World News - জঙ্গি হানায় এবার রক্তাক্ত লাহোর



জ্জ পুলিশ লাইনস সংলগ্ন এলাকায় আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা, পাক তালেবানের দায় স্বীকার জ্জ জঙ্গিবিরোধী অভিযান জারব-ই-আজব-এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছেযাযাদি ডেস্ক http://www.jjdin.com/images/rpt.gifhttp://www.jjdin.com/admin/news_images/1106/image_1106_166525.jpgপেশোয়ারের পর এবার জঙ্গি হামলায় রক্তাক্ত হয়েছে পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোর। মঙ্গলবার লাহোরের পুলিশ লাইনসের কাছে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলায় অন্তত ৮ জন নিহত এবং কমপক্ষে ২৩ জন আহত হয়েছে। আহতদের অবস্থা গুরুতর। এদিকে, ইতোমধ্যে পাক তালেবান এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। জঙ্গি দমনে পাক সরকারের জাতীয় কর্মপরিকল্পনা এবং সেনাবাহিনীর জঙ্গিবিরোধী অভিযান জারব-ই-আজবের প্রতিক্রিয়া হিসেবে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহেই পেশোয়ারে একটি মসজিদে বিস্ফোরণে ১৯ জন নিহত হয়। সংবাদসূত্র : ডন, এক্সপ্রেস ট্রিবিউন, জি-নিউজ
লাহোরের পুলিশ লাইনস সংলগ্ন কিলা গুজ্জর সিং এলাকায় মঙ্গলবার পুলিশ লাইনসের প্রধান ফটকের বাইরে যানবাহন পার্ক করে রাখার স্থানে গাড়িবোমাটির বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। বিস্ফোরণের পরপরই এলাকাজুড়ে প্রচুর ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর সদস্যরা এসে দুর্ঘটনাস্থলটি ঘিরে ফেলে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পুলিশ লাইনসের ভেতর থেকে গুলির শব্দ শোনা গেছে। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের পর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও গুলি ছোড়ে। শক্তিশালী ওই বিস্ফোরণের ফলে ঘটনাস্থলে পার্ক করে রাখা বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন লেগে যায়। এছাড়া নিকটস্থ ভবনগুলোর জানালার কাচ ভেঙে যায়।
পাঞ্জাবের পুলিশ মহাপরিদর্শক মুশতাক সুখেরা বলেন, সম্ভবত জঙ্গিদের হামলার মূল লক্ষ্যবস্তুই ছিল পুলিশ লাইনস। কিন্তু তল্লাশির মুখোমুখি হওয়ায় হয়তো হামলাকারী গাড়িবোঝাই বিস্ফোরকের বিস্ফোরণটি ঘটায়। জঙ্গি দমনে সরকারের জাতীয় কর্মপরিকল্পনা এবং সেনাবাহিনীর জঙ্গিবিরোধী অভিযানের প্রতিক্রিয়ায় এই হামলা চালানো হতে পারে। তবে যা-ই ঘটুক, জঙ্গিবিরোধী অভিযান চলবেই।
এদিকে, হামলার দায় স্বীকার করে পাক তালেবান টিটিপির একটি বিচ্ছিন্ন গোষ্ঠী জামায়াতুল আহরারের মুখপাত্র এহসানুল্লাহ এহসান বলেন, 'আমরাই এই হামলা চালিয়েছি।'
স্থানীয় পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আত্মঘাতী হামলায় নিহতদের মধ্যে একজন পুলিশ কর্মকর্তাও রয়েছেন। বিস্ফোরণে মোট ৮ জন নিহত হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। এছাড়া পাঞ্জাবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ২৩ জন আহত হওয়ার খবর জানানো হয়েছে। আহতদের মধ্যে একজন নারী পুলিশ সদস্য রয়েছেন বলেও জানা গেছে।
পাঞ্জাব প্রাদেশিক সরকারের মুখ্যমন্ত্রীর স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা খাজা সালমান রফিক অবশ্য ৮ জন নিহত হওয়ার খবর প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, সেখানে চারজন নিহত হয়েছে। তবে অন্যান্য সূত্র নিশ্চিত করেছে, লাহোরের ওই বিস্ফোরণে ৮ জন নিহত হয়েছে।
বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শন শেষে পাঞ্জাব পুলিশের মহাপরিদর্শক মুশতাক সুখেরা আরো জানান, হামলায় পাঁচ থেকে আট কেজি বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, সাম্প্রতিক সময়ে জারব-ই-আজব অপারেশনের পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো এ ধরনের হামলা চালাতে পারে। হামলাকারী সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেতে পুলিশ সেখানকার সিসিটিভির ভিডিওচিত্র পরীক্ষা করে দেখছে। তবে এসব হামলা সত্ত্বেও জারব-ই-আজব অপারেশন চলবেই বলে ঘোষণা দেন তিনি।
ঘটনাস্থলে দায়িত্ব পালন করা পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, হামলাটি ছিল আত্মঘাতী। কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা এবং কড়াকড়ি তল্লাশির কারণে পুলিশ লাইনসে ঢুকতে না পেরে হামলাকারী প্রধান ফটকের বাইরেই বোমাটির বিস্ফোরণ ঘটায়। পুলিশ তার ছিন্ন মাথা ও শরীর খুঁজে পেয়েছে।
এছাড়া একই দিনে লাহোরের দুটি হাসপাতালেও বোমা হামলার হুমকি দেয় জঙ্গিরা। সঙ্গে সঙ্গে ওই দুটি হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলো থেকে রোগীদের স্থানান্তরিত করা হয় বলে জানা গেছে। এছাড়া শহরের অন্য সব হাসপাতালের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে লাহোর পুলিশ। লাহোরের এই হামলার নিন্দা জানিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ আহতদের সর্বোচ্চ সেবা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি হতাহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনাও জানিয়েছেন। এছাড়া দেশটির প্রেসিডেন্ট মামনুন হোসেন এবং বিরোধী নেতা ইমরান খানও এই হামলার কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ দ্রুত এই হামলার তদন্ত প্রতিবেদন চেয়েছেন।
সম্প্রতি পাক তালেবান দেশটির বিভিন্ন স্থানে প্রাণঘাতী হামলা বৃদ্ধি করেছে। গত ডিসেম্বরে দেশটির পেশোয়ারে আর্মি পাবলিক স্কুলে এক হামলায় ১৩২ জন শিশুসহ মোট ১৪২ জন নিহত হয়। এরপরই সেনাবাহিনী জঙ্গিবিরোধী অপারেশন জারব-ই-আজব জোরদার করে এবং সরকারও জঙ্গি নির্মূলে ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যান গ্রহণ করে। এর অংশ হিসেবে দেশটিতে বেশ কিছু জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর করা হয় এবং বিভিন্ন এলাকায় অভিযান বৃদ্ধি পায়। এরই প্রতিক্রিয়ায় টিটিপি জঙ্গিরাও প্রাণঘাতী হামলা চালাচ্ছে।
-

Latest

Popular Posts

Popular Posts

Popular Posts