গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বড়ইবাড়ি মঠেরচালা এলাকায় পাল আমলের প্রাচীন
স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। সেখানে চলমান প্রত্নতাত্ত্বিক খনন ও
গবেষণায় এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত নিদর্শন ও তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে স্থাপনাটি
হাজার বছর আগের পাল আমলের ধর্মীয় কোনো প্রার্থনা স্থান বলে প্রাথমিক ভাবে
ধারণা করছেন গবেষকরা। তবে এটি মন্দির কি-না, তা তারা এখনও নিশ্চিত করে
জানাতে পারেননি।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে প্রাচীন এই স্থাপনার
পাশে দাঁড়িয়েই এই আবিষ্কারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন গাজীপুর-৪ আসনের সংসদ
সদস্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি বেগম সিমিন হোসেন (রিমি)।
তিনি বলেন, ‘এই প্রত্নস্থানে এ পর্যন্ত যে কয়টি স্থাপনাংশ আবিষ্কৃত হয়েছে,
তা দেশের ইতিহাসে এক নতুন সংযোজন। সরকারিভাবে এগুলো সংরক্ষণ করার ব্যাপারে
চিন্তা-ভাবনা চলছে।’
আবিষ্কারের কথা জানাতে প্রত্নতত্ত্ব
অধিদপ্তরের ঢাকা আঞ্চলিক পরিচালকের কার্যালয়ের উদ্যোগে গতকাল বড়ইবাড়ি
মঠেরচালা এলাকায় প্রত্নতাত্ত্বিক খনন ও এতে স্থানীয় জনসাধারণের সম্পৃক্ততা
বিষয়ে সেমিনারের আয়োজন করা হয়। দুই বছর ধরে এই এলাকায় প্রত্নতাত্ত্বিক খনন ও
গবেষণার কাজ করছে ‘ঐতিহ্য অন্বেষণ’। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক
(অতিরিক্ত সচিব) বেগম শিরিন আখতারের সভাপতিত্বে সেমিনারে সিমিন হোসেন এমপি
ছাড়াও বক্তব্য রাখেন অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক ড. মো. আতাউর
রহমান, কালিয়াকৈর উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাসেল, শিক্ষক ফরিদ
উদ্দিন ও চাঁন মিয়া এবং দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব
বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের ঢাকা আঞ্চলিক
অফিস সূত্রে জানা গেছে, খননের ফলে প্রাচীন ওই স্থাপত্য কাঠামোর বেষ্টনী,
অভ্যন্তরীণ দেয়াল, দরজা, কুলঙ্গী, নালা, নকশাকৃত ইট, অলংকৃত ইটের টুকরা,
মৃত্পাত্রের টুকরা, পাথরের বেদী, বর্গাকার মন্দির ও শিবলিঙ্গের নিদর্শন
পাওয়া গেছে। এছাড়া মুসলিম আমলের ধাতব মুদ্রা, অষ্টভুজাকৃতির গম্বুজ, পোড়া
মাটির বল, পোড়া মাটির প্রদীপ স্ট্যান্ড, হাতিয়ার, ফুটন্ত পদ্ম ফুল, আঙ্গুর
ফল, বটপাতার নকশাসহ বিভিন্ন নিদর্শনও উন্মোচিত হয়েছে।
এ
ব্যাপারে ড. মো.আতাউর রহমান বলেন, খননে মাটির তলা থেকে যেসব নিদর্শন বেরিয়ে
আসছে, তাতে এটি পাল আমলের স্থাপনা বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এটি কোন
ধর্মের স্থাপনা তা এখনও নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।