ঘূর্ণিঝড়ে গোদাগাড়ী উপজেলায় ৪২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই ক্লাস নেয়া হচ্ছে খোলা আকাশের
নিচে। ফলে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো মেরামত করে কবে নাগাদ সেখানে পাঠদানের স্বাভাবিক
পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হবে সংশ্লিষ্টরা তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা তৈরি করে
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে পাঠানোর পর সরকারি বরাদ্দ মিললে সেগুলো মেরামত
করা হবে।
উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার
কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৪ এপ্রিল বিকালের ঐ ঘূর্ণিঝড়ে ২৫টি
মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দাখিল মাদ্রাসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যদিকে প্রাথমিক
বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৭টি। সব মিলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৪২টি। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগেরই টিনের ছাদ
উড়ে গেছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সোহেল হোসেন
জানিয়েছেন, ২৫টি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সবচেয়ে বেশি
ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার প্রেমতলী জসিম উদ্দীন দাখিল মাদ্রাসা, ললিতনগর
ভূষণা আলিম মাদ্রাসা, আয়েশা সাবের দাখিল মাদ্রাসা, হুজরাপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও
মান্ডইল উচ্চ বিদ্যালয়। ঝড়ে এসব স্কুলের টিনের ছাদ উড়ে গেছে। কোনটির আবার
দেয়াল ধ্বসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা ঊর্ধ্বতন
কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।
প্রেমতলী জসিম উদ্দীন দাখিল
মাদ্রাসায় গতকাল সকালে গিয়ে দেখা যায়, ঝড়ে মাদ্রাসার আধাপাকা ৭টি
শ্রেণিকক্ষের টিনের ছাদ উড়ে গিয়ে সামনের খেলার মাঠে পড়েছে। শিক্ষার্থীদের
ক্লাস চলছিল শ্রেণিকক্ষের বাইরে খেলার মাঠে। মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট
আবদুস সবুর জানান, ঝড়ে মাদ্রাসার শ্রেণিকক্ষগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে
পড়েছে। তাই বাধ্য হয়েই রোদের মধ্যে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেয়া হচ্ছে।
এদিকে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সানাউল্লাহ জানিয়েছেন, ঝড়ে গোদাগাড়ীর
১৭টি প্রাথমিক স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব স্কুলের কোনটির ছাদ উড়েছে,
কোনটির দেয়াল ভেঙেছে, আবার কোনটি পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে। এসব স্কুলের
মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার সহড়াগাছি, কানাইডাঙা,
মহিষালবাড়ি, কাদিপুর ও সেখেরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলের তালিকা তৈরি করে প্রাথমিক
শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন পরিচালকের কাছে পাঠানো হবে। সরকারি
বরাদ্দ আসলে স্কুলগুলো মেরামত করা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার খালিদ হোসেন
জানান, স্কুল মেরামতের বরাদ্দের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত স্কুল কর্তৃপক্ষকে
লিখিতভাবে আবেদন করতে বলা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব সেগুলো মেরামতের ব্যবস্থা
করা হবে।