Media news - এবার সুচিত্রা সেন

বিদ্যা বালান

কেরালায় জন্ম। পড়াশোনা মুম্বাইয়ে। বিয়ে হয়েছে পাঞ্জাবি পরিবারে। সব সমীকরণ মিলিয়েও বিদ্যা বালানের সঙ্গে দূরদূরান্তেও কোনো বাঙালি যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া যায় না। এর পরও বিদ্যার বাংলাপ্রীতি যেন একেবারে উপচে পড়ছে। বাংলা আর বাঙালিয়ানার ছোঁয়া আছে যেখানে, সেখানেই বিদ্যা বালানের উপস্থিতি। তাঁর পোশাক, ছবি, কথায় বাঙালিয়ানার ছাপ লেগে থাকে হরদম। এখন এই নায়িকার শখ হয়েছে একেবারে ষোলো আনা বাঙালি চরিত্রে নিজেকে ঢেলে সাজানোর। তাই তো নিজের পরবর্তী ছবি হিসেবে বেছে নিয়েছেন বাংলা মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের জীবনীকে। শিগগির বিদ্যা তাঁর মারাঠি পরিচয়কে শিকেয় তুলে বাঙালি ললনার সাজে নিজেকে সাজাবেন।
পাকিস্তানি রাজনীতিবিদ বেনজির ভুট্টো, নাকি বাংলার মহানায়িকা সুচিত্রা সেন? দুটো সুযোগ ছিল বিদ্যার সামনে। বিদ্যা সেখান থেকে বেছে নিলেন সুচিত্রাকে। কারণ? বাংলার মোহ যে কাটে না তাঁর। পরিণীতা, নো ওয়ান কিলড জেসিকা আর কাহানি ছবির পরও এই নায়িকা বারবার ওই কলকাতাকেন্দ্রিক ছবিগুলোই ঘুরেফিরে বেছে নেন। একবার তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকেরা, কেন এই বাংলাপ্রীতি? বিদ্যা বেশ গম্ভীর গলায় বলেন, ‘জানি না। এখন আর এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজি না। কারণ আমিও এর রহস্য খুঁজে বের করতে করতে ক্লান্ত হয়ে গেছি। পরে আমার মা এর সহজ একটা সমাধান দিয়েছেন। তিনি আমাকে বলেছেন, আমি হয়তো আগের জন্মে খাঁটি বাঙালি ছিলাম। যার ছায়া থেকে এ জন্মেও বের হতে পারছি না!’
বিদ্যা নাকি অবসরে বাংলা কবিতা পড়তে খুব ভালোবাসেন। কয়েকটা বাংলা কবিতা আত্মস্থও করেছেন। তা ছাড়া বাঙালি খাবার, তাঁতের শাড়ি, লাল টিপ, দুর্গাপূজা—সবকিছুর প্রতিই এ অভিনেত্রীর আছে বিশেষ দুর্বলতা।
সিল্ক স্মিতাকে নিয়ে তৈরি ডার্টি পিকচার পেয়েছে দারুণ সাফল্য। এরপর জীবনীনির্ভর ছবির প্রস্তাব একের পর এক তাঁর টেবিলে এসে জমা হতে থাকে। বিদ্যা প্রতিটি জীবনীনির্ভর ছবির পাণ্ডুলিপিই পড়তেন মন দিয়ে। কিন্তু তাঁর ভাষায়, যখন সুচিত্রা সেনের জীবনীনির্ভর ছবির পাণ্ডুলিপিটি হাতে পেলেন, তখন নাকি আর পড়তে ইচ্ছা হয়নি। সরাসরি এককথায় রাজি হয়ে যাওয়ার ইচ্ছা হয়েছিল তাঁর। কিন্তু পেশাগত নীতির কারণে পাণ্ডুলিপি পড়ে তবেই চুক্তি করলেন নির্মাতাদের সঙ্গে। এখন সুচিত্রার চরিত্রকে পূর্ণতা দেওয়ার জন্য এ অভিনেত্রী শুরু করেছেন হোমওয়ার্ক। শুরু করেছেন বিশেষ ডায়েট, শিখছেন কত্থক নৃত্য আর পড়ছেন সুচিত্রাকে নিয়ে লেখাগুলো।
সুচিত্রা সেনের সিনেমা? তা তো অনেক আগেই দেখা হয়ে গেছে তাঁর। এখন শুধু সেই ছবিগুলো আরও একবার ঝালিয়ে নেওয়ার পালা।
বিদ্যার বাংলাপ্রীতির আরও এক সাম্প্রতিক ঘটনা হলো তাঁর নতুন ছবি হামারি আধুরি কাহানি। এমরান হাশমির বিপরীতে বিদ্যাকে এ ছবিতেও দেখা যাবে কলকাতার অলিগলিতে ঘুরে বেড়াতে। পরিচালক মোহিত সুরি নাকি বিদ্যার বিশেষ অনুরোধে এ ছবির প্রথম দিনের শুটিং করেছেন কলকাতায়। গত বছর দুর্গাপূজার অষ্টমীর দিন কলকাতার এক পূজামণ্ডপে শুরু হয় এ ছবির শুটিং। এখন হচ্ছে একেবারে শেষ ধাপের কাজ।
বিদ্যা জানান, ঘনচক্কর, শাদি কে সাইড ইফেক্টস আর ববি জাসুস-এর ব্যর্থতার পর এখন এক ‘বং কানেকশন’ই তাঁকে আবার তাঁর হারানো খ্যাতি ফিরিয়ে দিতে পারে। কারণ, এর আগে বিদ্যার যে ছবিই কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ কিংবা বাংলার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল, সেটাই বক্স অফিস দাপিয়ে বেড়িয়েছে। তাই এবারও বিদ্যা আশাবাদী, তাঁর হামারি আধুরি কাহানি আর সুচিত্রা সেনের জীবনী নিয়ে ছবিটিও তাঁকে আবার নিয়ে আসবে সেরা নায়িকার রেসের প্রথম কাতারে।
-

Latest

Popular Posts

Popular Posts

Popular Posts