদেশি বিনিয়োগ কোন কোন ক্ষেত্রে আসবে, তারও উল্লেখ নেই। নতুন ট্রেন ও প্রকল্প ঘোষণার আগে তার কার্যকারিতা বিশেষ খতিয়ে দেখা হতো না বলে প্রভু মনে করেন। তিন শর বেশি ঘোষিত প্রকল্প এখনো ঝুলে রয়েছে। সেগুলোর রূপায়ণে ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি রুপির প্রয়োজন। রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন, কোন কোন ট্রেন লাভজনক ও প্রয়োজনীয়, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই পর্যালোচনা শেষ হলে তিনিও নতুন ট্রেনের কথা ঘোষণা করবেন।
-

Latest

Popular Posts

Popular Posts

Popular Posts