National news - ঢাকা-চট্টগ্রামে ইভিএম ব্যবহার অনিশ্চিত: এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি ইসি

ঢাকা-চট্টগ্রামে ইভিএম ব্যবহার অনিশ্চিত: এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি ইসি
দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো যেখানে যাত্রা শুরু হয়েছিল, সে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে এবার ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার নিয়ে ‘শঙ্কা’ রয়েছে। একই সঙ্গে ঢাকা সিটি করপোরেশনে পরীক্ষামূলক এ প্রযুক্তি চালুর কথা থাকলেও তার সম্ভাবনাও ক্ষীণ বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম ও ঢাকা সিটি করপোরেশনে ইভিএম ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে কিনা, জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক বলেন—রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে একটি ইভিএম নষ্ট হয়েছিল। বুয়েটের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের কাছে তা পাঠানোর পরও ইউনিটটি ঠিক করে দেয়নি তারা। ত্রুটি উদ্ধার না হওয়ায় ঢাকা ও চট্টগ্রামে ইভিএম ব্যবহারের সম্ভাবনা খুব কম।
২০১০ সালের ১৭ জুন চট্টগ্রামে একটি ওয়ার্ডে ‘সফলভাবে’ প্রথমবারের মতো ইভিএম চালু করা হয়। পরবর্তীতে ২০১২ সালে ঢাকা সিটির দুই ভাগে সংরক্ষিত ছয়টি ওয়ার্ডে ইভিএমের পরিকল্পনা নেয় তত্কালীন কমিশন। ২০১৩ রাজশাহী ও নরসিংদী নির্বাচনে ইভিএমে ত্রুটি ধরা পড়ার পর এ প্রযুক্তিটির ব্যবহারের পথ ধীরে ধীরে ক্ষীণ হয়। এর আগের্ই ইভিএম নষ্টের পর ফল দেয়াকে কেন্দ্র করে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদেরই ভোটারদের রোষানলে পড়তে হয়।
মধ্য জুনের আগে ঢাকা সিটি করপোরেশনের উত্তর ও দক্ষিণ ভাগে এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে একসঙ্গে ভোট পরিকল্পনার কথা এরই মধ্যে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ঢাকা ও চট্টগ্রামের ভোটের জন্য আগাম প্রস্তুতি হিসেবে সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ, ভোটার তালিকা বিন্যাস এবং ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল নির্ধারণের কাজ চলছে। তফসিল ঘোষণার আগে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ইসি সচিবালয় শুরু করলেও ইভিএম নিয়ে কোনো নির্দেশনা এখনো দেয়া হয়নি।
চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল বাতেন জানান—চট্টগ্রাম থেকে ইভিএমের যাত্রা শুরু হয়। এ ধারাবাহিকতায় কুমিল্লায় পুরো সিটি করপোরেশনে ইভিএম ব্যবহার হয়। ইভিএমে ভোট হলে কর্মকর্তাদের জন্য বেশ ভালো হয়। এখানে ভোট বাতিলেরও কোনো সুযোগ নেই। ফলাফলও দ্রুত দেয়া সম্ভব হয়।
ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মিহির সারওয়ার মোর্শেদ বলেন—এখনো পর্যন্ত ইভিএমর বিষয়ে ইসির কোনো সিদ্ধান্ত তিনি পাননি।
 
অলিম্পিক ব্যাটারি ব্যবহার ত্রুটি শনাক্তে বিলম্ব:
ইসি সচিবালয়ের আইটি শাখার কর্মকর্তারা জানান—ইভিএমে দেশি ব্যাটারি ব্যবহারের একটি পরীক্ষামূলক কাজ শেষ হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে কমিশনকে জানানো হয়েছে যে, অলিম্পিক ব্যাটারি দিয়ে ইভিএম পরিচালনা যুক্তিযুক্ত হবে। তবে ইভিএমের কন্ট্রোল ইউনিটে ত্রুটির বিষয়ে কোনো সমাধান জানায়নি বুয়েট কর্তৃপক্ষ।
ইসির সিস্টেম ম্যানেজার রফিকুল হক বলেন, ‘এরই মধ্যে বুয়েটের ব্যুরো অব রিচার্স, টেস্টিং অ্যান্ড কনসাল্টেশন-বিআরটিসির পরিচালককে রাজশাহী ও নরসিংদীয় নষ্ট ইভিএমের ত্রুটি শনাক্তের জন্য বলা হয়েছে। সম্প্রতি আবার ত্রুটি সমাধানের বিষয়ে উত্তর জানতে তাগাদা দিয়েছি। এখন পর্যন্ত কোনো প্রত্যুত্তর আসেনি। কবে নাগাদ বিষয়টি সমাধান হবে তা বলাও যাচ্ছে না।’ তিনি বলেন, ‘বিআরটিসির উত্তরের অপেক্ষায় রয়েছে কমিশন। বর্তমানে হাজার খানেক ইভিএম রয়েছে। কমিশনের সিদ্ধান্ত পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের একটি ওয়ার্ডে ব্যবহারের মধ্য দিয়ে দেশে ইভিএমের যাত্রা শুরু হয় ২০১০ সালে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এবং গাজীপুরের রাষ্ট্রায়ত্ত মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির সহায়তায় এ প্রযুক্তি চালু হয়। এরপর নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশন ও নরসিংদী পৌরসভায় পুরো ভোট হয় ইভিএমে। তবে বুয়েট ও ইসির দ্বন্দ্বে বর্তমান ইসির সময় রংপুর সিটি করপোরেশনে ইসির নিজস্ব জনবল দিয়ে ক্ষুদ্র পরিসরে ইভিএমে ভোট হয়। এরপর রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও সিলেটে সিটি নির্বাচনে মাত্র ১৩টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট হওয়ার পর ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায় এ যন্ত্র নিয়ে এগোনোর কাজ।
-

Latest

Popular Posts

Popular Posts

Popular Posts